Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Hospital

Hospital: দালাল-রাজ চলছেই, ধৃত পিজি-র রক্ষী

সেখানে শয্যা পাইয়ে দেওয়ার জন্য টাকার যে লেনদেন হয়েছিল, তা অবশ্য নগদে হয়নি। হয়েছিল অনলাইনে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ০৬:৩৩
Share: Save:

সরকারি হাসপাতালে ঠাঁই না পেয়ে রোগীদের দুর্ভোগে পড়ার ঘটনা মাঝেমধ্যেই সামনে আসে। অভিযোগ ওঠে, টাকার বিনিময়ে শয্যা বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এমন বেআইনি কাজকর্ম বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের তরফে বার বার পদক্ষেপ করার কথা বলা হলেও সরকারি হাসপাতালে দালাল-চক্র যে এখনও স্বমহিমায় রয়েছে, ফের তার প্রমাণ মিলল। এ বার ঘটনাস্থল এসএসকেএম হাসপাতাল।

সেখানে শয্যা পাইয়ে দেওয়ার জন্য টাকার যে লেনদেন হয়েছিল, তা অবশ্য নগদে হয়নি। হয়েছিল অনলাইনে। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী প্রবীর বৈরাগীকে গ্রেফতারের পরে এমনটাই জেনেছেন তদন্তকারীরা। ধৃতের কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকাও উদ্ধার হয়েছে। বিষয়টি জানার পরে সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সূত্রের খবর, এসএসকেএম চত্বরে কোনও টাকার লেনদেন হচ্ছে কি না, তা জানতে নজরদারি চালান হাসপাতালের আধিকারিক এবং সাদা পোশাকের পুলিশ। কেউ কাউকে টাকা দিচ্ছেন, এমন কোনও দৃশ্য দেখে সন্দেহজনক বলে মনে হলেই তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক আধিকারিকের কথায়, “হাসপাতাল চত্বরে টাকার লেনদেন বন্ধ হলেও বিভিন্ন সময়েই রোগীর পরিজনেরা অভিযোগ তুলছিলেন, টাকার বিনিময়ে তাঁরা শয্যা পেয়েছেন। এবং সেই টাকা অনলাইনে দিয়েছেন। এর থেকেই বোঝা যায়, কৌশল বদলে এখনও সক্রিয় দালাল-চক্র।” বিষয়টি জানার পরেই অনলাইনে লেনদেন করা দালাল-চক্রকে ধরতে ফাঁদ পাতেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সেই মতো দিন পনেরো আগে মালদহের বাসিন্দা এক রোগীর পরিজনকে দিয়ে জাল পাতা হয়। আর তাতেই পা দেয় শিশু বিভাগে কর্মরত ওই নিরাপত্তারক্ষী। রোগীর পরিজনদের সে জানিয়েছিল, টাকা দিলে স্নায়ুরোগ বিভাগে ভর্তির ব্যবস্থা করে দেবে। দর কষাকষির পরে ২৮ হাজার টাকায় রফা হয়েছিল। কিন্তু টাকা হাতে নেয়নি প্রবীর। বলেছিল, অনলাইনে তার অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শেষে অবশ্য রোগীর মৃত্যু হওয়ায় পরিজনেরা আর অভিযোগ জানাতে চাননি। তখন হাসপাতালের তরফেই পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সুপার পীযূষ রায় বলেন, “বিগত কয়েক দিনে একাধিক অভিযোগ কানে এসেছিল। তবে কেউ নির্দিষ্ট অভিযোগ না করায় ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছিল না। কিন্তু বিষয়টি জেনেও উদাসীন থাকা যায় না। তাই পদক্ষেপ করি ও শেষে পুলিশের সহযোগিতায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। চক্রের নেপথ্যে আরও কারা রয়েছে, তা-ও পুলিশকে খুঁজে বার করতে বলা হয়েছে।”

প্রবীরকে প্রথমে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তার পরে রোগীর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে টাকার লেনদেন ও ফোনে কথাবার্তার রেকর্ডিং-সহ প্রয়োজনীয় সব তথ্যপ্রমাণ জোগাড় করে। এমনকি, টাকা লেনদেনের বিষয়ে নিশ্চিত হতে ব্যাঙ্কেও খোঁজ নেন তদন্তকারীরা। এর পরে বৃহস্পতিবার রাতে বালিগঞ্জের বাসিন্দা প্রবীরকে গ্রেফতার করা হয়।

কিছু দিন আগেই এক রোগীকে ভুল বুঝিয়ে নার্সিংহোমে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। তার আগে ওই হাসপাতালেই পিপিপি (পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ) মডেলের এমআরআই কেন্দ্রের কয়েক জন কর্মী দালাল-চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার প্রমাণ মেলায় তাদের বরখাস্ত করা হয়েছিল। এই সমস্ত ঘটনা থেকেই স্পষ্ট, সরকারি হাসপাতাল এখনও দালাল-চক্রের দুরারোগ্য ‘ব্যাধি’ থেকে মুক্তি পায়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Hospital Patients
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy