পুলিশের জালে রোশনী পান্ডে। নিজস্ব চিত্র
রিল নয়, রিয়েল লাইফ বান্টি-বাবলি! মালদহের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে থেকে কলকাতা শহরের স্মার্ট-কেতাদুরস্ত তরুণী, যিনি চোখের পলকে হাওয়া করে দিতে পারেন পাশে দাঁড়িয়ে থাকা যে কারও পকেট। গত মাসে আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে পাকড়াও করার আগে পর্যন্ত এই বাবলি সম্পর্কে কোনও কিছুই জানত না কলকাতা পুলিশ। কিন্তু পাকড়াও করার পর দফায় দফায় জেরা করে ওই তরুণীর বয়ানে তাজ্জব হয়ে গিয়েছেন গোয়েন্দারা।
গত ডিসেম্বরে ভিড়ে ঠাসা চিড়িয়াখানায় লোকের পকেট কাটতে গিয়ে পাকড়াও হন রোশনী পান্ডে নামে বছর ২৪ এর এক তরুণী। সঙ্গে ধরা পড়েন ওই তরুণীর স্বামী যাদবপুরের গাঙ্গুলিবাগানের বাসিন্দা অভিষেক দত্ত। উদ্ধার হয় আধ ডজন বিভিন্ন মাপের টাকার ব্যাগ যেগুলো ওই দম্পতি হাতিয়েছিলেন।
জেরা করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে, আদতে মালদহের ইংরেজ বাজারের একটি প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা তিনি। আসল নাম মৌসুমী খাতুন। সাধারণ মধ্যবিত্ত চাষি পরিবার। বয়স আঠারো ছাড়ানোর আগেই এলাকার এক তরুণের প্রেমে পড়ে বিয়ে করে ফেলেন মৌসুমী। কিন্তু সেই বিয়ে বেশিদিন টেকেনি। ছাড়াছাড়ি হয়ে যায় স্বামীর সঙ্গে। কিন্তু বাড়ির অমতে বিয়ে করায়, বিবাহ বিচ্ছেদের পরও পরিবার ঠাঁই দেয়নি বাড়িতে।
আরও পড়ুন: কী অপরাধ করেছি, ধন্দে পার্ক সার্কাস
সূত্রের খবর, জেরায় ওই তরুণী জানিয়েছেন, রোজগারের আশায় মুম্বই পাড়ি দেন তিনি। সেখানে কয়েকটি পানশালায় নর্তকী হিসাবেও কাজ করেন। কিন্তু সেখানকার পরিবেশ এবং কাজের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না তিনি। চলে আসেন কলকাতায়। এখানেই একটি পানশালায় নর্তকী হিসাবে কাজ করছিলেন তিনি। সেই সময়তেই আলাপ হয় অভিষেকের সঙ্গে। আলাপের কয়েক মাসের মধ্যে বিয়েও করে ফেলেন দু’জনে। মুম্বইতে নর্তকী হিসাবে তাঁর নাম ছিল রোশনি। বিয়ের পর সেই নামেই নিজের পরিচয় দিত মৌসুমী।
বিয়ের আগে থেকেই ছোট খাট পকেট সাফাইয়ের কাজ করেছিল অভিষেক। বিয়ের পর স্ত্রী-র সঙ্গে জুড়ি বেঁধে শুরু হয় হাত সাফাইয়ের কাজ। শহরের যে কোনও মেলা, অভিজাত বিয়ে বাড়ি সর্বত্র পৌঁছে যেত ওই দম্পতি। পোশাকে-চেহারায় কেতা দুরস্ত হওয়ায় কেউ সন্দেহই করত না। ফলে অনায়াসে হাত সাফাই করে সন্দেহের উর্ধে থাকতেন দম্পতি।
আরও পড়ুন: সংরক্ষণের কোপে বহু হেভিওয়েট নেতা, ক্ষোভ তৃণমূলের অন্দরেই, কাল বিজ্ঞপ্তিতে নজর
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, বড়দিনের সময় অ্যালেন পার্কে এক মহিলার ব্যাগ থেকে খোয়া গিয়েছিল নগদ ৪ হাজার টাকা এবং ৪০০ মার্কিন ডলার। জেরায় মৌসুমী ওরফে রোশনী স্বীকার করেছে যে তিনিই সরিয়েছিলেন ওই টাকা। রোশনীকে জেরা করেই ওই মার্কিন ডলার পাওয়া গিয়েছে গাঙ্গুলিবাগানের বাড়ি থেকে। আরও ১১ টা মহিলাদের টাকার ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে শিয়ালদহের একটি হোটেলের ঘর থেকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy