উদ্ধার: আগুন লাগার পরে একটি শিশুকে নিয়ে সেই সার্জেন্ট। শনিবার, বেহালার ম্যান্টনে। নিজস্ব চিত্র
চারতলা বাড়ির দোতলায় দু’টি নার্সিংহোম। তারই নীচের তলায় মিটার বাক্স থেকে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। চারপাশ তাতে ঢেকে গিয়েছে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বেহালার ম্যান্টনের কাছে এই অগ্নিকাণ্ড ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তবে কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টের সময়োচিত তৎপরতায় বড় অঘটন এড়ানো গিয়েছে। তিনিই ওই বাড়ির নার্সিংহোম থেকে পাঁচ শিশু-সহ তাদের মায়েদের বার করে আনেন। পরে সবাইকেই পাশের বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ জানায়, নার্সিংহোমের উপরের তলায় চলে একটি কোচিং সেন্টার। সেখানকার পড়ুয়াদেরও নিরাপদে বার করার ব্যবস্থা হয়। এই গোটা উদ্ধারকাজে অগ্রণী ভূমিকা নেওয়া ওই সার্জেন্টের নাম কৃষ্ণ দাস।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন ম্যান্টনের কাছে ডায়মন্ড হারবার রোড লাগোয়া ওই বহুতলের প্রবেশপথ সংলগ্ন মিটার বাক্সে আগুন লাগে। সেখান থেকে প্রচুর ধোঁয়া বেরোতে দেখে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পাশেই ডায়মন্ড হারবার ট্র্যাফিক গার্ডে খবর দেন। ছুটে আসেন সার্জেন্ট কৃষ্ণবাবু।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় বাসিন্দারা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন লাগানোর কাজে হাত দেন। চারতলা বাড়ির দোতলায় দু’টি নার্সিংহোম রয়েছে। একটি নার্সিংহোমে কোনও রোগী ছিল না। পাশের নার্সিংহোমে পাঁচ সদ্যোজাতকে নিয়ে তাদের মায়েরা ছিলেন। ওই নার্সিংহোমের কর্ণধার, চিকিৎসক গোপা সাহা বলেন, ‘‘তখন আমি ভিতরে রোগী দেখছিলাম। পরপর কয়েকটি বিকট শব্দ শুনি। তার পরেই ‘আগুন আগুন’ চিৎকার। শুক্রবারই দু’জন সন্তান প্রসব করেছেন। ওই শিশু ও তাদের মায়েদের কী ভাবে নীচে নামানো যায়, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ি। তবে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ এসে যাওয়ায় সুবিধা হয়েছে। পুলিশ ও নার্সিংহোমের কর্মীরা মিলে তাঁদের নীচে নামিয়েছেন।’’ খবর যায় দমকলেও। তাদের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে গেলেও আগুন তত ক্ষণে নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল।
পুলিশ জানিয়েছে, নার্সিংহোম থেকে শিশু ও মায়েদের নামিয়ে একটি ক্লাবের সামনে কিছু ক্ষণ বসিয়ে রেখে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করা হয়। বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁদের। এ দিন দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নার্সিংহোম থেকে সব রোগীকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গোপাদেবী বলেন, ‘‘আগুনের কারণে গোটা বহুতল বিদ্যুৎহীন। আলো এলে আমরা রোগীদের ফিরিয়ে আনব।’’
সার্জেন্ট কৃষ্ণবাবু জানান, দু’বছর দমকলে কর্মরত ছিলেন তিনি। তাই আগুন লাগলে রোগীদের কী ভাবে উদ্ধার করতে হয়, তার প্রশিক্ষণ নেওয়া ছিল। তাই প্রথমেই সদ্যোজাতদের কোলে করে তাদের নাক-মুখ ঢেকে নীচে নামিয়ে আনেন। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কর্তব্যরত ট্র্যাফিক সার্জেন্ট যে দক্ষতার সঙ্গে শিশু ও মায়েদের আগুন থেকে বাঁচিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। তাঁকে পুরস্কৃত করা হবে।’’ এ দিনই কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পেজে ওই সার্জেন্টের কাজের বর্ণনা দিয়ে প্রশংসাও করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy