গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নদিয়ার হাঁসখালিতে এক নাবালিকাকে গণধর্ষণ এবং খুনের মামলার সিবিআই তদন্তের দাবিতে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার রায়দান সংরক্ষিত রাখল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার শুনানি শেষের পর এই সিদ্ধান্তের কখা ঘোষণা করেছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
রাজ্যের তরফে যিনি আইনজীবী, তাঁকে দুই বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, হাঁসখালি-কাণ্ড নিয়ে আরও কোনও বক্তব্য থাকলে রায় ঘোষণার আগে তা লিখিত ভাবে জানাতে। বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণা করতে পারে আদালত।
হাঁসখালির ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা বলেছেন, তা আদালতের কাছে তুলে ধরেন জনস্বার্থ মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত। তিনি জানান, নির্যাতিতার মা বলছেন এটা গণধর্ষণ। পুলিশের তরফেও গণধর্ষণের মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁর আবেদন, ‘‘সিবিআইকে দেওয়া হোক মামলার তদন্তের ভার। কী ভাবে দেহ পোড়ানো হল?’’ হাঁসখালি থানার আইসি-র বিরুদ্ধে প্রথমে এফআইআর না নেওয়ার অভিযোগের কথাও বলেন তিনি। পাশাপাশি সুস্মিতার অভিযোগ, যে জায়গায় দাহ করা হয়েছে, জল দিয়ে সেই জায়গাও ধুয়ে ফেলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি রাজ্যের কৌঁসুলিকে প্রশ্ন করেন, ‘‘যেখানে সৎকার করা হয়েছিল সেখানে গিয়ে আপনারা কী কোনও তদন্ত করেছিলেন?’’
আর এক জনস্বার্থ মামলায় আইনজীবী অনিন্দ্যসুন্দর দাসের হয়ে আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি সওয়াল করেন। তাঁর দাবি, ‘‘৩৭৫ ধারায় অভিযোগ আনা হোক, কারণ নির্যাতিতা নাবালিকা। রবিবার অভিযুক্তেরা গ্রেফতার হয়েছে। এই অবস্থায় ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত শুরু না হলে প্রমাণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেন্ট্রাল ফরেন্সিক রিসার্চ ল্যাবরেটরি (সিএফউসিএল)-কে ডাকা হোক।’’ ঘটনার সাক্ষীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার পাশাপাশি কেস ডায়েরি আদালতে আনারও দাবি জানান তিনি।
এডুলজির দাবি, এই ধরনের মামলায় ভিডিয়োগ্রাফি করে সাক্ষীদের বয়ান নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে সেটা হয়েছে কি না তা দেখা দরকার। তাঁর কথায়, ‘‘ভিডিয়ো ক্লিপিংস মিথ্যা বলে না। আমাদের বক্তব্য, পুলিশ ঠিক মতো তদন্ত করেনি। যেখান থেকে নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়, সেই জায়গায় কোনও রক্তের নমুনা ছিল কি না, জানা দরকার।’’ পাশাপাশি, ঘটনার পুনর্নির্মাণ হয়েছে কি না দেখা দরকার বলেও দাবি করেন তিনি। তাঁর দাবি, লুমিনল ব্যবহার করলে তথ্যপ্রমাণ ফিরে পাওয়া সম্ভব। অভিযুক্তদের পোশাক বাজেয়াপ্ত হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন তুলে এডুলজি বলেন, ‘‘সেগুলি ফরেন্সিকে পাঠালে তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যেতে পারে।’’ এফআইআরে নাবালিকা বা তার পরিবারের নাম থাকলে সেটা ঝাপসা (ব্লার) করা হয়েছে কি না দেখা উচিত বলেও জানান তিনি। এডুলজির কথায়, ‘‘ইন্টারনেটে আপলোড হয়ে গেলে বিপত্তি হবে।’’
মামলার শুনানি পর্বে এডুলজি প্রশ্ন করেন, যে ঘরে ঘটনা ঘটেছিল সেখান থেকে বেডশিট উদ্ধার হয়েছে? সেই সময় রাজ্যের আইনজীবী জানান, বেডশিট উদ্ধার হয়েছে। তখন রাজ্যের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘‘আপনারা বলছেন, বেড শিট উদ্ধার করেছেন। কোন বেড শিট? কবে উদ্ধার করা হয়েছে? ঘটনাটির সময় কি সেটাই ব্যবহার করা হয়েছে?’’ জবাবে রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘‘গতকাল রাতে উদ্ধার করা হয়েছে বেডশিট।’’ এর পরে প্রধান বিচারপতির পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আদালতকে তা জানালেন না কেন? সঠিকটা তো বলবেন। এই কথা কেন লুকোলেন?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy