Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
JEE

জেইই-র প্রথম দিনের পরীক্ষায় জোর স্বাস্থ্য-বিধিতে

সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার অফিসে মঙ্গলবার এ ভাবেই শুরু হল সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেন (জেইই)।

নিয়ম: দূরত্ব-বিধি মেনেই চলছে জয়েন্টের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পরীক্ষার্থীদের দেহের তাপমাত্রা মাপা (উপরে)। বৃষ্টি মাথায় অপেক্ষায় অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিয়ম: দূরত্ব-বিধি মেনেই চলছে জয়েন্টের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পরীক্ষার্থীদের দেহের তাপমাত্রা মাপা (উপরে)। বৃষ্টি মাথায় অপেক্ষায় অভিভাবকেরা। মঙ্গলবার, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভের একটি পরীক্ষা কেন্দ্রে। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১৫
Share: Save:

পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার গেটের সামনে রাস্তায় নির্দিষ্ট দূরত্ব অন্তর চৌকো খোপ কাটা। পর পর সেই খোপে দাঁড়িয়ে একে একে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকলেন পরীক্ষার্থীরা। প্রথমে সকলের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হল। হাতে দেওয়া হল স্যানিটাইজ়ার। এর পরে নিজেদের মাস্কের বদলে পরীক্ষা কেন্দ্রে দেওয়া নতুন মাস্ক পরে হলে ঢুকলেন তাঁরা।

সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার অফিসে মঙ্গলবার এ ভাবেই শুরু হল সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেন (জেইই)। আগামী ৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই শিফটে চলবে এই পরীক্ষা। করোনা আবহে এই পরীক্ষা হলে পরীক্ষা কেন্দ্রে দূরত্ব-বিধি মানা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে। তবে এ দিন অধিকাংশ পরীক্ষার্থী জানিয়েছেন, হলে দূরত্ব-বিধি মেনেই তাঁদের বসানো হয়েছিল। তবে পরীক্ষা দিয়ে বেরোনোর সময়ে লবিতে কিছুটা জমায়েত হয়ে যায়।

১৩৬ কিলোমিটার দূরে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনোর জন্য ভোর চারটের সময়ে ঘাটালের বাড়ি থেকে বাবার সঙ্গে মোটরবাইকে বেরিয়েছিলেন রূপক সাহা। সকাল ন’টা থেকে ১২টা পর্যন্ত পরীক্ষা দিয়ে বেরিয়ে তিনি বললেন, ‘‘১৩৬ কিলোমিটার পেরিয়ে বাড়ি ফিরতে হবে। আবার বুধবার পরীক্ষা। ভোরে উঠে বেরোতে হবে।’’

রূপকের বাবা অশোক সাহা ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজ করেন। তিনি বলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতি না হলে হয়তো ট্রেনে বা এক দিন আগেই চলে আসতাম। কিন্তু এখন তো সেই উপায় নেই। তাই এতটা পথ বাইকেই আসতে হল।’’ একটি ব্যাগে করে মুড়ি-আলুভাজা আর তিন বোতল জল এনেছিলেন অশোকবাবু। তিনি বলেন, ‘‘করোনার মধ্যে বাইরের খাবার খেলে ঝুঁকির হয়ে যেতে পারে। তাই খাবার সঙ্গে এনেছিলাম। কিন্তু ছেলের খাওয়া হল না।’’

আসার পথে বৃষ্টির জন্য কয়েক বার দাঁড়াতে হয়েছে রূপকদের। ওই ছাত্রের কথায়, ‘‘সময় মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছতে পারব কি না, সেই চিন্তা হচ্ছিল। তাই বৃষ্টির মধ্যেই চলে এসেছি।’’ রূপক জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা দেওয়া ঝুঁকির হলেও কোনও উপায় ছিল না। বার বার পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছিল। তাই পরীক্ষা হয়ে এক দিকে ভালই হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। রূপক মেডিক্যালের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট-ও দেবেন বলে জানিয়েছেন।

সোমবার লকডাউন থাকায় মালদহ থেকে বাসে রবিবারেই কলকাতায় দাদার বাড়িতে চলে এসেছিলেন বিল্টকুমার রায় নামে এক পরীক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘‘করোনার মধ্যে পরীক্ষা দিতে ভয়ই পাচ্ছিলাম। কিন্তু পরীক্ষার সূচি যখন বদলায়নি, তখন তো আসতেই হবে।’’

সেক্টর ফাইভে ওই কেন্দ্রে

আসা পরীক্ষার্থীরা এ দিন জানান, হলের ভিতরে মোটের উপরে দূরত্ব-বিধি মানা হয়েছে। তবে পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে বেশ কিছু জায়গায় অভিভাবকদের জটলা চোখে পড়েছে। এমনিতে এ দিন মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হওয়ায় পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা কার্যত কঠিন ছিল। বৃষ্টি বাড়তে অনেকেই বাধ্য হয়েছেন একসঙ্গে কোনও ছাউনির নীচে আশ্রয় নিতে।

বেহালা থেকে আসা এক অভিভাবক টুম্পা বসাক জানালেন, বৃষ্টির জন্য বাধ্য হয়েই দোকানের ভিতরে অনেকে মিলে তাঁদের দাঁড়াতে হয়েছে। ফলে সেই অর্থে দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা যায়নি। বেহালার বাসিন্দা আর এক অভিভাবক জানালেন, বাস চললেও সংক্রমণের ভয়ে তিনি গাড়ি ভাড়া করে এসেছেন। শ্যামবাজার থেকে আসা এক অভিভাবক আবার জানান, সকাল সকাল বেরিয়ে বাসে করেই তিনি পৌঁছেছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

JEE Health Precautions
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy