Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Health Ministry

স্বাস্থ্যকর্মীদের ঘড়ি-আংটি-তাগায় সংক্রমণের বিপদ, নির্দেশিকা 

সব সময়ে যে নিয়ম মানা হয়, তেমনটা নয় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদেরই একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘সেই কারণেই হয়তো স্বাস্থ্য মন্ত্রক এমন চিঠি পাঠাতে শুরু করেছে।’

স্বাস্থ্য ভবন।

স্বাস্থ্য ভবন। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৪ ০৬:৪০
Share: Save:

সংক্রমণ এড়াতে সঙ্কটজনক রোগীর চিকিৎসার সময়ে কোনও ভাবেই কনুইয়ের নীচে কোনও রকম অলঙ্কার, হাতঘড়ি পরা যাবে না। রাখা যাবে না মোবাইলও। এই নিয়ম পুরনো হলেও এ বার রীতিমতো নির্দেশিকা জারি করে কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিন্তু প্রশ্ন হল, আইসিইউ, সিসিইউ, এইচডিইউ, অপারেশন থিয়েটার এবং অস্ত্রোপচারের পরে পর্যবক্ষণে রাখার ওয়ার্ডে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের এই নিয়ম মেনে চলার কথা আগে থেকে বলা থাকলেও সকলেই কি রোগীদের স্বার্থে তা মেনে চলেন?

সব সময়ে যে নিয়ম মানা হয়, তেমনটা নয় বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকদেরই একাংশ। তাঁরা বলছেন, ‘‘সেই কারণেই হয়তো স্বাস্থ্য মন্ত্রক এমন চিঠি পাঠাতে শুরু করেছে।’’ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ডিরেক্টর জেনারেল অব হেল্‌থ সার্ভিসেস, অতুল গোয়েল চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারি হাসপাতালগুলির অধিকর্তা ও সুপারদের। সেই পথ অনুসরণ করে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও কি এ বার এমন কোনও নির্দেশিকা জারি করে নিয়মগুলি মেনে চলা বাধ্যতামূলক করবে? কারণ, অনেক সময়েই দেখা যায়, ক্রিটিক্যাল কেয়ারের মধ্যে বাইরের জুতো পরেই ঢুকে পড়ছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ। হাতে ঘড়ি বা অন্য কোনও অলঙ্কার তো থাকেই, কারও কারও আবার কব্জির কাছে বাঁধা থাকে ধর্মীয় তাগা। মোবাইলও সঙ্গে রাখেন প্রায় সকলেই।

রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা কৌস্তভ নায়েকের কথায়, ‘‘হাসপাতালগুলিকে নিয়ে নিয়মিত যে প্রশিক্ষণ হয়, সেখানে এই বিষয়টি সব সময়েই বলা হয়। অনেকে মেনেও চলেন। তবে প্রয়োজনে নির্দেশিকাও জারি করা হবে।’’ চিঠিতে জানানো হয়েছে, ওই সমস্ত জিনিসের মাধ্যমে যে কোনও ধরনের ব্যাক্টিরিয়া বা ভাইরাসজনিত সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাতে রোগীর ঝুঁকিও বেড়ে যায়।

সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায় জানাচ্ছেন, ধর্মীয় ভাবাবেগের কারণে অনেকেই হাতে তাগা, বালা, চুড়ি বা আংটি পরেন। হাতঘড়ির পাশাপাশি পুরো হাতা জামাও পরেন। যা কোনও ভাবেই ঠিক নয়। কারণ, ওই সমস্ত জিনিসের মধ্যে যে কোনও ধরনের সংক্রামক জীবাণু বেশ কিছু ক্ষণ বেঁচে থাকতে পারে। আর, সঙ্কটজনক রোগীর চিকিৎসা করার আগে হাত ধোয়া হলেও কেউই কিন্তু হাতে বা আঙুলে থাকা জিনিসগুলিকে ধুয়ে নেন না। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এ হেন চিঠি কিন্তু ভাবার বিষয়। ধর্মীয় ভাবাবেগের ঊর্ধ্বে গিয়ে এমন নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। এটিকে অবশ্যই স্বাগত জানাচ্ছি। সকলেরই উচিত, এই নিয়মগুলি মেনে চলা।’’ বিদেশে এই নিয়ম বাধ্যতামূলক বলেই জানাচ্ছেন ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক সুগত দাশগুপ্ত।

তিনি জানাচ্ছেন, পোশাক-বিধির মধ্যেই সব স্পষ্ট করে বলা রয়েছে। এমনকি, হাফ হাতা জামাও পরতে বলা হয় তাতে। আর যদি পোশাক পুরো হাতার হয়, তা হলে সেটিকে গুটিয়ে একেবারে কনুইয়ের উপরে তুলে দিতে হবে। চিকিৎসকদের অনেকে এটাও বলছেন, নাড়ির গতি দেখার জন্য হাতঘড়ি ব্যবহারের যুক্তি দেন অনেকে। কিন্তু তা না করে ক্রিটিক্যাল কেয়ারের মনিটর ব্যবহার যেমন করা যায়, তেমনই ওয়ার্ডে বড় দেওয়াল ঘড়ি রাখা হলেও অনেক সুবিধা হয়। তবে সুগত আরও বলছেন, ‘‘এই সমস্ত নিয়ম মানার পাশাপাশি প্রতিটি রোগীকে ছোঁয়ার আগে ঠিক পদ্ধতিতে, ঠিক জিনিস দিয়ে হাত পরিষ্কার করা অত্যন্ত জরুরি। শুধু ঘড়ি, মোবাইল বা অলঙ্কার বর্জন করলেই হবে না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy