অঘটন: পোড়া ঝুপড়ির ধ্বংসস্তূপে দমকলকর্মীদের সঙ্গে বাসিন্দারা। সোমবার, সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্ক সংলগ্ন এলাকায়। ছবি: সুমন বল্লভ
সল্টলেকের বনবিতান (সেন্ট্রাল পার্ক) সংলগ্ন একটি বস্তিতে আগুন লেগে ভস্মীভূত হয়ে গেল প্রায় ৮০টি ঝুপড়ি ঘর। সোমবার সকালে আগুন লাগার খবর পেয়েই দফায় দফায় দমকলের দশটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই। আগুন কী ভাবে লেগেছিল, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। এই ঘটনার তদন্ত হবে বলে জানিয়েছেন বিদায়ী দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ দিন সকাল আটটা নাগাদ বনবিতানের উল্টো দিকে একটি পাঁচিল সংলগ্ন ওই বস্তিতে আগুন লাগে। সেই সময়ে বস্তিবাসীদের অনেকেই বেরিয়ে পড়েছিলেন নিজেদের কাজকর্মে। আবার একটি বড় অংশ ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে গিয়েছিলেন আত্মীয়দের বাড়িতে।
বস্তিতে তখন যাঁরা ছিলেন, সেই বাসিন্দারাই প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশকর্মীরা, বিদায়ী দমকলমন্ত্রী এবং বিধাননগর পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর তুলসী সিংহরায় ও নির্মল দত্ত।
আগুনের প্রাবল্য বাড়তে থাকায় দফায় দফায় দমকলের দশটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সমর্থ হন তাঁরা। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, একটি গ্যাস সিলিন্ডার অগ্নিকাণ্ডে ফেটে যায়, যার জেরে আগুন আরও ছড়িয়ে পড়ে।
এ দিন ওই বস্তিতে গিয়ে দেখা গেল, আগুন লাগার সব রকম রসদ সেখানে আগে থেকেই ছিল। জেনারেটর থেকে শুরু করে মজুত ছিল নানা দাহ্য বস্তু। সেই সঙ্গে প্লাস্টিক। আগুনে পুড়ে গিয়েছে সব কিছুই।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, কী থেকে আগুন লাগল, তা তাঁদের কাছেও স্পষ্ট নয়। কেউ কেউ মনে করছেন, রান্না করতে গিয়ে আগুন লেগেছে।
মইউদ্দিন নাইয়া নামে এক বাসিন্দা জানান, সকালে কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে দেখেন, বস্তিতে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। দমকল এসে পৌঁছনোর আগে তাঁরা নিজেরাই জল দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। আতঙ্কে হুড়োহুড়ি পড়ে যায় বস্তিতে। বিভিন্ন ঝুপড়ি থেকে বাচ্চাদের কোনও মতে বার করে আনা হয়। ঝুঁকি জেনেও বাসিন্দাদের অনেকে আগুনের গ্রাস থেকে শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা শুরু করেন।
বিধাননগর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার পরে সল্টলেকে বেআইনি দখলদার নিয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন। সেই প্রসঙ্গে বিদায়ী দমকলমন্ত্রী সুজিতবাবু জানান, রুটি-রুজির টানে আসা দরিদ্র মানুষদের উচ্ছেদ করাটা তাঁদের নীতি নয়। পোড়া বস্তির পাশেই তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। বিদায়ী কাউন্সিলর জানান, বস্তিতে দাহ্য পদার্থ রাখাটা বন্ধ করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy