মেহতা বিল্ডিংয়ে আগুন। উপস্থিত হয়েছে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন। ছবি: সারমিন বেগম।
বড়বাজারের মেহতা বিল্ডিংয়ে আগুন। মঙ্গলবার বিকেলে ব্যস্ত সময়ে আগুন লাগে ওই বাড়িতে। চারপাশ ঢেকে যায় কালো ধোঁয়ায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন। ওই বিল্ডিংয়ে রয়েছে ওষুধের বহু পাইকারি দোকান। এমনিতেই এলাকাটি বেশ ঘিঞ্জি। আগুন লাগায় তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে সেখানে। ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। কিন্তু আগুন লাগা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সতর্ক হতে হবে। ওই বহুতলে ব্যবসায়ীদের দাবি, বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগার আগে থেকেই সেখানে অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে।
মেহতা বিল্ডিংয়ের উল্টো দিকেই রয়েছে বাগড়ি মার্কেট। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বাড়ির চতুর্থ তলে আগুন লেগেছে। সেখানে রাসায়নিকের দোকান রয়েছে। তাই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দমকলের প্রাথমিক অনুমান, কোনও রাসায়নিক থেকেই আগুন লেগেছে। তবে আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখা হবে। দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, আগুন লাগার পরেই বহুতলের বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। নীচের দোকানগুলিও সব বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনিতে ওই বহুতলে ওষুধের পাশাপাশি বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের দোকান রয়েছে। এর আগেও এই মেহতা বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছে। এই প্রসঙ্গে দমকলমন্ত্রী সুজিত বলেন, ‘‘আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যাঁরা, ব্যবসা করেন, তাঁদেরও সতর্ক হতে বলছি। এর আগে এখানে আগুন লেগেছিল। তার পর ছাড়পত্র দিয়েছিলাম। কারও রুজিতে বাধা দিতে চাই না। কিন্তু জীবন সকলের আগে। বাগড়ি মার্কেটে আগুন পরেও অনেক পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
বহুতলে দোকান রয়েছে বেঙ্গল কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অনেক সদস্যের। তাঁরা জানিয়েছেন, মেহেতা বিল্ডিংয়ে অগ্নি নির্বাপণের ব্যবস্থা রয়েছে। বহুতলটির নিজস্ব জলাধার রয়েছে। বাগড়ি মার্কেটে আগুন লাগার আগে থেকেই সেখানে অগ্নিসুরক্ষার কাজ শুরু হয়েছে।
চতুর্থ তলে দফতর রয়েছে শশী বৈদ্যের। তিনি বলেন, ‘‘আগুন দেখেই প্রথমে চিৎকার করি। শুনে লোকজন ছুটে আসেন। তার পর হোসপাইপ দিয়ে জল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। চারদিক কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। অসুস্থ হয়ে পড়ি। সকলে মিলে নীচে চলে আসি।’’ তিনি জানিয়েছেন, তৃতীয় তলের যে দোকানে আগুন লেগেছে, সেটা দীর্ঘ দিন ধরে বন্ধ পড়েছিল। আগুন লাগার পর বহুতলের ম্যানেজারকে খবর দেওয়া হয়। তিনি দোকানের মালিককে জানান। এর পর দোকানের মালিক এক কর্মীকে চাবি দিয়ে পাঠান। সেই চাবি দিয়ে দোকান খুলে আগুন নেভানোর কাজ শুরু হয়।
গত ১৪ দিনে এই নিয়ে চার বার আগুন লাগল কলকাতায়। গত ১১ জুন ক্যামাক স্ট্রিটের একটি রেস্তরাঁয় আগুন লাগে। তার পর ১৪ জুন অ্যাক্রোপলিস মলে আগুন লাগে। ২২ জুন গার্স্টিন প্লেসের পুরনো বাড়িতে আগুন লেগেছিল। এ বার বড়বাজারের মেহতা বিল্ডিংয়ে আগুন লাগল।
দিন কয়েক আগে কসবার অ্যাক্রোপলিস মলে তিন তলার একটি দোকানে আগুন লাগে। সেখান থেকে মুহূর্তে উপরের তলায় ছড়িয়ে পড়েছিল আগুন। শপিং মলের কাচের দেওয়াল ভেঙে ধোঁয়া বার করেছিলেন দমকল কর্মীরা। ‘হাইড্রোলিক ল্যাডার’ এনে আগুন নেভানোর কাজ করেন। সকালে আগুন লাগায় মলের ভিতর খুব বেশি মানুষজন ছিলেন না। তবে ভিতরে আটকে পড়েছিলেন বেশ কয়েক জন। তাঁদের অভিযোগ, আপৎকালীন সিঁড়ি ফাঁকা ছিল না। এর পর দমকল এই ঘটনার তদন্তে নামে। সেখানে থাকা অফিস খোলার কথা বলা হলেও শপিং মল সম্পূর্ণ ভাবে কবে খুলবে, তা নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি প্রশাসন। এর মধ্যেই আবার আগুন লাগল মেহতা বিল্ডিংয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy