E-Paper

ব্যাঙ্কে দেওয়া গ্রাহকের তথ্যও পাচার সাইবার জালিয়াতির জগতে

বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় পুলিশ ব্যতিব্যস্ত সাইবার অপরাধ ঠেকাতে। নিত্যদিন নানা কায়দায় সেখানে বাসিন্দারা সাইবার প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।

An image of Cyber Crime

—প্রতীকী চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৮:১৮
Share
Save

এ যেন ভার্চুয়াল চোরবাজার!

খোঁজ করলে মিলতে পারে যাঁর-তাঁর মোবাইল বা আধার-প্যান কার্ডের নম্বর। ঠিক যেমন চোরবাজারে মেলে হিরে থেকে জিরে— সব কিছুই। কোনও না কোনও ভাবে অন্যের মালপত্র চুরি হয়ে পৌঁছে যায় চোরবাজারে। এখানেও নানা ভাবে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর-সহ নানা তথ্য তাঁর অজানতেই পৌঁছে যাচ্ছে নানা সাইটে। পুলিশ একটি সাইট বন্ধ করলে অন্য নামে অন্য একটি সাইট খুলে ফেলা হচ্ছে। হাজার হাজার টাকায় সেই সব তথ্য বিক্রি হয়ে হাতবদল হয়ে যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তা পৌঁছে যাচ্ছে সাইবার দুষ্কৃতীদের কাছেও।

বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় পুলিশ ব্যতিব্যস্ত সাইবার অপরাধ ঠেকাতে। নিত্যদিন নানা কায়দায় সেখানে বাসিন্দারা সাইবার প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। কমিশনারেটের কর্তারা জানাচ্ছেন, বেশ কিছু এমন সাইট তাঁরা বন্ধ করেছেন, যেখানে অন্যের মোবাইল নম্বর-সহ নানা গোপন তথ্য বিক্রি করা হচ্ছিল। কিন্তু তাতে সাইবার অপরাধ ঠেকানো যায়নি। এমন তথ্য বিক্রয়কারী সাইটের চেয়েও কমিশনারেটের উদ্বেগ তথ্য পাচারকারীদের নিয়ে।

কী ভাবে হয় তথ্য কিংবা ডেটা পাচার? গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, তাঁরা বিধাননগরে ঘটা সাইবার অপরাধের তদন্ত করতে গিয়ে দেখেছেন, ব্যাঙ্কের কাছে ঋণের জন্য আবেদনকারীর পরিচয়-ঠিকানা জানতে আসা লোকজন অনেক ক্ষেত্রেই এমন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকছেন। অভিযোগ, ঋণের আবেদনকারীর তথ্য যাচাই করতে ব্যাঙ্ক কিছু সংস্থাকে বরাত দিয়ে রাখে। সেই সব সংস্থার কর্মীরা গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের তথ্য যাচাই করেন। এখানেই অনেক ক্ষেত্রে গোলমাল হয়। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘ঋণের আবেদনকারীর কাছে ব্যাঙ্কের তরফে যাঁরা পৌঁছন, তাঁদের কেউ কেউ হাত মেলান সাইবার জালিয়াতদের সঙ্গে। তথ্যভান্ডার তাঁরা বিক্রি করে দেন জালিয়াতদের কাছে।’’

এক আধিকারিক জানান, একটি মামলায় এমন কয়েক জনকে ধরা হয়েছিল। তারা জেরায় স্বীকার করেছে যে, ব্যাঙ্কের কাছে ঋণগ্রহীতার তথ্য পাঠানোর পরে সেই সব তথ্য় তাদের কাছেও থেকে গিয়েছিল। গ্রাহকের তথ্য যাচাই করার সংস্থার চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরে অভিযুক্তেরা ওই সব তথ্য জালিয়াতদের কাছে বিক্রি করে দেয়।

বিধাননগর এলাকায় অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বন্ধ হওয়ার ভয় দেখানো কিংবা অ্যাপের মাধ্যমে স্বল্প বিনিয়োগে প্রাথমিক ভাবে টাকা ফেরত দিয়ে শেষ পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে বড় অঙ্ক সরিয়ে দেওয়ার একাধিক ঘটনা বিধাননগরে ঘটেছে।

সাইবার অপরাধ দমন শাখার আধিকারিকেরা জানান, পুলিশের তরফে এ ভাবে তথ্য অন্যত্র পাচার হওয়া ঠেকাতে ব্যাঙ্কগুলিকে বলা হয়েছে, সতর্ক হওয়ার জন্য। কোনও ভাবে যেন কোনও গ্রাহকের গোপন তথ্য আউটসোর্সিংয়ে দেওয়া সংস্থার চাকরি ছেড়ে যাওয়া কর্মীদের কাছে না থেকে যায়, তা বলা হয়েছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘গ্রাহক সরল বিশ্বাসে যে তথ্য দিচ্ছেন, সেটা দিচ্ছেন ব্যাঙ্ককে দেখেই। ব্যাঙ্কগুলির সেটা মনে রাখা উচিত। তাই আউটসোর্সিংয়ে দেওয়া সংস্থা, যারা গ্রাহকের তথ্য যাচাই করছে, কাদের সেই কাজে নিযুক্ত করছে, সে ব্যাপারে ব্যাঙ্কেরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’’

একই সঙ্গে অনলাইনে হোটেল বুকিং, হাসপাতালে ডাক্তারের খোঁজ করতে গিয়েও জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ছেন অনেকে। উপযুক্ত বানান না দেখেই অনেকে উল্টোপাল্টা সাইটে ক্লিক করে প্রতারিত হচ্ছেন। এ সব ক্ষেত্রেই মানুষের মধ্য়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে বক্তব্য পুলিশের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cyber Crime Bank Detail Cyber Cell

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।