—প্রতীকী চিত্র।
কলকাতা শহরে বেআইনি নির্মাণ থামছে না। অথচ, বেআইনি নির্মাণ সংক্রান্ত মামলার নিষ্পত্তির জন্য ‘বিল্ডিং ট্রাইবুনাল’-এর চেয়ারম্যান তথা একমাত্র বিচারকের পদ গত ছ’মাস ধরে ফাঁকা পড়ে আছে। পুর বিল্ডিং বিভাগ সূত্রের খবর, বিল্ডিং ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান না থাকায় প্রায় পাঁচ হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। বেআইনি বাড়ি ভাঙতে গিয়ে ফাঁপরে পড়েছে পুরসভা। অভিযোগ, বিল্ডিং ট্রাইবুনালে বিচারক না থাকায় এক শ্রেণির মানুষ অবাধে বেআইনি নির্মাণ করে চলেছেন।
পুর বিল্ডিং বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুরসভা কোনও বেআইনি বাড়ি ভাঙার নোটিস দিলে অপর পক্ষকে আদালতে যাওয়ার সুযোগ অবশ্যই দিতে হবে। কিন্তু বিল্ডিং ট্রাইবুনালে বিচারক না থাকায় সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। উল্টো দিকে, এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির অসাধু প্রোমোটার বেআইনি নির্মাণের সংখ্যা বাড়িয়ে নিচ্ছেন। বেআইনি বাড়ি এক বার তৈরি হয়ে গেলে তা ভাঙা খুব সমস্যার।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, বিল্ডিং ট্রাইবুনালে কোনও বিচারক না থাকায় অগত্যা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ ও পুর কর্তৃপক্ষকে। বিল্ডিং ট্রাইবুনালের আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, হাই কোর্টে নিত্যদিন অসংখ্য মামলার চাপ থাকায় এমনিতেই বিল্ডিং সংক্রান্ত মামলাগুলির শুনানিতে দেরি হচ্ছে। ট্রাইবুনালের বিচারক পদে অবিলম্বে নিয়োগ না হলে বেআইনি নির্মাণের প্রবণতা বাড়বে।
বিল্ডিং ট্রাইবুনালের মতো অ্যাসেসমেন্ট বা সম্পত্তিকর সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে কলকাতার বাসিন্দারা অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুনালের দ্বারস্থ হন। দু’টি ট্রাইবুনালেরই শুনানি চলে নিউ মার্কেটের হাডকো ভবনে। অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুনালে মামলার নিষ্পত্তির জন্য দু’জন বিচারকের থাকার কথা। কিন্তু গত এক বছর ধরে আছেন মাত্র এক জন। তার উপরে গত তিন মাস ধরে দু’জন স্টেনোগ্রাফারের পদই শূন্য। আবার এক মাস ধরে এক জন রেকর্ড কিপারের পদ ফাঁকা পড়ে রয়েছে। অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুনালে যুক্ত থাকা আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, সেখানে প্রায় ১০০০০ মামলা জমে।
নিয়ম মতো পুরসভার পাঠানো সম্পত্তিকরের বিলে অসঙ্গতি থাকলে সংশ্লিষ্ট বাড়ির মালিক অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুনালে অভিযোগ জানাতে পারেন। কিন্তু বর্তমানে সেখানে এক জন বিচারপতি, দু’জন স্টেনোগ্রাফার এবং এক জন রেকর্ড কিপার না থাকায় মামলার নিষ্পত্তি হতে দেরি হচ্ছে। কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ট্রাইবুনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জয়ন্তকুমার মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘বিল্ডিং ও অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুনালে প্রচুর মামলা জমে থাকায় মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পুরসভারও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।’’
মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘বিল্ডিং ও অ্যাসেসমেন্ট ট্রাইবুনালে বিচারকের অনুপস্থিতিতে সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। আমরা আগেই ওই দু’টি পদ পূরণে আইন দফতরকে জানিয়েছিলাম। আইন দফতর সম্মতি দিয়েছে। দ্রুত নিয়োগ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy