মাদক মামলায় হাইকোর্টে হাজিরা দিয়ে প্রশ্ন শুনলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব। — ফাইল ছবি।
মাদক মামলায় কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দিলেন রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব বিপি গোপালিকা। মাদক পরীক্ষা ছাড়াই কেন ৬০০ দিন জেলে অভিযুক্ত, তাঁর উপস্থিতিতে সেই প্রশ্নই তোলে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে আদালতের কটাক্ষ, মাদক পরীক্ষা না করিয়ে রাজ্য কি মামলাগুলি ঝুলিয়ে রাখতে চাইছে! চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিবকে এ বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
২০২১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি জাহাঙ্গির মণ্ডল নামে এক যুবককে মাদক পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার করে বনগাঁ থানার পুলিশ। অভিযোগ, তাঁর কাছ থেকে পাওয়া গিয়েছিল ‘মেথামফেটামাইন’ জাতীয় মাদক। এই ক্ষেত্রে উদ্ধার হওয়া মাদক কী ধরনের, তার পরীক্ষা করা হয়। রাজ্যে এই পরীক্ষার জন্য পরীক্ষাগার নেই। ফলে, এ সব পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয় গাজিয়াবাদের একটি পরীক্ষাগারে। জাহাঙ্গিরের অভিযোগ, সেই নমুনা পাঠানোর পর প্রায় ৬০০ দিন কেটে গেলেও রিপোর্ট মেলেনি। তাই উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেন জাহাঙ্গির। সোমবার জাহাঙ্গিরের ওই আবেদনের শুনানিতে রাজ্যের কাছে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। ডেকে পাঠানো হয় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবকেও।
হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে মঙ্গলবার হাই কোর্টে হাজিরা দেন গোপালিকা। মাদক পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যের উদাসীনতা কেন, তাঁকে সেই প্রশ্নই করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য কি চাইছে, মাদক পরীক্ষা না করে মামলাগুলি ঝুলিয়ে রাখতে? এই পরীক্ষা কি পৃথিবীতে প্রথম হচ্ছে? সাধারণ মাদক পরীক্ষায় এত উদাসীনতা কেন?’’ ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, স্বরাষ্ট্রসচিবকে দ্রুত বাজেয়াপ্ত হওয়া মাদক পরীক্ষা করিয়ে তার রিপোর্ট জমা দিতে হবে আদালতে। পরীক্ষা আটকে থাকলে মামলাও আটকে থাকছে। এটা চলতে পারে না।
এই মামলায় বিচারপতি বাগচীর পর্যবেক্ষণ, ‘‘মাদক পরীক্ষা নিয়ে রাজ্যের কোনও নির্দেশিকা নেই, এটা হতে পারে না। এ রাজ্যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন সময় মাদক পাচারের ঘটনা ঘটে থাকে। তার পরেও রাজ্যের কেন এই ঢিলেমি? এই ধরনের সাধারণ মাদক পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকলে কী আর বলব?’’
বিচারপতিকে রাজ্যের আইনজীবী জানান, মাদক পরীক্ষার জন্য দু’টি যন্ত্র কিনেছে সরকার। কিন্তু সেই পরীক্ষার জন্য যে রাসায়নিক দরকার, তা পাওয়া যাচ্ছে না। গাজিয়াবাদে যোগাযোগ করা হয়। সেখানেও পাওয়া যায়নি। তার প্রেক্ষিতে বিচারপতি বাগচী বলেন, ‘‘তা হলে এটা কি ধরে নিতে হবে যে, পরীক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক দেশে নেই?’’ জবাবে রাজ্য জানায়, না, তা নয়। যেখান থেকে আনা হয়, সেখানে পাওয়া যাচ্ছে না। বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর পরেই নির্দেশ কার্যকর করে চার সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্রসচিবকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy