Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Police Sergeant Attacked in Nabanna Abhijan

‘প্রথম ইটটাই চোখে লাগল আমার, সঙ্গে সঙ্গে রক্ত’! বর্ণনা সার্জেন্ট দেবাশিসের, পাঠানো হচ্ছে হায়দরাবাদে

শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেবাশিস চক্রবর্তী। বুধবার চোখে ব্যান্ডেজ নিয়ে তিনি হামলার মুহূর্ত বর্ণনা করেছেন। ভবিষ্যতে বাঁ চোখে দেখতে পাবেন কি না, তা নিয়েও শঙ্কিত তিনি।

(বাঁ দিকে) নবান্ন অভিযানের সময় আক্রান্ত পুলিশ সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। পরে হাসপাতালে (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) নবান্ন অভিযানের সময় আক্রান্ত পুলিশ সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। পরে হাসপাতালে (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২৪ ১৭:১৮
Share: Save:

‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকা নবান্ন অভিযানে স্ট্র্যান্ড রোডে ডিউটি পড়েছিল তাঁর। পুলিশের গাড়িতে থাকাকালীনই এ ভাবে আক্রান্ত হতে হবে, ভাবেননি কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে চোখ হারাতে বসেছেন তিনি। বাঁ চোখে আর দেখতে পাবেন কি না, সংশয় রয়েছে। হাসপাতাল থেকে চোখে ব্যান্ডেজ নিয়েই মঙ্গলবারের সেই ভয়াবহ মুহূর্ত বর্ণনা করলেন তিনি। জানালেন, বাঁ চোখে তিনি এখন দেখতেই পাচ্ছেন না। ভবিষ্যতে কী হবে, জানেন না। রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে চিকিৎসার জন্য হায়দরাবাদে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন দেবাশিস। বুধবার চোখে ব্যান্ডেজ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আমি মঙ্গলবার নবান্ন অভিযানে কর্তব্যরত ছিলাম। আমাদের কাছে নির্দেশ আসে, স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে যেতে হবে। গাড়িতে রেড রোড থেকে স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে যাচ্ছিলাম। আমরা গাড়িতে অনেকে ছিলাম। আচমকা একদল বিক্ষোভকারী গাড়ি লক্ষ্য করে অতর্কিতে ইট ছুড়তে শুরু করে।’’

ঘটনার মুহূর্ত বর্ণনা করতে করতে দেবাশিস আরও বলেন, ‘‘আমাদের গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ফেটে গিয়েছিল ইটের আঘাতে। তার পর প্রথম ইটটাই আমার চোখে এসে লাগল! তার পরেও ইটবৃষ্টি হয় গাড়িতে। কোনও রকমে গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন চালক। আমার চোখ থেকে অঝোরে রক্ত পড়ছিল। আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন বাঁ চোখে দেখতে পাচ্ছি না। ভবিষ্যতে দেখতে পাব কি না, জানি না।’’

বছর ৩৭-এর দেবাশিস কলকাতা পুলিশের পূর্ব বিভাগের সাইবার সেলের ইনচার্জ। তাঁর স্ত্রী-ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যুক্ত। বাড়িতে পাঁচ বছর বয়সি সন্তান রয়েছে দেবাশিসের। তাঁর চোখের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কিত পরিবারও।

দেবাশিসের সঙ্গে ওই গাড়িতে থাকা আরও তিন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদেরও চিকিৎসা চলছে। সার্জেন্ট অতনু রায়চৌধুরী এবং ডেভিড টপনোয় ছাড়াও আহত হয়েছেন হোমগার্ড দেবাশিস কুন্ডু। পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাশিসের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, বাঁ চোখের আঘাত অত্যন্ত গুরুতর। এমনকি ওই চোখে দৃষ্টি হারানোর আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে তাঁর।

মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান চলাকালীন অনেক পুলিশকর্মী আহত হন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয় অনেক জায়গায়। এমনকি, পুলিশকে মাটিতে ফেলে লাঠিপেটা করা হয়, লাথিও মারা হয়। ইটের আঘাতে মাথা ফেটে যায় বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মীর। মঙ্গলবার এডিজি (দক্ষিবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার জানান, নবান্ন অভিযানে কর্তব্য পালন করতে গিয়ে মোট ১৫ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া অনেককেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দেবাশিস ছাড়া এই মুহূ্র্তে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন কনস্টেবল নবকুমার মণ্ডল (মাথায় আঘাত), সার্জেন্ট সৌরভ সাহা (চোখে আঘাত), আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কনস্টেবল উজ্জ্বল দে সরকার (মাথা এবং চোখে আঘাত) এবং হোমগার্ড ও চালক দেবাশিস কুন্ডু (চোখে আঘাত)।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy