সনাতন রায়চৌধুরী
কুটনীতিক হিসেবে ২০১৮ সালে ব্রিকস, ২০১৩ সালে টোকিওয় উপস্থিতি ঘিরে জল্পনার পর এ বার কি বাংলাদেশ-যোগ? ভুয়ো সিবিআই কৌঁসুলি সনাতন রায়চৌধুরীকে ঘিরে তদন্ত যত এগোচ্ছে তার সঙ্গে ততই যেন গভীর হচ্ছে আন্তর্জাতিক যোগ। এর মধ্যে সনাতনের বিপুল আয়ের উৎস সম্পর্কে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ। সব দিক খতিয়ে দেখতে বেশ কয়েকটি সরকারি দফতরের পাশাপাশি বিজেপিকেও চিঠি দিচ্ছে পুলিশ।
বালিগঞ্জের ম্যান্ডেভিল গার্ডেন্সের একটি দশ কোটি টাকার সম্পত্তি হাতাতে গিয়ে পুলিশের জালে ধরা পড়ে সনাতন। জানা যায়, সিবিআই লেখা স্টিকার লাগানো গাড়িতে চড়ে ঘোরা এই ব্যক্তি নিজেকে কখনও সিবিআইয়ের কৌঁসুলি, কখনও রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি, কখনও আবার কলকাতা হাইকোর্টের স্ট্যান্ডিং কাউন্সেল বলে পরিচয় দিত। যদিও জল্পনা উড়িয়ে সিবিআই জানিয়ে দিয়েছে, সনাতন তাদের আইনজীবী নয়। বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদের চিরকুট সনাতনের কাছে পাওয়া গেলেও দল তার সঙ্গে যোগ এড়িয়ে গিয়েছে। এ কথা বিজেপির তরফে লিখিত ভাবে জানানো হচ্ছে বলে খবর।
এর মধ্যে সামনে এসেছে সনাতনের বাংলাদেশ যোগ! সোহেল খান নামে সে দেশের এক নাগরিক বাংলাদেশ পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে খবর। অভিযোগে জানা গিয়েছে, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তৈরি করেছিল সনাতন। ওই সংস্থার সদস্যপদ বাবদ এক হাজার টাকা করে তোলা হয়েছিল। অনুদান হিসেবে এসেছিল দু’লক্ষ, পাঁচ লক্ষ টাকা। এই ভাবে সে বিপুল টাকা তুলেছে বলে পুলিশের অনুমান। আশ্চর্যের বিষয় হল, সেই সংস্থা খোলা হয়েছিল ব্রিটেনের ঠিকানায়! তদন্তে উঠে আসছে বাংলাদেশে সনাতনের ওই সংস্থার হয়ে কাজ করা সংগ্রাম মিত্র বলে এক ব্যক্তির নাম। সে দেশের তদন্তকারীদের অনুমান, আসলে ওই ব্যক্তির নাম বিশ্বজিৎ সাঁতরা। বিশ্বজিৎ নামের এই ব্যক্তি কে, সে নিয়ে তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশও। কলকাতা পুলিশের এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘সনাতন যে আইনজীবী তা নিয়ে সংশয় নেই। আইনজীবী হওয়ায় আইনের মারপ্যাঁচ সে ভাল করেই জানত। সে-ই পথেই প্রতারণার ফাঁদ বিস্তৃত করেছিল।’’
এর মধ্যেই বি বা দী বাগে সনাতনের আরও একটি অফিসের কথা সামনে এসেছে। সেখানেও হানা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। সনাতনের বেশ কয়েকটি ইমেল আইডি ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পুলিশ নজরদারি চালাচ্ছে। ওই ইমেল আইডি-র মাধ্যমে সনাতন আন্তর্জাতিক স্তরে যোগাযোগ চালাত বলে অনুমান। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সনাতনের সঙ্গে ভুয়ো প্রতিষেধক কাণ্ডে ধৃত দেবাঞ্জনের যোগ ছিল বলেও তথ্য উঠে আসছে। সেই সূত্রের দাবি, কলকাতা পুরসভায় চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বেশ কয়েক জনের থেকে টাকা তুলেছিল সনাতন। এ ব্যাপারে সে দেবাঞ্জনের সঙ্গে যোগ রেখে কাজ করত বলে অনুমান। বেশ কিছু ভুয়ো নিয়োগপত্র সে দেবাঞ্জনকে সামনে রেখে দিয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও এ ব্যাপারে লালবাজারের কোনও কর্তা মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy