Advertisement
E-Paper

‘উধাও’ তরুণীই, পাল্টা অপহরণের অভিযোগে জট আনন্দপুর-কাণ্ডে

অভিযোগ জানানোর পরে কেন হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে গেলেন তরুণী, কেনই বা তাঁর খোঁজ পুলিশ পেল না, সে সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। লালবাজার জানাচ্ছে, সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

An image of sexual harassment

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:০৯
Share
Save

ধর্ষণের অভিযোগ জানানোর পরে অভিযোগকারিণী তরুণীরই খোঁজ মিলছে না। বুধবার আদালতে তাঁর গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে তিনি আসেননি। আনন্দপুর ধর্ষণ-কাণ্ডে এ দিন লালবাজার সূত্রে এমনই তথ্য মিলেছে। অন্য দিকে, অভিযুক্ত যুবক থানায় অপহরণের পাল্টা একটি অভিযোগ করেছেন বলেও জানা গিয়েছে। অভিযোগ জানানোর পরে কেন হঠাৎ করে নিখোঁজ হয়ে গেলেন তরুণী, কেনই বা তাঁর খোঁজ পুলিশ পেল না, সে সব প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। লালবাজার জানাচ্ছে, সবটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগকারিণী গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা।

আনন্দপুর ধর্ষণ-কাণ্ডের প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্তের পাশাপাশি তাঁর গাড়ির চালকের ভূমিকাও পুলিশের নজরে রয়েছে। তিনিও এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে যুক্ত থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। ফলে তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল কি না, সেটাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। যদিও অভিযোগ জানানোর ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় পরে মূল অভিযুক্তকে সামনে পেয়েও কেন গ্রেফতার করা হল না, তা নিয়ে পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন উঠেছে। তবে কি প্রভাবশালী-যোগেই ছাড় অভিযুক্তকে, উঠছে সেই প্রশ্নও।

এ প্রসঙ্গে লালবাজার জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুবককে অপহরণ করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার একটি লিখিত অভিযোগ মেলে। যার তদন্তে নেমে একটি ফ্ল্যাটের বন্ধ ঘর থেকে অভিযুক্ত যুবক এবং তাঁর এক সঙ্গীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁরা দু’জনেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ধর্ষণ-কাণ্ডে অভিযুক্তের থানায় দায়ের করা অপহরণের পাল্টা এই অভিযোগ নতুন মাত্রা জুড়েছে তদন্তে। তবে কে বা কারা যুবককে অপহরণ করেছিলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ। তবে কি ধর্ষণের অভিযোগ থেকে বাঁচতেই অপহরণের পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে? লালবাজারের কর্তারা কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।

সোমবার রাতে আনন্দপুর থানায় ধর্ষণের একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়। সম্পর্ক ‘জোড়া’ লাগানোর নামে ডেকে এনে গাড়ির ভিতরে বেহুঁশ করে এক যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনেন ওই তরুণী। এমনকি, অভিযুক্ত নিজেকে রাজনৈতিক প্রভাবশালী বলে তরুণীকে হুমকি দেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল। তদন্তে পুলিশ জেনেছে, কয়েক মাস ধরে তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাইছিলেন তাঁর পরিচিত ওই যুবক। কিন্তু তরুণী দেখা করতে রাজি হচ্ছিলেন না। অভিযোগ, তখন মডেলিং এবং অভিনয়ে নামানোর প্রলোভন দেখাতে থাকেন অভিযুক্ত।

জানা গিয়েছে, তরুণীকে মডেলিংয়ের চুক্তিপত্রে সই করানোর নাম করেই সোমবার ডেকেছিলেন অভিযুক্ত। নিউ গড়িয়া থেকে তিনি নিজের গাড়িতে তরুণীকে তোলেন। একটি জায়গায় তাঁর ফটোশুট করা হবে বলে তরুণীকে জানিয়েছিলেন যুবকটি। ঘোরাঘুরির পরে আনন্দপুর থানা এলাকায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে তরুণীকে বেহুঁশ করা হয়। সেই অবস্থায় তাঁকে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ দায়ের করেন তরুণী। জানা গিয়েছে, রাত সাড়ে আটটার পরে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জেনেছে, বেহুঁশ অবস্থায় তরুণীকে নিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরেছিলেন অভিযুক্ত। রাতে মুকুন্দপুর সংলগ্ন এলাকায় গাড়ি থেকে তাঁকে নামিয়ে দিয়ে চম্পট দেন তিনি।

তদন্তে নেমে ইএম বাইপাসের একাধিক সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছে পুলিশ। তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের সঙ্গে টালিগঞ্জের চলচ্চিত্র জগতের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে। তাঁর সঙ্গে প্রভাবশালীদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের একাধিক ইঙ্গিতও মিলেছে। এ দিকে, এই ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবিতে বুধবার আনন্দপুর থানায় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপির মহিলা মোর্চা।

লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ঘটনায় দু’টি অভিযোগ হয়েছে। তরুণীর গোপন জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও তিনি আসেননি। অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগ খতিয়ে দেখে তদন্ত এগোচ্ছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Sexual Harassment Sexually abuse police investigation Missing

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}