ফাইল চিত্র।
কোথাও একটি ঘর ভাড়া দিতে দর হাঁকা হচ্ছে মাসে ১০ হাজার টাকা। সেলামি বা অগ্রিম হিসেবে চাওয়া হচ্ছে দুই থেকে তিন লক্ষ। কোথাও আবার একটি টেবিল পেতে কাজ চালানোর জায়গা দিতেই চাওয়া হচ্ছে সাতশো থেকে এক হাজার টাকা! কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই রসিদ পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই। স্পষ্ট বলে দেওয়া হচ্ছে, ‘‘নিতে হলে নিন, নয়তো মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে ঘর দিতে বলুন!’’
রাতারাতি দোকান বন্ধ করে পথে নেমে আসতে হয়েছে। তার পরে এখন এমনই অবস্থা বৌবাজারের সোনার কারিগরদের একটি বড় অংশের। পরিস্থিতি এমনই যে, বরাত পাওয়া সোনার গয়না কবে বানিয়ে উঠতে পারবেন, তা-ই বুঝতে পারছেন না তাঁরা। লাভের আশা তো ছাড়তে হয়েছেই, সেই সঙ্গে আতঙ্ক বাড়িয়ে শোরুম থেকে সোনা ফেরত দেওয়ার চাপ আসছে বলেও অভিযোগ। কিন্তু সোনার কারিগরদের চিন্তা আরও বাড়াচ্ছে ঘর ভাড়ার পাকা রসিদ মিলবে কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা।
‘বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতি’র হিসাব অনুযায়ী, বৌবাজারে এক লক্ষেরও বেশি সোনার কারিগর কাজ করেন। শুধুমাত্র দুর্গা পিতুরি লেনেই রয়েছেন প্রায় তিন হাজার জন। তাঁদেরই এক জন অমল দাস বললেন, ‘‘ঝোপ বুঝে কোপ মারা হচ্ছে। সামান্য টেবিল পেতে কাজ করতেই সাতশো থেকে এক হাজার টাকা ভাড়া চাওয়া হচ্ছে। সেলামি বা অগ্রিম দিয়ে ভাড়া নেওয়ার টাকা কোথায়?’’ ওই এলাকারই সোনার ব্যবসায়ী গৌতম হাজরার কথায়, ‘‘২০১৯ সালে যখন দোকান বন্ধ করে আমাদের উঠে যেতে হয়েছিল, তখন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, তাঁরা ভাড়া মেটাবেন। প্রতি বর্গফুটের জন্য ৬০ টাকা করে ভাড়া মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অনেকেই সেই ভাড়ার টাকা পাননি। প্রথমে তো বোঝা যায়নি, কত দিন লাগতে পারে, তাই অনেকেই কয়েক মাসের জন্য ঘর ভাড়া নিয়েছিলেন। এই এলাকায় এ ধরনের ভাড়ায় পাকা কাগজ দেওয়া হয় না। হাতে লেখা কাগজের চুক্তিতে ঘর পাওয়া যায়। হাতে লেখা কাগজ মেট্রো কর্তৃপক্ষ নিতে চাননি। এ বার ভাড়া নিতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে, পাকা কাগজের ঘর ভাড়া নিতে চাইলে বাড়িওয়ালা মোটা টাকা সেলামি বা অগ্রিম চাইছেন। এখনই দু’-তিন লক্ষ টাকা আমরা বার করব কোথা থেকে!’’
‘বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতি’র বৌবাজার শাখার সম্পাদক সুব্রত কর বললেন, ‘‘উভয়সঙ্কটে পড়েছি আমরা। এক দিকে সোনার কারবারিদের লাভের টাকা পাওয়া আটকে গেল। কারণ, কবে গয়না বানিয়ে দেওয়া যাবে, তা-ই বোঝা যাচ্ছে না। এর মধ্যে মোটা টাকায় ঘর ভাড়া নিতে হবে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে পাকা কাগজ দেখাতে হবে বলে! এই সমস্যার সমাধান মেট্রোকেই করতে হবে। ভাড়া তো ছেড়েই দিচ্ছি, আমাদের এই ক্ষতিপূরণের দায়িত্ব কেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ নেবেন না?’’
মেয়র ফিরহাদ হাকিম যদিও বলেছেন, ‘‘সোনার কারবারিদের রুটি-রুজির বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর দেখবেন, কোথায় ঘর ভাড়া পাওয়া যায়। ভাড়া মেটাবেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy