Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Hawkers

হকারদের বাদ রেখেই ঘুরবে লোকালের চাকা, বিক্ষোভের ডাক

এ দিন শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে দেখা যায়, পরিষেবা শুরুর আগে জোরকদমে চলছে সাফাইকাজ।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ নভেম্বর ২০২০ ০৪:০০
Share: Save:

লোকাল ট্রেন চালু হলেও তাতে উঠতে পারবেন না হকারেরা। এমনকি, প্ল্যাটফর্মেও আপাতত ঠাঁই হচ্ছে না তাঁদের। কাল, বুধবার, পরিষেবা চালুর আগে সোমবার বিভিন্ন স্টেশনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বেরিয়ে এ কথাই জানিয়েছেন শিয়ালদহের ডিআরএম শিলেন্দ্রপ্রতাপ সিংহ। ভিড় ঠেকাতে নিরাপত্তা বাড়ানো হলেও দূরত্ব-বিধির বিষয়টি যাত্রীদের শুভ বুদ্ধির উপরেই ছাড়তে চান তিনি। ডিআরএম জানান, প্রয়োজনে যাত্রী-সংখ্যার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হবে। এই সিদ্ধান্তে হকারেরা অবশ্য প্রবল হতাশ।

এ দিন ডিআরএম জানান, ট্রেনে আপাতত হকারদের উঠতে দেওয়া হবে না। এমনকি, প্ল্যাটফর্মের দোকানও খুলতে দেওয়া হবে না। দূরত্ব-বিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে কোনও দোকান বাধা হয়ে দাঁড়ালে তা সরাতেও বলতে পারেন রেলের নিরাপত্তাকর্মীরা।

বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হকারেরা। আজ, মঙ্গলবার, হাওড়া স্টেশনের বাইরে ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে জমায়েতের ডাক দিয়েছে এপিডিআর। রেল কর্তৃপক্ষকে স্মারকলিপিও দেবে তারা। বিভিন্ন স্টেশনে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন হকারেরাও। তাঁদের প্রশ্ন, “লোকাল ট্রেনে লক্ষ লক্ষ মানুষ যাতায়াত করেন। সেখানে হকারেরাই কেবল বিপজ্জনক? একটি ট্রেনে ছ’শোর বেশি যাত্রী উঠলে তাঁদের নামিয়ে দেওয়া হবে তো?” এ প্রশ্নের জবাব যদিও মেলেনি এ দিন।

আরও পডুন: ৩৫ কোটি প্রতারণার অভিযোগে ব্যাঙ্ক ম্যানেজার-সহ গ্রেফতার ৩​

এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ বারাসত স্টেশনে তৃণমূল ও কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের হকারেরা প্ল্যাটফর্ম এবং সংলগ্ন এলাকায় মিছিল করেন। তৃণমূলের শ্রমিক নেতা বাসুদেব দাস বলেন, ‘‘ট্রেন চালু হচ্ছে, এ বার হকারদেরও বসতে দিতে হবে। সেই দাবিতেই আমাদের আন্দোলন।’’ কংগ্রেস নেতা সজল দে-র কথায়, ‘‘এত দিন ট্রেন বন্ধ থাকায় হকারেরা কী অবস্থায় বেঁচে রয়েছেন, তা কেউ ভেবে দেখছেন না।’’

এ দিন দুপুরে বিশেষ ট্রেনে শিয়ালদহ মেন লাইনের বিভিন্ন স্টেশনে যান ডিআরএম-সহ রেল এবং আরপিএফ-এর আধিকারিকেরা। ব্যারাকপুর-সহ বিভিন্ন স্টেশনের ঢোকা ও বেরোনোর পথ ঘুরে দেখেন তাঁরা। প্রায় প্রতিটি স্টেশনেই দু’দিকের দু’টি পথ খোলা রেখে বাকি সমস্ত পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

ডিআরএম জানান, প্রতিটি ট্রেনে সর্বাধিক ৬০০ জন যাত্রীকে উঠতে দেওয়া হবে। কিন্তু বাকিদের আটকানোর উপায় কী? ডিআরএম জানান, রেলের তরফে নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে। রাজ্যের তরফেও নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। বাকিটা যাত্রীদেরই বুঝতে হবে। তাঁরা যদি মনে করেন, ভিড় বেশি হলে সুরক্ষা-বিধি লঙ্ঘিত হবে, তা হলে তাঁরা ভিড় বাড়াবেন না। ভিড় বেশি হলে প্রয়োজনে আরও ট্রেন চালানো হবে। দিনে এক বার প্রতিটি ট্রেন জীবাণুমুক্ত করা হবে। প্রতিটি যাত্রার শেষে সমস্ত ট্রেন জীবাণুমুক্ত করার মতো সময় মিলবে না বলেই জানিয়েছেন তিনি। লোকবলও নেই।

এ দিন শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখার বিভিন্ন স্টেশনে দেখা যায়, পরিষেবা শুরুর আগে জোরকদমে চলছে সাফাইকাজ। বারাসত স্টেশনে গিয়ে দেখা গেল, মাসিক টিকিটের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি ট্রেনের সময়সূচি জানতে এসেছেন কেউ কেউ। কিন্তু লিঙ্ক-বিভ্রাটে সমস্যায় পড়তে হয় তাঁদের। দমদম স্টেশনের টিকিট কাউন্টারের এক মহিলা কর্মী বললেন, ‘‘নতুন মাসিক টিকিট এখন দেওয়া হচ্ছে না। শুধুমাত্র পুরনো মাসিক টিকিটের মেয়াদ বাড়ানো যাচ্ছে।’’

এ দিন পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক নিখিল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ট্রেন চালু করার সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। ট্রেন কম চলবে ভেবে অযথা আতঙ্কিত হওয়ার বা হুড়োহুড়ি করার প্রয়োজন নেই। কয়েক দিন পরে সমস্ত ট্রেন আবার আগের মতোই চলবে।’’দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ স্টেশনেও করোনা-বিধি মেনে নেওয়া হয়েছে নানা সতর্কতা। সেখানে ঢোকা এবং বেরোনোর দু’টি আলাদা পথ করা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy