প্রিয়াংশী সাহা
লকডাউনের শহরে একাধিক হাসপাতালে ঘুরেও চিকিৎসা জোটেনি বছর দুয়েকের শিশুটির। বারাসত সংলগ্ন বামনগাছির বাসিন্দা বিশ্বজিৎ ও পূজা সাহার অভিযোগ, চার দিন ভোগান্তির পরে রবিবার সন্ধ্যায় কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মেয়ে প্রিয়াংশীর।
পরিবার সূত্রের খবর, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে পেটের টিউমারের অস্ত্রোপচার হয় প্রিয়াংশীর। কিছু দিন পরেই পেটের ক্যানসার ধরা পড়ে। মাস তিনেক আগে তাকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কেমোথেরাপি দেওয়া হয়। তার পর থেকে সুস্থই ছিল প্রিয়াংশী। সোমবার তার বাবা বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘‘চার দিন আগে মেয়ে খাওয়া বন্ধ করে দেয়। পেট ফুলে যায়। গত শুক্রবার মেডিক্যাল কলেজে গেলে বলা হয়, সেটি কোভিড হাসপাতাল হওয়ায় নতুন করে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না।’’ নিরুপায় বিশ্বজিৎ এর পরে বারাসত হাসপাতালে পৌঁছন। অভিযোগ, দু’বছরের ক্যানসার রোগীর চিকিৎসা করার পরিকাঠামো নেই জানিয়ে সেখান থেকে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। শুক্রবারই প্রিয়াংশীকে নিয়ে এন আর এসে পৌঁছলে তাকে ভর্তি নিয়ে শ্বেত ও লোহিত রক্তকণিকা দেওয়া হয় বলে পরিবার সূত্রের খবর। শনিবার সকালে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরিবার সূত্রের খবর, রবিবার প্রিয়াংশীর অবস্থা আরও খারাপ হয়। বিভিন্ন বেসরকারি নার্সিংহোম ও বারাসত ক্যানসার রিসার্চ সেন্টার থেকে পরিকাঠামোর অভাবের কথা জানানো হয় বলে ওই দম্পতির দাবি। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় দত্তপুকুর থানার পুলিশ এসে ফের বারাসত হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে। সেখানে জানানো হয়, কিছু ক্ষণ আগেই মৃত্যু হয়েছে প্রিয়াংশীর।
মেয়ের মৃত্যু নিয়ে পুলিশ বা স্বাস্থ্য দফতরে কোনও অভিযোগ করেনি সাহা পরিবার। পেশায় ভ্যানচালক বিশ্বজিৎ সোমবার বলেন, “কাকে দায়ী করব? লকডাউনে চিকিৎসা না পেয়েই মৃত্যু হল আমার মেয়ের।’’ মা পূজা শুধু বলেন, ‘‘যে কোনও হাসপাতালে কেমো পেলেই হয়তো মেয়েটা বেঁচে যেত।’’
বারাসত হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল এ দিন বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে মেয়েটিকে বহির্বিভাগে আনা হয়েছিল। ওষুধ দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।’’ বারাসত পুলিশ জেলার সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটি দুঃখজনক। বাসিন্দাদের বলছি, এমন সমস্যায় দেরি না করে আমাদের হেল্পলাইনে কিংবা স্থানীয় থানায় জানান। সমাধানের চেষ্টা করব।’’
আরও পড়ুন: জীবনদায়ী ওষুধ পৌঁছে দিল পুলিশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy