E-Paper

মাথার উপরে সমীক্ষার খাঁড়া, ধর্মতলামুখী ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা

কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ফুটপাতের দোকান নিয়ে সমীক্ষা চলছে। সমীক্ষা শেষ হলে বোঝা যাবে, ফুটপাতের ব্যবসা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে। কার দোকান থাকবে, কার দোকান সরে যাবে— সে সব নিয়ে তাই উদ্বেগে রয়েছেন হকারেরা।

অনেক ব্যবসায়ী সভায় যাওয়ায় গড়িয়াহাটে বন্ধ ছিল বহু দোকান। রবিবার।

অনেক ব্যবসায়ী সভায় যাওয়ায় গড়িয়াহাটে বন্ধ ছিল বহু দোকান। রবিবার। —নিজস্ব চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২৪ ০৫:৫৯
Share
Save

এ যেন পরীক্ষার ফল বেরোনোর আগে দেবস্থানে গিয়ে মাথা ঠেকানো।

কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে ফুটপাতের দোকান নিয়ে সমীক্ষা চলছে। সমীক্ষা শেষ হলে বোঝা যাবে, ফুটপাতের ব্যবসা নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে। কার দোকান থাকবে, কার দোকান সরে যাবে— সে সব নিয়ে তাই উদ্বেগে রয়েছেন হকারেরা। এমনই পরিস্থিতিতে রবিবার, ২১ জুলাই ব্যবসা বন্ধ রেখে ধর্মতলায় ‘শহিদ’ স্মরণের সমাবেশে যোগ দিলেন তাঁদের অনেকে।

কলকাতার হকার বললেই হাতিবাগান, গড়িয়াহাট, চিৎপুর, টালিগঞ্জ, গড়িয়া, বিধাননগরের মতো এলাকার ছবি ভেসে ওঠে। কিন্তু সেই সব ব্যবসার অস্তিত্ব নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই শহরের ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলে দলের নেতৃত্বের একাংশকে দোষারোপ করেছেন। তার পরেই হকার নিয়ন্ত্রণে নতুন করে শুরু হয়েছে সমীক্ষা।

উত্তর কলকাতায় হাতিবাগান তথা বিধান সরণি তল্লাট এ দিন কার্যত ধর্মঘটের চেহারা নেয়। সার সার দোকান বন্ধ থাকতেই দেখা গিয়েছে। দুপুরের দিকে কিছু কিছু দোকান খুললেও সেগুলির মালিকদের সকালে ধর্মতলা যেতে হয়েছে। হাতিবাগানের ফুটপাতে ব্যবসা করা সঞ্জীব সাউয়ের বক্তব্য, ‘‘এ বার পরিস্থিতি একটু অন্য রকম। অনেকেই খুব চাপে রয়েছেন। কার দোকান থাকবে, কার থাকবে না, তা নিয়ে সবাই চিন্তায়। স্থানীয় নেতৃত্ব মিটিংয়ে যাওয়ার জন্য বলেছেন। তাই এ চত্বর এত শুনশান। তবে এটাও ঠিক যে, ২১ জুলাই রবিবার পড়ায় অনেক দোকানদার মিটিং থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।’’

হকারদেরই একাংশ জানালেন, সরকারি সমীক্ষায় বৈধ ও অবৈধ দোকান চিহ্নিতকরণের কাজে স্থানীয় নেতারা বড় ভূমিকা নিচ্ছেন। ফলে তাঁদের নির্দেশ উপেক্ষা করার সাহস দেখাননি কেউই। অবশ্য প্রকাশ্যে এ নিয়ে কথা বলতেও নারাজ অনেকেই।

গড়িয়াহাট মোড় অবশ্য ততটা ফাঁকা ছিল না এ দিন দুপুরে। ফুটপাতে কিছু দোকান খোলা ছিল। তবে বেশির ভাগই ছিল বন্ধ। একডালিয়ার কাছে ফুটপাতে ব্যবসা করা বিশ্বনাথ দাসের কথায়, ‘‘আমাদের এ দিকেও সমীক্ষা হয়েছে। দেখা যাক, কী হয়। মঞ্চ থেকে দিদি আমাদের জন্য যদি কিছু বলেন, এই ভেবে সকালেই গিয়ে ঘুরে এসেছি।’’

আবার বাসন্তী দেবী কলেজের উল্টো দিকের ফুটপাতে টেবিল ক্লথের ব্যবসায়ী স্বপন দাস বললেন, ‘‘সংগঠনের পাশে তো থাকতেই হবে। নেতারাও তো আমাদের দেখেন। আমি দোকান খুলে ভাইকে ধর্মতলা পাঠিয়েছি।’’ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘হকার নেতারা তো সবাইকে চেনেন। সমাবেশে না গেলে বর্ষার সময়ে দোকানের উপরে পলিথিন লাগাতে দেবেন না। মালপত্র ভিজে যাবে। তা ছাড়া রবিবার গড়িয়াহাট চত্বরে বাজার জমতে বিকেল হয়ে যায়। তাই বেলার দিকে ধর্মতলায় গিয়েছিলাম।’’

হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা শক্তিমান ঘোষের অবশ্য দাবি, সমীক্ষার অর্থ হকারদের দোকান তুলে দেওয়া নয়। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস, কাউকে উচ্ছেদ করা হবে না। সমীক্ষা চলছে ব্যবসার ক্ষেত্রটা শৃঙ্খলাবদ্ধ করার জন্য। তাই ভয় পেয়ে হকারেরা সমাবেশে গিয়েছেন, তেমনটা নয়। কেউ কেউ হয়তো ভয় পাচ্ছেন। একমাত্র নিউ টাউনের হকারেরা উচ্ছেদ হওয়ার ভয়ে সমাবেশে না গিয়ে দোকান আগলে ছিলেন বলে শুনেছি। কারণ ওখানে নিয়ম না মেনে এনকেডিএ উচ্ছেদ করছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Footpath Encroachment encroachment Kolkata

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।