প্রতীকী ছবি
কয়েকশো ফুটের ব্যবধানে পরপর তিনটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল হাওড়ার হালদারপাড়ায়। রবিবার দুপুর থেকে সোমবার ভোরের মধ্যে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পরপর তিন জনের এমন মৃত্যুতে প্রবল চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। মৃতদের এক জন যুবক, এক জন প্রৌঢ় ও এক জন বৃদ্ধ। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, তিন জনই গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন। কোভিড পরিস্থিতির কারণে প্রত্যেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে জেনেছে পুলিশ। মনোবিদেরাও বার বার বলছেন, বর্তমান সময়ে নাগরিকদের একটি বড় অংশই প্রবল হতাশা ও মানসিক অবসাদে ভুগছেন। আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা দিচ্ছে অনেকের মধ্যে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হালদারপাড়ায় রবিবার প্রথম ঘটনাটি ঘটে সকাল ৭টা নাগাদ। নিজের ঘরের সিলিং থেকে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় সুনীলকুমার আঢ্য নামে ৬২ বছরের এক বৃদ্ধকে। পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তি পাকস্থলীর ক্যানসারে ভুগছিলেন। লকডাউনের জন্য পরিবারের আর্থিক সমস্যাও চলছিল।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে ওই ব্যক্তির বাড়ি থেকে কয়েকশো ফুট দূরে। সে দিন দুপুরেই মেলে চয়ন রায় নামে ২০ বছরের এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ। ঘণ্টা দুয়েক আগেই যে যুবককে এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছিল, কেন তিনি বাড়ি ফিরে ওই কাণ্ড ঘটালেন, তা নিয়ে বাসিন্দারা বিস্মিত। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের ধারণা, প্রেমঘটিত কারণে আঘাত পাওয়ায় ওই যুবক মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। তাই আত্মঘাতী হন তিনি।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে সোমবার ভোরে। ওই এলাকাতেই রাজীব চট্টোপাধ্যায় নামে বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়ের দেহ উদ্ধার হয় তাঁর ঘর থেকে, গলায় দড়ির ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায়। পুলিশ জানায়, লকডাউনে চাকরি চলে যাওয়ায় প্রবল আর্থিক অনটনে রয়েছে রাজীববাবুর পরিবার। তা নিয়ে বাড়িতে প্রায়ই অশান্তি হত। তাই কিছু দিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন রাজীববাবু। এ দিন ভোরে ঘরের ভিতরে তাঁর ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান পরিবারের লোকজন। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তারা জানায়, তিনটি দেহই ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ঠিক কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাবে। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্তও হবে।
মনস্তত্ত্বের চিকিৎসক রিমা মুখোপাধ্যায়ের মতে, একই এলাকায় পাশাপাশি এই ধরনের ঘটনার মধ্যে একটা সম্পর্ক থাকতেই পারে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘‘এক জন অবসাদগ্রস্তের আত্মহত্যা দেখে আর এক জন অবসাদগ্রস্ত ব্যক্তিরও আত্মহত্যার প্রবণতা দেখা দিতে পারে। সেই সঙ্গে রয়েছে এই কোভিড পরিস্থিতি। কবে এই পরিস্থিতি বদলাবে বা আদৌ বদলাবে কি না, তা নিয়ে ভেবেই তীব্র হতাশা তৈরি হচ্ছে। তা থেকেই এমন তীব্র মানসিক অবসাদ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy