বিকল্প: ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের এই মেডিয়ান স্ট্রিপ অক্ষত রাখতে কমানো হবে ফুটপাত। নিজস্ব চিত্র
টালা সেতু ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত হতেই শ্যামবাজার সংলগ্ন ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ের মেডিয়ান স্ট্রিপ ভেঙে দেওয়ার পরিকল্পনা করে কলকাতা পুলিশ। প্রায় ৫৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা ওই মেডিয়ান স্ট্রিপ ভেঙে ফেলা কতটা যুক্তিযুক্ত, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে কলকাতা পুরসভায়। কারণ, ওই মেডিয়ান স্ট্রিপ পুর প্রশাসনই তৈরি করেছিল। এবং তা হয়েছিল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই। এক দিকে কলকাতা পুলিশ চায় মেডিয়ান স্ট্রিপ ভেঙে ফেলতে। অন্য দিকে, এই সিদ্ধান্তে নারাজ পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা। স্বভাবতই কলকাতা পুলিশ ও পুরসভার মধ্যে এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। শেষমেশ মেয়র ফিরহাদ হাকিম পুলিশের পদস্থ কর্তাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। পরে তিনি জানিয়ে দেন, মেডিয়ান স্ট্রিপ ভাঙা হবে না। বিকল্প কোনও পথ বার করতে হবে।
টালা সেতু ভাঙার সিদ্ধান্ত পাকা হতেই কলকাতা পুলিশ শ্যামবাজার এলাকার কোন কোন রাস্তা দিয়ে যানবাহনের পথ সুগম হতে পারে, তার রূপরেখা তৈরি করে। তখনই পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ সিদ্ধান্ত নেয়, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ থেকে শ্যামবাজারের পাঁচ মাথার মোড়ের দিকে যাওয়ার পথে যে মেডিয়ান স্ট্রিপ রয়েছে, তা ভেঙে রাস্তা প্রশস্ত করা হবে। পুলিশের তরফে জানানো হয়, মেডিয়ান স্ট্রিপ ভেঙে দিলে রাস্তাটি ব্যস্ত সময়ে ৬০:৪০ অনুপাতে ব্যবহার করা যাবে। অর্থাৎ, সকালে ধর্মতলামুখী গাড়ি রাস্তার ৬০ শতাংশ জায়গা দিয়ে চলবে। বাকি ৪০ শতাংশ দিয়ে শ্যামবাজারমুখী গাড়ি যাবে। যে হেতু ওই রাস্তা কলকাতা পুরসভার অধীন, তাই কলকাতা পুলিশ পুরসভার কমিশনারকে চিঠি দিয়ে বলে, ওই মেডিয়ান স্ট্রিপ ভেঙে দিন। সেই চিঠি পেয়েই টনক নড়ে পুরসভার। আসলে শহরে মেডিয়ান স্ট্রিপ গড়ার পরিকল্পনা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর। বছর চারেক আগে ‘গ্রিন সিটি মিশন’ প্রকল্পের প্রায় চার কোটি টাকা খরচ করে শহরের একাধিক রাস্তায় মেডিয়ান স্ট্রিপ গড়ার কাজ শুরু হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প ভেঙে দেওয়া নিয়ে তাই চিন্তায় পড়েন পুর ইঞ্জিনিয়ারেরা। সিদ্ধান্ত হয়, পুরসভার মেয়র পরিষদের বৈঠকে তোলা হবে পুরো বিষয়টি। তার আগেই মেয়রকে জানানো হয় সব কিছু। মেয়র পরিষদে বিষয়টি আর তোলা হয়নি।
মেয়র নিজে পুর কমিশনার এবং ইঞ্জিনিয়ারদের ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। তখনই তাঁকে ইঞ্জিনিয়ারদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মেডিয়ান স্ট্রিপ মাত্র ফুট দুয়েক চওড়া। তা ভেঙে ফেললে দু’ফুটের বেশি পথ বেরোবে না। তার চেয়ে সংলগ্ন এলাকার ফুটপাত ছোট করলে রাস্তার পরিমাণ বাড়বে এবং মেডিয়ান স্ট্রিপও অক্ষত থাকবে। সেই আলোচনার পরেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম রাজ্য সরকার এবং পুলিশের উচ্চমহলে কথা বলেন। পরে জানিয়ে দেন, মেডিয়ান স্ট্রিপ ভাঙার দরকার নেই। এই এলাকার কয়েকটি রাস্তার ফুটপাত ছোট করলেই হবে।
আরও পড়ুন: পাঁচ দিন বাবার মৃতদেহ আগলে ছেলে, বেহালা মনে করাচ্ছে রবিনসন স্ট্রিট
পুরসভা সূত্রের খবর, তার পরেই শ্যামবাজার এলাকার জে এম সেনগুপ্ত রোড, গিরিশমোহন অ্যাভিনিউ, ক্ষীরোদ বিদ্যাবিনোদ রোড-সহ একাধিক রাস্তার ফুটপাত ভেঙে ছোট করা হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব শীঘ্রই সেই কাজ শুরু করবে পুরসভা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy