কসবা রথতলার সিলভার পয়েন্ট হাই স্কুল। —ফাইল চিত্র।
স্কুল কেন বন্ধ? এ বার সেই প্রশ্ন তুললেন কসবার রথতলার ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে মৃত ছাত্র শেখ শানের বাবা শেখ পাপ্পু। রবিবার সন্ধ্যায় ওই স্কুলের সামনে বেসরকারি স্কুলগুলির অভিভাবকদের সংগঠনের ডাকা একটি সভায় তিনি বলেন, ‘‘স্কুল বন্ধ করে দিয়ে অন্য পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ওদের পড়াশোনার মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে।’’ অবিলম্বে স্কুল খোলার দাবিতে সরব হন বাকি অভিভাবকেরাও। সেই সঙ্গে ছাত্র-মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত কোন পথে হচ্ছে, সে বিষয়েও বার বার প্রশ্ন তোলেন পাপ্পু।
গত ৪ সেপ্টেম্বর কসবার রথতলার ওই স্কুলে পাঁচতলা থেকে ‘পড়ে’ মৃত্যু হয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র শানের। এই ঘটনায় স্কুলের প্রিন্সিপাল, ভাইস প্রিন্সিপাল এবং আরও দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে ছেলেকে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শানের বাবা। এর পরেই পুলিশ তদন্ত করছে, সেই কারণ দেখিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুল বন্ধের নোটিস দেন কর্তৃপক্ষ। এ দিন বেসরকারি স্কুলগুলির অভিভাবকদের সংগঠন ‘ইউনাইটেড গার্ডিয়ান্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর ডাকা সভায় শহরের ৩০টি বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকদের সঙ্গে ছিলেন পাপ্পুও। তিনি বলেন, ‘‘করোনার পরে স্কুলের ফি বেড়ে যাওয়ায় প্রতিবাদ করেছিলাম। তার জন্য আমার ছেলেকে চিহ্নিত করে রেখেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ও একটি প্রজেক্ট জমা দিতে না পারায় বকাবকি করা হয়। কান ধরে দাঁড় করিয়েও রাখা হয়। নিশ্চয়ই ও অপমানিত বোধ করেছিল। ওর উপরে বার বার চাপ দেওয়া হয়েছিল।’’ দোষীদের শাস্তি চেয়ে পাপ্পু আরও বলেন, ‘‘ঘটনার দিন আমার ছেলে ওর টিফিন বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে খেয়েছে। এতটাই স্বাভাবিক ছিল ও সে দিন। অথচ স্কুল বলছে, ও ঝাঁপ মেরেছে! এত স্বাভাবিক একটা ছেলে কেন নিজে থেকে ঝাঁপ মারবে? তদন্তের অগ্রগতি কী হয়েছে, তা নিয়ে কিছুই জানতে পারছি না। এই ঘটনায় দোষীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি করছি।’’
সভায় উপস্থিত ওই স্কুলের অন্য অভিভাবকেরাও স্কুল দ্রুত খোলার দাবি তোলেন। তাঁদের একাংশ জানান, স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে অনেক পড়ুয়া অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। বাড়িতে পড়াশোনাও ঠিক মতো হচ্ছে না। ওই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুলের ভিতরে একটা ঘটনা ঘটলে কর্তৃপক্ষ কখনওই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। তদন্ত যাতে নিরপেক্ষ হয়, তার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই। প্রশাসন কি বলেছে স্কুল বন্ধ রাখতে? তা হলে স্কুল বন্ধ করা হল কেন? অন্য অভিভাবকদের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে?’’
যদিও তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সব দিক খোলা রেখে তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যে স্কুলের বেশ কয়েক জন শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এমনকি, মৃত পড়ুয়ার সহপাঠীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। ওই স্কুলের প্রিন্সিপাল সুচরিতা রায়চৌধুরী এ দিন বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। তারা স্কুল খোলার নির্দেশ দিলেই আমরা স্কুল খুলব। আমরাও স্কুলে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy