Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Sound pollution

‘আপনাদের বিকট শব্দে অতিষ্ঠ’! অভিজাত আবাসনের নালিশ-ব্যানার নিয়ে কী বলল ম্যারিয়ট

আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, হোটেলে চলা পার্টির শব্দের জেরে তাঁদের কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রগতি ময়দান থানা, পুরসভা, দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন তাঁরা।

বাইপাসের ধারে আবাসন থেকে ঝোলানো হয়েছে সেই ব্যানার।

বাইপাসের ধারে আবাসন থেকে ঝোলানো হয়েছে সেই ব্যানার। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২২ ১৭:০৫
Share: Save:

বাইপাসের ধারের এক অভিজাত আবাসন। সেখানকারই একটি বহুতল থেকে ঝুলছে লম্বা এক বিশাল ব্যানার। দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬০ ফুট তো হবেই। প্রস্থে ফুট দশেক। লাল সেই ব্যানারে সাদা রং দিয়ে উপর থেকে নীচে ইংরেজিতে একের পর এক শব্দ লেখা। একটি বিলাসবহুল হোটেলের নাম করে সেই লেখার বাংলা করলে দাঁড়ায়, ‘আপনাদের উচ্চকিত শব্দ আমাদের বিরক্ত করছে’। শেষে ওই আবাসনের নাম। অভিজাত ওই আবাসনের বাসিন্দাদের এমন অভিনব প্রতিবাদ নজর কেড়েছে শহরবাসীর।

বিলাসবহুল ওই হোটেলের নাম জেডব্লিউ ম্যারিয়ট। তার ঠিক পাশেই ‘সিলভার স্প্রিং’ আবাসন। ওই আবাসনের বাসিন্দাদের অভিযোগ, জেডব্লিউ ম্যারিয়টে চলা পার্টির শব্দের জেরে তাঁদের কান ঝালাপালা হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রগতি ময়দান থানা, পুরসভা, দুষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিলেন তাঁরা। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্যদ তাঁদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিল। কিন্তু এ সবের পরেও স্থায়ী সমাধান হয়নি। আবাসনের বাসিন্দাদের দাবি, সে কারণেই ওই ‘প্রতিবাদ ব্যানার’ ঝোলানো হয়েছে।

ব্যানার ঝোলাতেই ওই হোটেলের তরফে কয়েক জন এসে আবাসন পরিদর্শন করে গিয়েছেন বলে দাবি আবাসিকদের। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন শব্দদূষণ সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞেরাও (সাউন্ড কনসালট্যান্ট)। আবাসিকদের দাবি, হোটেল কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছেন, দু’-তিন সপ্তাহে ‘‘ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ যদিও আবাসনের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হোটেল কর্তৃপক্ষের মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে তাঁরা ভরসা রাখতে পারছেন না। ওই আবাসনের তরফে প্রকাশ কেডিয়া বলেন, ‘‘মৌখিক প্রতিশ্রুতি চাই না। কাজ হোক, সেটাই চাইছি। পাঁচ বছর ধরে সমস্যায় রয়েছি আমরা। কোভিডের সময় বন্ধ ছিল। আবার শুরু হয়েছে। হোটেল থেকে লোক এসে দেখে গিয়েছেন। আশা করছি, কিছু একটা হবে। যত ক্ষণ না হচ্ছে, তত ক্ষণ মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে ভরসা রাখতে পারছি না।’’

এ ভাবেই লাল রঙের ব্যানারে সাদা দিয়ে লিখে জানানো হয়েছে প্রতিবাদ।

এ ভাবেই লাল রঙের ব্যানারে সাদা দিয়ে লিখে জানানো হয়েছে প্রতিবাদ। নিজস্ব চিত্র।

এই প্রথম নয়। এর আগেও এ ধরনের ব্যানার ঝুলিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন ওই আবাসনের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, গত প্রায় পাঁচ বছর ধরেই এই সমস্যা চলছে। মাঝে কোভিডের কারণে দু’বছর বন্ধ ছিল। এখন ফের সমস্যা শুরু হয়েছে। হোটেলের ‘পুল’-এর পাশে শীত শুরু হতেই পার্টি এবং বিয়ের আসর বসে। জোরে জোরে গান বাজানো হয়। ক্রমে বাড়তে থাকে শব্দের তাণ্ডব! আবাসিকদের দাবি, এর ফলে সমস্যায় পড়ছেন সেখানকার প্রবীণ, শিশুরা। আবাসনে মোট ৫২০টি ফ্ল্যাট রয়েছে। তার মধ্যে ৪০০টিতে নিয়মিত বসবাস করেন বাসিন্দারা। এক আবাসিক জানিয়েছেন, সামনে এক পড়ুয়ার বোর্ডের পরীক্ষা রয়েছে। বাড়িতে পড়াশোনা করতে পারছেন না বলে তাঁকে আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তাঁর দাবি।

জেডব্লিউ ম্যারিয়টের তরফে যদিও আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে ওই হোটেলের এক কর্মী বলেন, ‘‘আমরাও প্রতিবেশীদের অসুবিধা চাই না। গিয়ে দেখা হয়েছে।’’

আগামী দিনে আদৌ সমাধান হয় কি না, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন আবাসনের বাসিন্দারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Sound pollution police Pollution control board
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy