উনুনের ধোঁয়ার দূষণ ঠেকাতেই হিটার বিলির ভাবনা। ফাইল চিত্র
বায়ুদূষণ ঠেকাতে শহরের হাজারখানেক ঝুপড়ি দোকানে বৈদ্যুতিক হিটার দেবে রাজ্য সরকার। তবে যে সব দোকান জ্বালানি হিসেবে কাঠকয়লা ব্যবহার করে তারাই এই সুবিধা পাবে। প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে, হিটার সংযোগের খরচের পঞ্চাশ শতাংশ দেবেন সংশ্লিষ্ট দোকান মালিক এবং বাকি খরচ দেবে রাজ্য পরিবেশ দফতর। প্রশাসন সূত্রের খবর, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে এই কাজ হচ্ছে। প্রথমে ভর্তুকিতে বৈদ্যুতিক হিটারের সংযোগ দেওয়া হবে। পরবর্তী কালে এলপিজি গ্যাসও দেওয়া হবে। তবে সে ক্ষেত্রে ভর্তুকির পরিমাণ কী, তা এখনও চূড়ান্ত নয়। এই প্রকল্পের সমস্ত দরপত্র ডাকবে কলকাতা পুরসভা।
রাস্তার দু’ধারে ছোট খাবারের দোকান বা ঝুপড়িতে এলপিজি গ্যাস বা বৈদ্যুতিক হিটার দেওয়া যে হবে, সে কথা রাজ্য সরকারের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল। কতগুলি ঝুপড়িতে প্রাথমিক ভাবে সেই এলপিজি বা হিটার দেওয়া হবে, সে সমীক্ষাও এ বার শেষের মুখে। ওই সমীক্ষা চালিয়েছে কলকাতা পুরসভা। আপাতত এক হাজার ঝুপড়ি দোকানের কথা ভাবা হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, যে হাজারটিকে প্রথম দফায় বাছা হয়েছে, সেই ঝুপড়ির মালিকদের সঙ্গে এ নিয়ে কথাও হয়েছে। পুরসভার জঞ্জাল সাফাই দফতর এই প্রকল্পের সব দরপত্র আহ্বান করা হবে। দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘পুলিশ, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ, পুরসভা সকলে মিলেই এই কাজ করছে। বৈদ্যুতিক হিটারের জন্য দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া চলছে।’’
যদিও বিষয়টি চালুর আগেই ঝুপড়ির সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ‘ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন’ (এফএও) ২০১৮-র রিপোর্ট অনুযায়ী, কলকাতায় প্রায় এক লক্ষ ৩০ হাজার খাবারের ঝুপড়ি রয়েছে। সেগুলির মধ্যে স্থায়ী দোকান প্রায় এক লক্ষ ৪ হাজার। এফএও-র রিপোর্ট এ-ও বলছে, ৩৩ শতাংশ ক্রেতাই রোজ ঝুপড়িগুলিতে খান, ২৩ শতাংশ ক্রেতা সপ্তাহে এক থেকে চার বার খান। ফলে দূষণের হাত থেকে রেহাই নেই কারওরই। অথচ সমীক্ষার যে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট জমা পড়েছে পুরসভায়, সেখানে দোকানের সংখ্যা হাজার পনেরোর মতো! ফলে পুরকর্তাদের একটা বড় অংশই মনে করছেন, পাইলট প্রকল্প হিসেবেও যদি এটি চালু করা যায়, তা হলেও সংখ্যাটা একেবারেই ধর্তব্যের মধ্যে নয়! এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘তা ছাড়া পাইলট প্রকল্প হিসেবে অনেক কিছুই চালু হয়, সেগুলি আর বাস্তবায়িতও হয় না। ফলে এতে শহরের বায়ুদূষণ আদৌ রোধ করা যাবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।’’
যদিও পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বায়ুদূষণ রোধে ইতিমধ্যেই কয়েকটি পদক্ষেপ করা হয়েছে। যেমন, শহরের বায়ুদূষণ নিয়ে নিয়মিত বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ, রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে, তেমনই রাস্তার ধুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য স্প্রিঙ্কলার, যন্ত্র ঝাড়ু সবই কেনা হচ্ছে। এক কর্তার কথায়, ‘‘বায়দূষণ তো শুধু কলকাতার সমস্যা নয়। সারা দেশেরই সমস্যা। রাতারাতি এ সব মিটে যায় না। ধাপে ধাপে সব কিছুই করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy