Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Firecrackers

Crackers: সংরক্ষণের খরচ গুনতে নারাজ ব্যবসায়ীরা, বাজি মজুত কি শহরেই

কালীপুজোর আগের দিন পর্যন্ত শহরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোগ্রাম বাজি উদ্ধার হয়েছে। কালীপুজো এবং দীপাবলির দিন বাজি উদ্ধার করা হয়েছে যথাক্রমে ১৬৮৩.৮ ও ২০৮.৬ কিলোগ্রাম।

ফাইল চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২১ ০৮:১৩
Share: Save:

কিছু ফাটল, কিছু বাজেয়াপ্তও হল। কিন্তু পুলিশেরই হিসাব বলছে, তার চেয়েও বেশি রয়ে গেল অধরা। বিস্ফোরক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সেই বাজিই এ বার জনবসতিতে মজুত রেখে দেওয়া হবে না তো? ঘটে যাবে না তো বড় বিপদ? আপাতত বাজি নিয়ে এই চিন্তাতেই ঘুম উড়েছে পুলিশের। আশঙ্কা বাড়িয়ে বাজি ব্যবসায়ীদের বড় অংশই জানাচ্ছেন, বাজি রাখার সমস্ত ‘সেফ হাউস’ই শহরের বাইরে। সেখানে বাজি রাখতে গেলে যে খরচ হয়, বহু ব্যবসায়ীই তা করতে চাইছেন না। তাঁদের যুক্তি, যা বিক্রি করে আয় হয়নি, তার জন্য খরচ করবে কে?

পুলিশ জানিয়েছে, কালীপুজোর আগের দিন পর্যন্ত শহরে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোগ্রাম বাজি উদ্ধার হয়েছে। কালীপুজো এবং দীপাবলির দিন বাজি উদ্ধার করা হয়েছে যথাক্রমে ১৬৮৩.৮ ও ২০৮.৬ কিলোগ্রাম। ছটপুজোতেও ২৭.৭ কিলোগ্রাম বাজি ধরেছে পুলিশ। সব মিলিয়ে চলতি বছরে বাজি উদ্ধারের পরিমাণ প্রায় সাড়ে সাত হাজার কিলোগ্রাম ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ বাজি পুলিশের তরফেই নিষ্ক্রিয় করা হবে। প্রতি বারই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গে পরামর্শ করে শহরের বাইরে ফাঁকা জায়গায় বাজি নিষ্ক্রিয় করা হয়। কিন্তু বিক্রি না হওয়া বাজির ব্যবস্থা ব্যবসায়ীদেরই করতে হয়।

বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্তেরা জানাচ্ছেন, বিস্ফোরক আইনে বাজি রাখার এই ধরনের সেফ হাউসগুলিকে ‘ম্যাগাজ়িন’ বলা হয়। কয়েক বিঘা ফাঁকা জায়গায় ৪০০ থেকে ৫০০ মিটার লম্বা এক-একটি ঘর বানিয়ে তৈরি হয় ম্যাগাজ়িন। ঘরের চার দিকে জলাশয় তৈরি করতে হয়। ঘরগুলি হতে হয় তাপ নিরোধক। ছাদের নীচে কয়েক স্তর মোটা শেড দিয়ে তবেই বাজি রাখতে হয়। শর্ট সার্কিট বা অন্য বিপদ এড়াতে ঘরে আলোর ব্যবস্থা রাখা হয় না। সেখানে মোমবাতি নিয়ে প্রবেশও নিষিদ্ধ। বাজি নিয়ে গিয়ে সেখানে যেমন খুশি ভাবে ফেলে আসাও যায় না। ঘষা লেগে বিপদ এড়াতে বাক্সের মধ্যে ভরে নির্দিষ্ট দূরত্বে রাখতে হয় বাজি।

দীর্ঘদিন বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত এক ব্যবসায়ীর মন্তব্য, ‘‘এমন ম্যাগাজ়িন রয়েছে তারকেশ্বর এবং উলুবেড়িয়ার কয়েকটি জায়গায়। সেখানে বাজি রাখতে এক বছরের জন্য কার্টনপিছু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাগে। তার উপরে জ্বালানির দাম যে হারে বেড়েছে, সেখানে বাজি নিয়ে যেতেই প্রচুর টাকা খরচ হবে! আইনি লড়াইয়ে যে জিনিস বিক্রি করাই যায়নি, তা সংরক্ষণ করতে কেউ এত টাকা খরচ করবে বলে মনে হয়?’’ আর এক ব্যবসায়ী বললেন, ‘‘এত দিন টালা, বেহালা, কালিকাপুর, বিজয়গড় এবং শহিদ মিনারে সরকারি বাজি বাজার বসত। এখানকার ব্যবসায়ীদের একটা সচেতনতা রয়েছে। কিন্তু শহরতলির বহু জায়গায় গিয়ে দেখেছি, খাটের নীচে বাজি রেখে লোক ঘুমোচ্ছেন, সেখানে চলছে রান্নাও!’’

তা হলে উপায়? রাজ্যের বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি সূত্রের খবর, সম্প্রতি কয়েকটি এলাকার বাজি ব্যবসায়ীরা এ নিয়ে পরামর্শ নিতে রাজ্যের এক
মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। বাজির লাইসেন্স নবীকরণ করে দেওয়ার জন্যও তাঁরা আবেদন জানান। সবুজ বাজি তৈরির কাজ শিখতে চেন্নাইয়ে যাওয়ার জন্য লাইসেন্সের প্রয়োজনের কথা মুখে বলা হলেও আদতে ওই লাইসেন্সের জোরেই মজুত বাজি সেফ হাউসের পরিবর্তে ভিন্‌ রাজ্যে নিয়ে গিয়ে বেচে দেওয়ার ফিকির খোঁজা হচ্ছে বলে অভিযোগ। বাজি সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের কর্তা মন্তব্য করতে না চাইলেও জানান, মজুত বাজি নিয়ম মেনে সরিয়ে ফেলার জন্য কিছু দিন সময় দেওয়া হচ্ছে। অন্যথায় দ্রুত কড়া পদক্ষেপ করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Firecrackers Illegal Cracker
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy