প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার কথা বলছেন চিকিৎসক, গবেষকেরা। এ হেন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পেতে বিবিধ সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের। অনেকেই যেতে পারছেন না হাসপাতালে। সেই সমস্যা দূর করতে এ বার ওই রোগীরা বাড়িতেই যাতে ‘অ্যান্টি হিমোফিলিক ফ্যাক্টর’ (যা আদতে ইন্ট্রাভেনাস ইঞ্জেকশন) নিতে পারেন, সেই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পে রাজ্যের অধিকর্তা সৌমিত্র মোহনের সই করা ওই নির্দেশিকা ইনস্টিটিউট অব পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এসএসকেএম হাসপাতাল), স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অব হেমাটোলজি অ্যান্ড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন এবং সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
হিমোফিলিয়া চিকিৎসার জীবনদায়ী ওষুধ হল ‘অ্যান্টি হিমোফিলিক ফ্যাক্টর’ (এএইচএফ)। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কোনও আঘাত ছাড়াই হিমোফিলিয়া আক্রান্ত রোগীর শরীরের যে কোনও অংশ, বিশেষত গাঁট (জয়েন্ট) থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এমনকি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে তা প্রাণঘাতীও হতে পারে। তাই রোগীর শরীরে যখন রক্তক্ষরণ হয়, সেই সময়ে তা ঠেকাতে ‘অন ডিমান্ড’ হিসেবে তাঁকে ‘অ্যান্টি হিমোফিলিক ফ্যাক্টর’ দেওয়া হয়। ‘অন ডিমান্ড’ হিসেবে ইঞ্জেকশনটি দেওয়া হলে রোগীর খরচ কম হয় ঠিকই। কিন্তু ওই পদ্ধতিতে দিলেও শরীরের গাঁটের কিছুটা হলেও ক্ষতি হয়। বিশেষত, এই ক্ষতি হয় শিশুদের ক্ষেত্রে। তাই ‘ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়া’ (ডব্লিউএফএইচ) সুপারিশ করেছে, যাঁরা হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত তাঁদের সপ্তাহে অন্তত তিন বার কম ডোজ়ে ‘অ্যান্টি হিমোফিলিক ফ্যাক্টর’ দিলে বেশি উপকার হবে। তাতে কোনও মতেই ‘ফ্যাক্টর লেভেল’ শূন্যে নামবে না। হেমাটোলজিস্ট প্রান্তর চক্রবর্তী বলছেন, “বিদেশে বাড়িতেই এই ফ্যাক্টর দেওয়ার চল রয়েছে। হিমোফিলিয়ায় আক্রান্তদের জন্য সেটি রাজ্যেও চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত প্রশংসনীয়। কারণ, রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতালে গিয়ে ইঞ্জেকশন নেওয়ার প্রক্রিয়ায় অনেক সময় লেগে যায়। তাতে ক্ষতি পুরো আটকানো যায় না।”
সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, বাড়িতে এএইচএফ নেওয়ার জন্য রোগীকে লিখিত হলফনামা দিতে হবে। যে হাসপাতাল বা কেন্দ্র থেকে তিনি বিনামূল্যে এএইচএফ পাবেন, সেখানে কবে কাকে ফ্যাক্টর দেওয়া হল, ইঞ্জেকশনের মেয়াদ ফুরনোর তারিখ, ভায়ালের ব্যাচ নম্বর— সব যথাযথ ভাবে নথিভুক্ত রাখতে হবে। আরও বলা হয়েছে, প্রেসক্রিপশনে যে ডোজ় লেখা থাকবে, তার কম বা বেশি কোনওটিই দেওয়া যাবে না। আবার, পরবর্তী ইঞ্জেকশন পেতে হলে অবশ্যই ফাঁকা ভায়াল ফেরত দিতে হবে।
সূত্রের খবর, শরীরের ওজন প্রতি এএইচএফ-এর ইউনিট হিসেব করা হয়। ধরা যাক, কোনও রোগীর ওজন ৫০ কেজি। তাঁর যদি ২০ ইউনিট করে ফ্যাক্টর লাগে, সে ক্ষেত্রে তাঁর মোট লাগবে ১০০০ ইউনিট এএইচএফ। প্রতি ইউনিটের দাম অন্তত ১০ টাকা। অর্থাৎ, একটি ইঞ্জেকশনের দাম পড়বে ১০ হাজার টাকা। তাই সেটি অপব্যবহারের প্রমাণ মিললে রোগী বা তাঁর পরিজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy