বি আর সিংহ হাসপাতাল। ফাইল চিত্র।
অবশেষে জট কাটল বি আর সিংহ রেল হাসপাতালে দেহ বদলের ঘটনার।
হাওড়ার বাসিন্দা কল্পনা ভকতের দেহের সঙ্গে যে বৃদ্ধার দেহ বদল হয়েছিল, তাঁর দুই ছেলে সোমবার শিয়ালদহের ওই হাসপাতালে এসে ফের মায়ের দেহ শনাক্ত করলেন। এমনকি, এ-ও স্বীকার করলেন যে, গত ৫ অগস্ট রাতে তাঁরা মায়ের দেহ চিনতে ভুল করেছিলেন। কিন্তু মায়ের দেহ চিনতে কী ভাবে ভুল হতে পারে, তা ভেবেই বিস্মিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রিজেন্ট পার্কের বাসিন্দা, ওই বৃদ্ধার বড় ছেলে এ দিন বলেন, ‘‘অনেকটা দূর থেকে সামান্য কিছু ক্ষণের জন্য দেহটি দেখানো হয়েছিল। ব্যাগের ভিতর থেকে মুখটাও খুবই অল্প দেখা যাচ্ছিল। আলো-আঁধারিতে তাতেই হয়তো ভুল হয়েছিল চিনতে।’’ কিন্তু মর্গ থেকে মৃতদেহ বাইরে বার করার সময়ে হাসপাতালের কর্মীরা কী ভাবে ভুল করলেন, তা নিয়ে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন ওই বৃদ্ধার ছেলেরাও। হাসপাতালের মেডিক্যাল ডিরেক্টর দুলালচন্দ্র ভুঁইয়ার কথায়, ‘‘হাসপাতালের কোন কোন কর্মীর কী ভুল ছিল, তদন্ত কমিটি তা খতিয়ে দেখছে। কিন্তু কেউ নিজের মাকে চিনতে ভুল করেন কী করে?’’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, রিজেন্ট পার্কের বৃদ্ধার ছেলেরা যদি শনাক্ত করতে ভুল না করতেন, তা হলে মৃতদেহ বদলের ঘটনাটাই ঘটত না এবং কল্পনাদেবীর দেহও করোনায় মৃত হিসেবে দাহ করা হত না। দুলালবাবু জানান, রিজেন্ট পার্কের ওই বৃদ্ধার পরিবারের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে। অন্য দিকে, কল্পনাদেবীর ছোট জামাই রাজীব দে-র দাবি, ‘‘মৃতদেহ বদলের ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুতেই নিজেদের দায় এড়াতে পারেন না।’’
গত ৩১ জুলাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল রিজেন্ট পার্কের বৃদ্ধার। আর ৩ অগস্ট কিডনির সমস্যায় মৃত্যু হয়েছিল কল্পনাদেবীর। কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট না আসায় দু’টি দেহই হাসপাতালের মর্গে রাখা ছিল। গত ৫ অগস্ট রিজেন্ট পার্কের বৃদ্ধার কোভিড পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। ওই রাতেই তাঁর দেহের বদলে কল্পনাদেবীর দেহ তুলে দেওয়া হয় পুরসভার হাতে। এর পরে গত ৬ অগস্ট কল্পনাদেবীর কোভিড নেগেটিভ রিপোর্ট এলে পরের দিন দেহ নিতে এসে গোলমালটি চোখে পড়ে তাঁর জামাইদের। নড়েচড়ে বসে হাসপাতাল।
দুই পরিবারের কাছ থেকেই বৃদ্ধাদের পরিচয়পত্র ও সম্প্রতি তোলা ছবি চেয়ে পাঠান দুলালবাবুরা। রিজেন্ট পার্কের বৃদ্ধার ছবি আসতেই মর্গে থাকা দেহের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যায়, সেটি ওই বৃদ্ধারই। কিন্তু প্রশ্ন হল, নিয়মানুযায়ী মর্গে যখন কোনও দেহ রাখা হয়, তখন সেখানকার রেকর্ড বুকে ওই রোগীর তথ্য বিস্তারিত লিখে রাখা হয়। এমনকি, মর্গের কোন বাক্সে সেই দেহ রাখা হল, সেই নম্বরও রেকর্ড বুকে নথিভুক্ত করা হয়। পাশাপাশি, ব্যাগের উপরে ও মৃতদেহের মাথার উপরে নাম-সহ অন্য তথ্য লিখে সেঁটে দেওয়া হয়।
তার পরেও হাসপাতালের তরফে ভুল হল কী করে? দুলালবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy