Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ফুটপাত পথচারীদের জন্য। অন্তত আইন তো তা-ই বলে। তা হলে রাস্তায় নেমে কেন হাঁটতে হয় পথচারীদের? ফুটপাতে ওরা কারা? কাদের দখলে ফুটপাত? কেন চুপ পুলিশ, পুরসভা? ফুটপাতের ‘অধিকার’ থেকে কেন বঞ্চিত সাধারণ মানুষ?
dumdum

Dum Dum: হারানো পথের গোলকধাঁধা থেকে মুক্তি কবে? উত্তর খুঁজছে দমদম

পুর প্রশাসনের অবশ্য দাবি, দমদম রোড এবং যশোর রোডের সংযোগকারী দমদম পুর এলাকার সব রাস্তার অবস্থা এমনটা নয়।

দখল: ফুটপাতে পর পর রয়েছে দোকান। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে হাঁটছেন পথচারীরা। যশোর রোডে।

দখল: ফুটপাতে পর পর রয়েছে দোকান। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমে হাঁটছেন পথচারীরা। যশোর রোডে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

কাজল গুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২ ০৭:০১
Share: Save:

গোরাবাজার থেকে দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের দিকে যাওয়ার সময়ে সরু রাস্তায় বাস এবং একটি ছোট মালবাহী ভ্যান মুখোমুখি দাঁড়িয়ে পড়েছে। পাশ কাটিয়ে এগোনোর জায়গাটুকু নেই। কোনওক্রমে আগুপিছু করে দু’টি গাড়ি বেরোনোর পরিস্থিতি তৈরি করতে লেগে গেল বেশ কিছুটা সময়। তত ক্ষণে ওই সরু রাস্তায় শুরু হয়ে গিয়েছে যানজট।

বিমানবন্দরের এক নম্বর গেটের দিক থেকে পি কে গুহ রোডে ঢোকার সময়ে দেখা গেল, রাস্তার দু’ধারে বসেছে বাজার। আর সেই সঙ্কীর্ণ পরিসরেই একটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখার জন্য তৈরি হয়েছে যানজট।

দমদম পুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই দুই খণ্ডচিত্র ব্যতিক্রম নয়, বরং কার্যত নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এক দিকে সেখানে পর্যাপ্ত রাস্তার অভাব রয়েছে। আবার যেটুকু
রাস্তা রয়েছে, তা-ও চলে যাচ্ছে দখলদারদের কবলে। স্বল্প পরিসর রাস্তার ধারেও রয়েছে দোকান, বসছে বাজার, পার্ক করা হচ্ছে গাড়িও। আবর্জনা ফেলতে বা ইমারতি দ্রব্য ফেলার জন্যও ভরসা ওই রাস্তাই! আবার গত কয়েক বছরে সেখানে গাড়ির চাপ বেড়েছে কয়েক গুণ। এর জেরে উধাও হয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের হাঁটাচলার ফুটপাত। আর প্রতিনিয়ত এর ফল ভুগছেন তাঁরাই। পি কে গুহ রোড, গোরাবাজার, দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন রোড-সহ দমদম পুরসভা এলাকার মূল রাস্তাগুলির এই চেনা ভোগান্তির ছবি থেকে মুক্তির দাবি তুলছেন বাসিন্দারা।
এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন পুরকর্তারা। তবে তাঁদের দাবি, সর্বত্র সমস্যা নেই। কিছু অংশেই তা রয়েছে। পুরসভার আরও দাবি, নতুন পুর বোর্ড সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যার সুষ্ঠু মীমাংসার পথে হাঁটতে চলেছে।

এই প্রতিশ্রুতিকে অবশ্য সোনার পাথরবাটির মতোই দেখছেন পুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, লোকবসতি বেড়েছে, বেড়েছে গাড়ির সংখ্যা। তার মধ্যে অটো-টোটোর সংখ্যা কার্যত লাগামছাড়া। এ দিকে দীর্ঘদিন রাস্তার সম্প্রসারণ হয়নি। উল্টে জবরদখলের জেরে সঙ্কুচিত হয়েছে রাস্তা। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, এতগুলো বিষয় নিয়ে প্রশাসন আদৌ কি নাড়াচাড়া করবে?
অমিত চট্টোপাধ্যায় নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার মতে, লোকসংখ্যা বাড়ছে। স্বাভাবিক ভাবেই চাহিদা মেনে দোকানবাজার, গাড়ির সংখ্যাও বাড়ছে এলাকায়। কিন্তু রাস্তা তো বাড়বে না। তাই বর্তমানে রাস্তার জন্য যতটুকু বরাদ্দ আছে, সেটাকে অন্তত রক্ষা করার দিকে নজর দেওয়া উচিত পুরসভার। সেটি না করার জন্যই পথচারীদের সমস্যা বাড়ছে। আর এক বাসিন্দা জীবন দাস বলছেন, ‘‘রাস্তা অপরিসর। তার মধ্যেই দু’দিকে গাড়ি চলছে। বিশেষ বিশেষ দিনে যানজটের দুর্ভোগ আরও বাড়ে।’’

পুর প্রশাসনের অবশ্য দাবি, দমদম রোড এবং যশোর রোডের সংযোগকারী দমদম পুর এলাকার সব রাস্তার অবস্থা এমনটা নয়। কয়েকটি ওয়ার্ড এলাকায় ওই সমস্যা সীমাবদ্ধ। দমদম পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বরুণ নট্টেরও দাবি, ‘‘সর্বত্র সমস্যা নেই। ইতিমধ্যে পি কে গুহ রোডে একটি জায়গায় পথচারীদের চলাচলের জন্য ফুটপাতে জায়গা তৈরি করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান পরিষদ গঠিত হওয়ার পরে যত্রতত্র পার্কিং, রাস্তার উপরে বাজার বসা জাতীয় সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ করা হবে। এর ফলে যানবাহন এবং পথচারীদের চলার পথ আরও সুগম হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

dumdum Pavement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy