প্রতীকী ছবি।
সেই ২০২০ সালের মার্চ মাসের পরে এই প্রথম শহর কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে নামল। গত ১০ এপ্রিল, রবিবার,
কলকাতা পুরসভা এলাকায় এক জনও করোনায় আক্রান্ত হননি। পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
তবে শহরে করোনা রোগীর সংখ্যা শূন্যে নামলেও চিকিৎসকদের মতে, এতে উচ্ছ্বাসের কোনও কারণ নেই। তাঁরা জানাচ্ছেন, বিদেশে এখনও করোনার দাপট রয়েছে। তাই সংক্রমিতের সংখ্যা এই মুহূর্তে শূন্য হলেও তা যে ফের বাড়বে না, এমন কথা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। সেই কারণে করোনা-বিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
গত ফেব্রুয়ারির শেষ থেকেই শহরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ধীরে ধীরে কমেছে। পুরসভার তথ্য বলছে, মার্চের পর থেকে বেশির ভাগ বরো এলাকাতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল শূন্য। কোনও কোনও বরোয় হয়তো দু’-তিন জন করে সংক্রমিত
হয়েছেন। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চের শেষ থেকে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা আট-দশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল।
অথচ, গত ডিসেম্বর-জানুয়ারিতেই শহরে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের জেরে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছিল। ডিসেম্বরেই এক দিন আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজারে পৌঁছে যায়। পুরকর্তাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল যে কয়েকটি এলাকা, তার মধ্যে প্রধান দক্ষিণ কলকাতার দশ নম্বর বরো। ওই এলাকায় সে সময়ে বহু আবাসনের বাসিন্দারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে দশের পাশাপাশি সাত, আট, নয় ও বারো নম্বর বরো-ও প্রশাসনের চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছিল।
দশ নম্বর বরোর অধীনে টালিগঞ্জ, আলিপুর, নিউ আলিপুর, যোধপুর পার্ক ও যোধপুর কলোনিতে প্রতিদিন সংক্রমণ বেড়েছিল লাফিয়ে
লাফিয়ে। আবার করোনার লক্ষণ থাকা সত্ত্বেও অনেকে পরীক্ষা করাচ্ছিলেন না বা র্যাপিড পরীক্ষার তথ্য পুরসভাকে জানাচ্ছিলেন না বলে অভিযোগ। তখন বাধ্য হয়েই ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ আবাসন কমিটি ও কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেন। দশ নম্বর বরো এলাকার একটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘কোভিডের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঢেউয়ের সময়ে ২৪ ঘণ্টাই আমাদের প্রবল ব্যস্ততার মধ্যে কেটেছে। রোজই অসংখ্য করোনা আক্রান্তের ফোন আসত। গত এক মাসের বেশি সময় ধরে করোনা কমায় অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছি।’’
করোনার সংক্রমণ কমলেও বিপদ পুরোপুরি কেটে গিয়েছে ভাবলে ভুল হবে, এমনটাই মনে করছেন পুরসভার চিকিৎসকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, রাজ্যে চতুর্থ ঢেউয়ের আছড়ে পড়ার আশঙ্কার কথা আগেই
জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। তাই সংক্রমিতের সংখ্যা শূন্য হতেই মাস্ক ছাড়া বাড়ির বাইরে বেরোনো উচিত হবে না। তাঁদের মতে, করোনা ফিরে আসতেই পারে। তাই বিধি মানার ক্ষেত্রে ঢিলেমি এসে গেলে বিপদ আসতেও দেরি হবে না।
করোনা যে পুরোপুরি বিদায় নিয়েছে, সে কথা মানতে নারাজ বক্ষরোগের চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘আরও অন্তত এক মাস দেখতে হবে, আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যই থাকে কি না। করোনা কমলেও করোনা-বিধি কিন্তু মেনে চলতে হবে সাধারণ মানুষকে।’’ আর এক বক্ষরোগ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগীর কথায়, ‘‘সংক্রমিতের সংখ্যা যে এখন শূন্য, সেটা আনন্দের খবর হলেও উচ্ছ্বাস প্রকাশের কোনও কারণ নেই। মাস্ক পরে বেরোনো, ভিড় যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা এবং স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করা— এগুলো আমাদের সবাইকেই মেনে চলতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy