প্রশ্নে এই হাসপাতাল। নিজস্ব চিত্র
হৃদ্রোগের কোনও চিকিৎসকই নেই! এক জন মাত্র অস্থি চিকিৎসক।
তা-ও তিনি আসেন সপ্তাহে দু’দিন। স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের অভাবে নাজেহাল অবস্থা হয় এলাকার প্রসূতিদের। ২৪ ঘণ্টার ওটি পর্যন্ত নেই। অথচ বন্দর এলাকার ‘নেই-রাজ্যে’র এই হাসপাতাল বছর কয়েক আগে সুপার স্পেশ্যালিটির মর্যাদা পেয়েছে। এর পরেও অবশ্য নাদিয়ালের গার্ডেনরিচ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে পরিষেবার হাল ফেরেনি বলেই অভিযোগ। ফলে শুধু মর্যাদাই রয়েছে, পরিষেবা নেই, এমনই অভিযোগ বাসিন্দা থেকে হাসপাতালের কর্মীদের অনেকেই।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মহেশতলা, গার্ডেনরিচ এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই পথ দুর্ঘটনায় হাত-পা ভাঙার ঘটনা ঘটে। হাসপাতালে কোনও অস্থি চিকিৎসক না থাকায়, দুর্ভোগে পড়েন দুর্ঘটনাগ্রস্ত মানুষ এবং তাঁর পরিজনেরা। সামান্য হাত-পা ভাঙার ঘটনাতেও আহতদের কলকাতার হাসপাতালে বদলি করা হয় বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা। আরও অভিযোগ, হাসপাতালে স্ত্রীরোগের চিকিৎসকের অভাব স্থানীয়দের পক্ষে বড় সমস্যার কারণ। সেই সঙ্গে হাসপাতালের শিশু বিভাগ যথেষ্ট দুর্বল। শিশু চিকিৎসকের অভাব থাকলেও বহির্বিভাগ ধুঁকে চলছে। কিন্তু শিশু ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা সেখানে নেই। তা দ্রুত চালুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। চিকিৎসা পরিকাঠামোর যাবতীয় দুর্বলতার অভিযোগ মেনে নিচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
এমন বেহাল পরিকাঠামো নিয়ে চলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বিরুদ্ধে আরও বড় একটি অভিযোগ যে, তাদের নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্সই নেই। কলকাতা পুরসভার ১৪১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই হাসপাতাল। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যা মমতাজ বেগম জানাচ্ছেন, ২০১৪ সালে বিধায়ক থাকাকালীন বিধায়ক তহবিলের টাকায় হাসপাতালকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটি এখন ভাড়ায় চলছে! মমতাজের অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের বৈঠকে এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছি। কিন্তু কাউন্সিলর বলে কোনও গুরুত্ব পাইনি।’’ এলাকার বিধায়ক আব্দুল খালেক মোল্লা বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’
পরিষেবার পাশাপাশি হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও বড় অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, হাসপাতালে কোনও সীমানা পাঁচিল নেই। ফলে বহিরাগতেরা অবাধে হাসপাতালে ঢোকেন। এক কর্মীর কথায়, ‘‘হাসপাতালে সর্বক্ষণের পুলিশ আউটপোস্ট থাকলে রোগীর পরিবার এবং আমরা নিশ্চিন্তে কাজ করতে পারি।’’ এলাকার বিধায়ক বলেন, ‘‘স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের অভাব রয়েছে। ওই হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা ওটি চালু করাও জরুরি। এই দুই ঘাটতি পূরণ হলে ঘিঞ্জি এলাকায় অসংখ্য মানুষ উপকৃত হবেন। হাসপাতালে পর্যাপ্ত সংখ্যক ডাক্তার নিয়োগ করিয়ে পরিষেবার মানোন্নয়ন করানোর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছি।’’
অভিযোগ প্রসঙ্গে গার্ডেনরিচ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার সর্বাণী বসুর দাবি, ‘‘সবে হাসপাতালের দায়িত্ব নিয়েছি। এখনই মন্তব্য করার মতো জায়গায় নেই।’’ হাসপাতালের অভাব-অভিযোগের কথা শুনে রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘এমন পরিস্থিতি কেন তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy