Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

জল জমে, গাছ উপড়ে দুর্ভোগ

কাজের প্রথম দিনেই এমন দুর্যোগের জন্য হয়তো প্রস্তুত ছিল না পুর প্রশাসন। সকাল থেকেই পুর কন্ট্রোল রুমে পরপর গাছ পড়ার খবর আসতে থাকে। কিন্তু মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ পুরসভার বেশ কিছু বড় কর্তাই এ দিন গরহাজির ছিলেন।

নাজেহাল: থইথই রাস্তায় সাহায্যের হাত। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নাজেহাল: থইথই রাস্তায় সাহায্যের হাত। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৯
Share: Save:

রবিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি। জল জমে বিপর্যস্ত মহানগর। ঝড়ের দাপটে ৭০টিরও বেশি গাছ পড়ে যাওয়ায় সোমবার সকাল থেকে দুর্ভোগ বেড়েছে শহরবাসীর। আবহাওয়া বেগতিক দেখে রাস্তায় যানবাহনও ছিল কম। এ দিকে, টানা ১৩ দিন পুজোর ছুটির পরে এ দিনই খুলেছে সরকারি অফিস ও স্কুল-কলেজ।

কিন্তু কাজের প্রথম দিনেই এমন দুর্যোগের জন্য হয়তো প্রস্তুত ছিল না পুর প্রশাসন। সকাল থেকেই পুর কন্ট্রোল রুমে পরপর গাছ পড়ার খবর আসতে থাকে। কিন্তু মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়-সহ পুরসভার বেশ কিছু বড় কর্তাই এ দিন গরহাজির ছিলেন। মেয়র পারিষদ (পার্ক ও উদ্যান) দেবাশিস কুমার জানান, শহর জুড়ে ৭০টিরও বেশি গাছ পড়েছে। বৃষ্টির কারণে সেই সব গাছ সরাতেও দেরি হয়েছে। তবে যানবাহন চলার মতো ব্যবস্থা করা গিয়েছে বলে তাঁর দাবি।

আরও পড়ুন: বৃষ্টির দুর্ভোগ কলকাতা জুড়ে, দেখুন ছবি

আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে নিম্নচাপ অক্ষরেখার কারণেই এই দুর্যোগ। বেলায় বৃষ্টি বাড়ায় দক্ষিণ কলকাতার কসবা, বালিগঞ্জ, যাদবপুর, বেহালা, আলিপুর থেকে উত্তরের কাঁকুড়গাছি, বেলেঘাটা, আমহার্স্ট স্ট্রিট, বিধান সরণি এবং মধ্য কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ-সহ বহু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে।

এ দিন সকালের দিকে রাস্তায় গাড়ি কম থাকায় যানজটে পড়তে হয়নি নিত্যযাত্রীদের। তবে, যাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন, যানবাহনের অভাবের পাশাপাশি জমা জল ও পড়ে থাকা গাছে নাজেহাল হতে হয় অনেককেই। বেলা বাড়তে বিভিন্ন রাস্তায় যানজটও হয়। বৃষ্টিতে গঙ্গার জলস্তর ও হাওয়ার বেগ বেড়ে যাওয়ায় দুপুরের পর থেকে কলকাতা ও হাওড়ার ঘাটগুলিতে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

দুর্যোগে গরহাজির

• মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়।

• মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ।

• মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ।

ঝোড়ো হাওয়ায় গাছের সঙ্গে ভেঙেছে বাতিস্তম্ভও। বন্দরের ট্রান্সপোর্ট ডিপো রোডে বাতিস্তম্ভ ভেঙে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পুলিশ জানায়, সল্টলেক স্টেডিয়াম লাগোয়া স্বভূমির সামনে গাছ পড়ে রাস্তা আটকে যায়। ওই স্টেডিয়ামে এখন অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ চলছে। চিনার পার্কে সরকারি তোরণ ভেঙে পড়ে আহত হন এক তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। কসবা, বেলেঘাটা মেন রোড, পূর্বাচল মেন রোড, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে রাজা সুবোধ মল্লিক রোড, গল্ফ গ্রিন, বাসন্তী হাইওয়ে, বেহালার বেচারাম চ্যাটার্জি রোড, কমিসরিয়েট রোড, বেলভেডিয়ার রোড, লাউডন স্ট্রিট, মদন চ্যাটার্জি রোডে গাছ ভেঙে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পুলিশ জানায়, গাছ সরাতে পুরসভার পাশাপাশি ট্র্যাফিক কর্মীরাও হাত লাগান। পরে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও নামে।

মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানান, শহরের ১৬টি বরোয় পুরসভার গাছ কাটার দল হাজির ছিল। সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলার পাঁচটি দলও ছিল গাছ কাটার স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র নিয়ে। পুরসভার পার্ক ও উদ্যান দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, বৃষ্টির দাপটে গাছ কাটার কাজ ব্যাহত হয়েছে।

পুরসভা ও লালবাজার জানায়, দুপুরের দিকে প্রায় ৫৫টি রাস্তায় জল জমে ছিল। পরে কিছু রাস্তা থেকে জল নামে। মহাত্মা গাঁধী রোড ও সৈয়দ সালে লেনের মোড়ে হাঁটু জল থাকায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ দিয়ে ধর্মতলামুখী সব গাড়িকে মানিকতলা দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বাইপাসেও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। দমদম আন্ডারপাস, পাতিপুকুর আন্ডারপাস, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট থেকে কলেজ স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া, এ জে সি বসু রোড, বেহালা, আশুতোষ মুখার্জি রোড, সৈয়দ আমির আলি অ্যাভিনিউ, তারাতলা, উল্টোডাঙা আন্ডারপাস-সহ বিভিন্ন জায়গায় জল জমে থাকায় গাড়ি চলেছে ঢিমে তালে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy