Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ফের সংঘর্ষ, আগুন দমদম সেন্ট্রাল জেলে, উদ্ধার আগ্নেয়াস্ত্র, মৃত্যু আরও বন্দির

শনিবারের সংঘর্ষের সময়ে বিচারাধীন বন্দিরা পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছেন জেল সুপারের দফতর। ফলে বন্দি সংক্রান্ত সমস্ত নথি ভস্মীভূত।

রবিবার দুপুরেও জেলের ওয়ার্ডে আগুন ধরানো হয়। দূর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যাচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

রবিবার দুপুরেও জেলের ওয়ার্ডে আগুন ধরানো হয়। দূর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যাচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২০ ১৮:৪৬
Share: Save:

ফের বন্দি-পুলিশ সংঘর্ষ দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। শনিবার দিনভর সংঘর্ষের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও, রবিবার দুপুরে ফের অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার চত্বর। সূত্রের খবর, ফের বন্দিদের থাকার একটি ভবনে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে বন্দিদের একটি অংশ। ঘটনাস্থলে রয়েছেন এডিজি কারা পীযূষ পাণ্ডে-সহ কারা দফতরের শীর্ষ কর্তারা। পৌঁছেছে পুলিশের বিশাল বাহিনীও।

অন্যদিকে শনিবার দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে পুলিশ-বন্দি সংঘর্ষের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল চার। রবিবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দমদম জেল কর্তৃপক্ষ যাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁদের মধ্যে চারজনকে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেছেন। চার জনেরই দেহ রয়েছে আরজি কর হাসপাতালের মর্গে।বাকিরা এখনও চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জেল কর্তৃপক্ষ শনিবার ২৩ জনকে ভর্তি করেছিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, রবিবার মৃতদের একজনকে অর্ঘ্য চক্রবর্তী বলে শনাক্ত করেছেন মৃতের মা। অর্ঘ্য লেকটাউন থানা এলাকার বাসিন্দা। মাদক পাচারের একটি মামলায় বিচারাধীন ছিলেন তিনি।

অন্য দেহগুলি এখনও কেউ শনাক্ত করেননি। যদিও হাসপাতাল সূত্রে খবর, জেল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক ভাবে যে নাম তাঁদের দিয়েছেন,সেই অনুযায়ী মৃতদের নাম কমলেশ রায় ওরফে মাহাতো, বাদল মণ্ডল এবং শেখ নূর হোসেন। তবে এখনও রাজ্য কারা দফতর বা ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের পক্ষ থেকে শনিবারের সংঘর্ষের ঘটনায় ক’জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে বা কত জন আহত হয়েছেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয় নি।

জেল সুপারের অফিস থেকে উদ্ধার পুড়ে যাওয়া নথি। —নিজস্ব চিত্র।

আরও পড়ুন: হাততালি, ঘণ্টায় দেশ জুড়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, মোদীর ডাকে বিপুল সাড়া

জেল সূত্রে খবর, শনিবারের সংঘর্ষের সময়ে বিচারাধীন বন্দিরা পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছেন জেল সুপারের দফতর। ফলে বন্দি সংক্রান্ত সমস্ত নথি ভস্মীভূত।পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে, বন্দিদের প্যারোল সংক্রান্ত নথি, তাঁদের কী জমা রয়েছে সেই তালিকা, বন্দিদের ফাইল-সহ প্রচুর নথি। পাশাপাশি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বন্দিদের থাকার একাধিক ওয়ার্ড। ফলে জেলের ৩ নম্বর পাঁচিলে মই লাগিয়ে ঠিক কতজন বন্দি পালাতে পেরেছেন তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে কারা কর্মীদের মধ্যে। এক কারা আধিকারিক বলেন,‘‘ কত বন্দি ছিলেন সেই হিসাবটাই যদি না পাওয়া যায় তবে কতজন পালালেন তা বোঝা দুষ্কর।” পুড়ে গিয়েছে জেলারের দফতরও।

অন্য এক কারা কর্মী বলেন, রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ বিক্ষুব্ধ বিচারাধীন বন্দিদের ওয়ার্ডে ঢোকানো সম্ভব হয়। রাত ভর তল্লাশিতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। এর আগে সংঘর্ষের সময় দেখা গিয়েছিল এক বন্দি দু’হাতে দু’টি রিভলবার নিয়ে জেল কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন। পুলিশ দাবি করেছিল একাধিক বন্দির হাতে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে।

জেল কর্মীদের একটি অংশ জানিয়েছেন, শনিবার সংঘর্ষের মধ্যে বন্দিদের একটি অংশ ৫ নম্বর পাঁচিলের কাছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার চেষ্টাও করেছিলেন। বেশ খানিকটা অংশ খোঁড়া পাওয়া গিয়েছে। জেল কর্মীদের সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ওই মারমুখী বন্দিরা জেলের গুদাম থেকে প্রায় ২০ গ্যাস সিলিন্ডার সরিয়ে নিয়ে যান ওয়ার্ডে। ওই গ্যাস সিলিন্ডারে বিস্ফোরণ ঘটিয়েই আগুন লাগানো হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানতে পেরেছেন জেল কর্মীরা।

আরও পড়ুন: লকডাউনে কী কী খোলা, কী কী বন্ধ? দেখে নিন এক নজরে​

শনিবার গভীর রাত পর্যন্ত তল্লাশির পর রবিবার সকাল থেকেই পরিস্থিতি থমথমে ছিল জেলে। সূ্ত্রের খবর, রাতে বড় পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল জেলে। রাতেও এক দফা ইট ছোড়েন বন্দিরা। সকাল থেকে তাঁরা অনশনে বসেন। সকালেই জেলে পৌঁছন এডিজি কারা এবং ব্যারাকপুর পুলিশের কমিশনার মনোজ বর্মা। তল্লাশিতে আরও একটি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া যায়। পৌঁছন সিআইডি-র তদন্তকারীরাও।

দুপুরের দিক থেকে ফের পরিস্থিতির অবনতি হয়। ফের ওয়ার্ড থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়া হয়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy