Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Death by drowning

গঙ্গায় ডুবে মৃত্যুর ঘটনায় নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ

ঘাটে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেপুলিশ জানিয়েছে, ছটের জন্য গঙ্গায় দেওয়া পুলিশের ব্যারিকেড টপকে ওই মহিলা জোয়ার চলাকালীন অস্বাভাবিক ভাবে নদীর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

রূপা চট্টোপাধ্যায়।

রূপা চট্টোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২২ ০৬:৫৭
Share: Save:

ছটপুজোর দিনে হাওড়ার শিবপুর ঘাটে গঙ্গায় ডুবে এক গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনাদেওয়ার অভিযোগ দায়ের করলেন মৃতার বৃদ্ধা মা। তাঁর অভিযোগ, মেয়ে রূপা চট্টোপাধ্যায়কে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি করে গত ২৮ অক্টোবর স্বামী, শাশুড়ি, দুই ননদ ও তাঁদের স্বামীরা মারধর করে শ্বশুরবাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। মৃতার মা সবিতা গঙ্গোপাধ্যায়ের আরও অভিযোগ, শুধু তাড়িয়ে দেওয়াই নয়, তাঁর মেয়ের উপরে দিনের পর দিন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করার পরে আত্মহত্যায় প্ররোচনাও দেওয়া হয়েছে। শ্বশুরবাড়িতে ফিরে না গিয়ে রূপাকে আত্মঘাতী হতে বলা হয়েছে বলে দাবি তাঁর। পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার এই অভিযোগ পাওয়ার পরে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হচ্ছে।

গত রবিবার ছটপুজোর দিন দুপুরে শিবপুর ঘাটে একাই এসে গঙ্গায় নামেন রূপা। ঘটনারতদন্তে নেমে ঘাটে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেপুলিশ জানিয়েছে, ছটের জন্য গঙ্গায় দেওয়া পুলিশের ব্যারিকেড টপকে ওই মহিলা জোয়ার চলাকালীন অস্বাভাবিক ভাবে নদীর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই জোয়ারের টানে তিনি তলিয়ে যান। ওই ফুটেজ দেখার পরেই তদন্তকারীদের ধারণা হয়, ওই গৃহবধূর মৃত্যু কোনও দুর্ঘটনা নয়,এটি আত্মহত্যা। কিন্তু রূপার পরিবারের পক্ষ থেকে কোনও অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় পুলিশ অস্বাভাবিকমৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছিল‌। তবে এ দিন অভিযোগ পাওয়ার পরে তারা বধূ নির্যাতন এবং আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ জানায়, মৃতার মা বুধবার বিকেলে শিবপুর থানায় একটিলিখিত অভিযোগ দায়ের করে জানান, ২০১০ সালে শিবপুরের মন্দিরতলার বাসিন্দা সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর মেয়ে রূপার বিয়ের পর থেকেই মেয়ের উপরে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। রূপার বাড়ির তরফে বিয়ের সময় আসবাব, আলমারি, সোনার গয়না, নগদ ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আরও টাকা চেয়ে তাঁর উপরে মানসিক নির্যাতন করা হত বলে অভিযোগ।

পাশাপাশি, সবিতা আরও অভিযোগ করেন, তাঁর মেয়েকে খেতে না দিয়ে টাকার জন্য মারধর করা হত। এ কথা জানতে পেরে গত কয়েক মাসে রূপার শ্বশুরবাড়িকে এক লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সবিতার অভিযোগ, গত ২৮ অক্টোবর রূপাকে তাঁর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে অপবাদ দিয়ে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেয়। তার পর থেকে শিবপুরে মায়ের কাছেই ছিলেন তিনি।

এ দিন সবিতা বলেন, ‘‘এই ঘটনায় মেয়ে চরম মানসিক যন্ত্রণায় ছিল। ঘটনার দিন সেজেগুজে জোর করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার পরে গঙ্গায় ডুবে মৃত্যুর কথা জানতে পারি আমরা। যাদের অত্যাচারের জন্য মেয়েকে হারাতে হল, তাদের যেন কঠিন শাস্তি হয়।’’ রূপার স্বামী সোমনাথ বলেন, ‘‘সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা। রূপাকে কোনও দিন মারধর করা হয়নি। টাকাও চাওয়া হয়নি। ’’

অন্য বিষয়গুলি:

Death by drowning Ganges
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy