প্রতীকী ছবি।
মানসিক সমস্যা ছিলই। তার উপরে এই অচেনা শহরের গলিঘুঁজিতে পথ হারিয়ে তিনি ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন স্ত্রী-ছেলের খোঁজে। পরনে লুঙ্গি, অপরিচ্ছন্ন টি-শার্ট, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানা এলাকার বাসিন্দা ৩৯ বছরের অসিত দলুই। সোমবার বিকেলে গড়িয়ার গড়াগাছায় একটি পার্কের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে স্থানীয় এক বাসিন্দাকে দেখে জানতে চান, হাজরা চিত্তরঞ্জন হাসপাতাল কোথায়? আর কিছু বলেননি অসিত।
মঙ্গলবার ফোনে ওই বাসিন্দা অসীম মণ্ডল বলেন, ‘‘লোকটিকে দেখে বুঝেছিলাম, ওঁর মানসিক সমস্যা রয়েছে। এ-ও মনে হয়েছিল, খুব ক্ষুধার্ত তিনি। প্রথমে জল-বিস্কুট এবং পরে দোকানে নিয়ে গিয়ে ওঁকে মুড়ি, চপ খাওয়াই। মাঝেমধ্যে উনি বলছিলেন, বাড়ি যাব।’’ কোথায় বাড়ি জানতে চাওয়া হলে অসিত গ্রামের নাম বলেন চককৃষ্ণবাটী, পশ্চিম মেদিনীপুর। বাবা-কাকার নামও জানান।
এর পরে কলকাতায় হ্যাম রেডিয়ো অপারেটরদের সংগঠনের সম্পাদক অম্বরীশ নাগ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অসীমবাবু। সন্ধ্যায় জানা যায়, দাসপুর থানা এলাকায় বাড়ি অসিতের। তিনি মোটবাহকের কাজ করেন। ১৮ দিন আগে কাজ করতে গিয়ে পড়ে মাথায় চোট পান। ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মাথায় চোটের জন্য তাঁকে এসএসকেএমে আনার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। সেই মতো অসিতকে নিয়ে কলকাতায় আসেন স্ত্রী প্রতিমা ও বড় ছেলে দীপঙ্কর। সঙ্গে কাকা। রাতে হাসপাতাল চত্বরেই থেকে যান তাঁরা। পরের দিন ভর্তির আগেই নিখোঁজ হয়ে যান অসিত।
আরও পড়ুন: বাজি আটকাতে পুলিশের সাহায্য চায় পরিবেশ দফতর
আরও পড়ুন: সরোবরে ফিরছে বহু পাখি, বাজির ভয়ে কি পালাবে
সোমবার উদ্ভ্রান্ত অবস্থায় অসিতকে পেয়ে নরেন্দ্রপুর থানায় সব জানান অসীমবাবু। পুলিশ এসে অসিতকে দেখে চিনতে পারে। পুলিশকর্মীরা জানান, নরেন্দ্রপুর থানারই খুড়িগাছি এলাকায় দিন কয়েক আগে চোর সন্দেহে ওই ব্যক্তিকে মারধর করেন স্থানীয় কিছু যুবক। পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাঁকে ভর্তি করা হয় গড়িয়ার এক হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকেও পালিয়ে যান অসিত।
সোমবার তাঁকে আবার ফিরে পেয়ে পুলিশ ভর্তি করে সোনারপুর হাসপাতালে। যোগাযোগ করা হয় পরিবারের সঙ্গে। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে অসিতকে বাড়ি নিয়ে গিয়েছেন স্ত্রী ও ছেলে। অসিতের ভগিনীপতি জগন্নাথ দুইল্যা বলেন, ‘‘এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে হারিয়ে যাওয়ার পরে অনেক খোঁজ করেও অসিতকে পাওয়া যায়নি। পরের দিন আত্মীয়েরা দাসপুরে ফিরে আসেন। সেখানেও পড়শি ও বন্ধুদের বাড়ি খোঁজ করা হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy