অঘটন: আগুনে সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে একটি বাড়ির দোতলার সব ঘর। শুক্রবার, নিমতলায়। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
দোতলা বাড়ির নীচে দু’টি অফিস। একটি কাঠের গুদাম। এ ছাড়াও একতলার ছ’টি ঘরে এবং দোতলার ন’টি ঘরে কয়েকটি পরিবার থাকে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আগুনে ভস্মীভূত হয়ে গেল ওই বাড়ির দোতলার প্রতিটি ঘর। আগুন থেকে বাঁচতে নীচে লাফ দিয়ে জখম হয়েছেন এক প্রবীণ দম্পতি। ঘটনাটি ঘটেছে জোড়াবাগান থানা এলাকার নিমতলা ঘাট স্ট্রিটে। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন প্রায় তিন ঘণ্টায় আগুন নেভায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, বাড়ির সব বাসিন্দাই ভাড়াটে। মালিক থাকেন অন্যত্র। বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ সেখানে আগুন লাগে। সূত্রের খবর, একতলার ঘরগুলির খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। আগুন থেকে বাঁচতে দোতলার এক বাসিন্দা দম্পতি নীচে ঝাঁপ দেন। আহত হন দু’জন, ৭০ বছরের বৃদ্ধ রামলাল দাস এবং তাঁর স্ত্রী, বছর তেষট্টির বিভা দাস। বৃদ্ধের দু’টি পায়ে আঘাত লেগেছে। বিভার ডান পা ভেঙেছে। দম্পতির ছেলে, গাড়িচালক মনোজিৎ দাস সেই সময়ে গাড়ি নিয়ে খড়্গপুরে গিয়েছিলেন। রাত দেড়টা নাগাদ তিনি বাড়িতে আগুন লাগার খবর পান। এ দিন মনোজিৎ বলেন, ‘‘সিঁড়িতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছিল। তাই বাবা-মা নেমে আসতে পারছিলেন না। বাঁচার জন্য নীচে লাফ দেন। প্রতিবেশীরাই বাবা-মাকে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসার পরে দু’জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’’
ওই এলাকায় বাড়িঘর গায়ে-গায়ে। তাই মধ্য রাতের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢেকে গিয়েছিল। আগুন লাগার আঁচ পেয়েই দোতলার বাসিন্দারা তড়িঘড়ি বেরিয়ে আসেন। আশপাশের বাসিন্দারাও বেরিয়ে আসেন রাস্তায়।
বাসিন্দাদের একাংশের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লেগেছে। দোতলার বাসিন্দা বিজয়কুমার যাদব বলেন, ‘‘পোড়া গন্ধ নাকে আসছিল। আমাদের ঘরেই প্রথম আগুন লাগে। সেখান থেকে দোতলায় ছড়িয়ে পড়ে।’’ আর এক বাসিন্দা ঝর্না সাহা কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘‘সব ঘর শেষ হয়ে গিয়েছে। কিছু আনতে পারিনি। এক কাপড়ে বেরিয়ে আসতে পেরেছি। এ বার আমাদের কী হবে?’’
রাতেই ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় ২১ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি মীরা হাজরা। শুক্রবার ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী শশী পাঁজা। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে শশী বলেন, ‘‘গৃহহীন পরিবারগুলিকে জোড়াবাগান কমিউনিটি হলে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।’’
ওই এলাকায় দুর্গাপুজো করে কাঠগোলা পল্লিবাসীবৃন্দ পুজো কমিটি। পুজোর কারণে আলো দিয়ে সাজানো হয়েছিল এলাকা। এই ঘটনায় সব খুলে নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছেন কমিটির এক সদস্য। পুলিশ সূত্রের খবর, আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy