Advertisement
E-Paper

‘শিক্ষায় জরুরি অবস্থা’, যাদবপুর নিয়ে বিস্ফোরক রাজ্যপাল

বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিতে ক্ষুব্ধ ধনখড়।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০১৯ ২১:৩৪
Share
Save

‘উচ্চশিক্ষা বিধি’-সহ নানা প্রসঙ্গে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকার ঠোকাঠুকি চলছিলই। এ বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিতের সিদ্ধান্ত ঘিরে রাজভবন ও নবান্নের সেই সংঘাতের পারদ আরও এক ধাপ চড়ল। শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় অভিযোগ করেন, তাঁকে না জানিয়েই ওই অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। আর এই সূত্র ধরেই একের পর এক তোপ দেগেছেন রাজ্যপাল। শিক্ষাক্ষেত্রে ‘জরুরি অবস্থা’ চলছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজ্যে শিক্ষার ‘ডিএনএ বিষিয়ে’ দেওয়া হচ্ছে বলেও তাঁর অভিযোগ। একই সঙ্গে ট্র্যাক টু হিসাবে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের আলোচনার রাস্তা খোলা বলেও জানিয়েছেন তিনি। যদিও রাজ্যপালের অভিযোগ নিয়ে সংক্ষিপ্ত জবাবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ছাত্রসমাজ রাজ্যপালের উপর ক্ষুব্ধ।

আগামী ২৪ ডিসেম্বর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার ঠিক তিন দিন আগে অনুষ্ঠান বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর তা নিয়ে এ দিন ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ শানিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘কোর্ট মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল কারা কারা ডি লিট পাচ্ছেন। সেই ফাইল রাজভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমি তা দ্রুত সইও করে দিয়েছিলাম। তা হলে হঠাৎ এমন কী হল যে সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত করতে হচ্ছে?’’

এ বার বিশিষ্ট কবি শঙ্খ ঘোষ এবং প্রাক্তন বিদেশ সচিব সলমন হায়দারকে ডি-লিট দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। আইএসআই-এর অধিকর্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজ্ঞানী সিএনআর রাওকে সাম্মানিক ডিএসসি দেওযার কথা। অনুষ্ঠান স্থগিত হওয়ায় এ দিন সাংবাদিক বৈঠক থেকেই তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন রাজ্যপাল। আর এই সূত্র ধরেই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, ‘‘রাজ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে সঙ্কট তৈরি হয়েছে। অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার আগে আমার সঙ্গে কথা বলা দরকার ছিল। আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। অথচ, আমি এই প্রতিষ্ঠানের আচার্য। তা সত্ত্বেও কেন এ নিয়ে কোনও কথা জানানো হয়নি আমি বলতে পারব না।’’

আরও পড়ুন: সিএএ বিরোধী পড়ুয়া-মিছিলে ভাসল কলকাতা​

এমন সিদ্ধান্তে তিনি যে ‘ব্যথিত’, তা-ও জানিয়েছেন রাজ্যপাল। সেই সঙ্গে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে একরাশ আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, শিক্ষা ক্ষেত্রে ‘রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো’র চেষ্টা চলছে। ‘চাপে’ পড়েই এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত করতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে কী ভাবে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চলছে অথবা কে ‘চাপ’ দিয়ে এই সমাবর্তন অনুষ্ঠান বাতিল করতে চাইছেন তা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।

এ দিন জগদীপ ধনখড় বলেন, ‘‘বর্তমান পরিকাঠামো অনুযায়ী, আচার্যের অনুমতি ছাড়া সমাবর্তন নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বিশ্ববিদ্যালয়।’’ এই পরিস্থিতি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির পক্ষে খারাপ বলে ব্যাখ্যাও করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে রাজ্য সরকারকে জুড়ে দিয়ে ধাপে ধাপে সুর চড়িয়েছেন তিনি। রাজভবন থেকে নবান্নকে নিশানা করে তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমরা কি একটা গণতান্ত্রিক রাজ্যে বাস করছি? রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে শিক্ষার ডিএনএ বিষিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে কেন?’’ এই সূত্রেই এমন ঘটনার সাম্প্রতিক ইতিহাসও টেনে এনেছেন তিনি। ধনখড়ের দাবি, যাদবপুরই প্রথম নয়। এর আগে অন্তত চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক তাঁকে না জানিয়েই বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। একের পর এক বোমা ফাটিয়েও, নবান্ন ও রাজভবনের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার বার্তাও এ দিন দিয়েছেন জগদীপ ধনখড়। ২৪ ঘণ্টাই তিনি আলোচনার জন্য তৈরি বলে ইঙ্গিতও দিয়ে রেখেছেন।

আরও পড়ুন: যশোর রোড ধরে এগিয়ে আসছে বিমান, সাক্ষী থাকল রাতের কলকাতা​

এর আগে ‘উচ্চশিক্ষা বিধি’ নিয়ে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে দ্বন্দ্ব তুঙ্গে উঠেছিল। এ দিন রাজ্যপালের এই ভূরি ভূরি অভিযোগ নিয়ে সংক্ষেপে জবাব দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়: ‘‘রাজ্যপাল অতি সক্রিয়তা দেখাচ্ছেন। তাঁর প্রতি ছাত্রসমাজ ক্ষুব্ধ হয়ে থাকলে কিছু করার নেই।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে অবশ্য খবর, এই সমাবর্তন স্থগিত করার পিছনে রয়েছে রাজ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি। সমাবর্তন অনুষ্ঠান হলে ছাত্র বিক্ষোভের সম্ভাবনা রয়েছে, সে কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের জল গড়াতে শুরু করেছে শনিবার। তবে, মাসখানেক আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বৈঠকে (কোর্ট মিটিং) ডি লিট এবং ডিএসসি প্রাপকদের তালিকা নিয়ে নজিরবিহীন ভাবে আপত্তি তোলেন আাচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। নির্দিষ্ট করে কারও নাম উল্লেখ না করলেও প্রাপকদের বায়োডেটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। এর পর উপাচার্য সুরঞ্জন দাস-সহ ডিনদের প্রায় সকলেই ওই তালিকায় তাঁদের সম্মতি রয়েছে বলে হাত তুলে জানান। শেষমেশ সর্বসম্মতিক্রমে ওই তালিকাতেই চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে। রাজ্যপালও বিষয়টি মেনে নেন।

Jagdeep Dhankhar State Government Raj Bhavan Nabanna Jadavpur University Convocation West Bengal Partha Chatterjee

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।