Advertisement
E-Paper

জেলা থেকে শহরের তিনটি হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি করানো গেল না শিশুকে, কবে চালু কেন্দ্রীয় রেফারাল

অভিষেক রায় নামে সেই শিশুটি রবিবার সকালে বাড়িতেই খেলা করছিল। তার বাড়ির উঠোনে রাখা টোটোয় চাবি লাগানো ছিল। শিশুর পরিজনেরা জানাচ্ছেন, খেলার সময়ে ওই টোটোর চাবি ঘুরিয়ে ফেলে।

SSKM trauma care

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:০৩
Share
Save

একের পর এক হাসপাতাল ঘুরে রোগী হয়রানি বন্ধের জন্য কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা চালুর দাবি করেছিল ‘জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্ট’। কিন্তু এখনও সেই ব্যবস্থা পুরোপুরি চালু না হওয়ায় রোগী ভোগান্তি যে অব্যাহত, আবারও তার প্রমাণ মিলল। রবিবার জেলা থেকে শহরের তিনটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পারেনি কান ও মাথায় আঘাত লাগা এক শিশু। সারা রাত অপেক্ষার পরে সোমবার সকালে অবশ্য পিজির ট্রমা কেয়ারে ভর্তি হয়েছে সাড়ে তিন বছরের ওই শিশু।

বাঁকুড়ার বাসিন্দা অভিষেক রায় নামে সেই শিশুটি রবিবার সকালে বাড়িতেই খেলা করছিল। তার বাড়ির উঠোনে রাখা টোটোয় চাবি লাগানো ছিল। ওই শিশুর পরিজনেরা জানাচ্ছেন, খেলার সময়ে সে ওই টোটোর চাবি ঘুরিয়ে ফেলে। তাতেই ঘটে বিপত্তি। টোটো চালু হয়ে যাওয়ায় সেটি অভিষেকের উপরে উল্টে পড়ে। তার বাবা সোমনাথ রায় বলেন, ‘‘ছেলের বাঁ কানের পিছনের অংশে গভীর ক্ষত হয়। মাথাতেও চোট লাগে। ওকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে, সেখান থেকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’’ তিনি জানাচ্ছেন, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গেলে জানানো হয়, অভিষেকের অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। কিন্তু সেখানে করা যাবে না। এর পরেই বিকেল পাঁচটা নাগাদ ছেলেকে নিয়ে নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছন সোমনাথেরা।

তিনি জানান, এন আর এসে সিটি স্ক্যান করে দেখেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু সেখানে শয্যা ফাঁকা না থাকায় তাঁদের পিজি-তে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ সেখানে পৌঁছে ট্রমা কেয়ারে গেলে কিছু ওষুধপত্র লিখে দিলেও শুনতে হয়, শয্যা ফাঁকা নেই। অভিষেকের ঠাকুরমা টগরী রায় বলেন, ‘‘রাত দেড়টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও শয্যা পাইনি। তখন প্রথমে শিশুমঙ্গল হাসপাতালে এবং পরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও ভর্তি করাতে পারিনি। দু’জায়গাতেই বলা হল, ওই অস্ত্রোপচার হয় না।’’এর পরে ওই রাতেই ফের ছেলেকে নিয়ে পিজিতে ফিরে আসেন সোমনাথ। তাঁর কথায়, ‘‘জরুরি বিভাগে গেলে, আবারও ট্রমা কেয়ারে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু আবারও বলা হয় শয্যা ফাঁকা নেই। অপেক্ষা করতে হবে।’’ এর পরে এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ শিশুটিকে ট্রমা কেয়ারের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। সূত্রের খবর, শিশুটি এখন স্থিতিশীল রয়েছে।

যদিও ওই শিশুকে রেফারাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বর্ধমান থেকে শহরে পাঠানো হয়নি বলেই খবর। তবে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, রাজ্যে কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থাপনা এখনও পুরো চালু হয়নি। এ দিন রাজ্যের কার্যনির্বাহী স্বাস্থ্য-শিক্ষা অধিকর্তা অনিরুদ্ধ নিয়োগী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থার পাইলট প্রকল্প চলছে। পুরো ব্যবস্থাপনার মধ্যে কোথায় কী অসুবিধা রয়েছে তা চিহ্নিত করা হচ্ছে। সেগুলি সংশোধনের পরে পুরোপুরি ভাবে কেন্দ্রীয় রেফারাল ব্যবস্থা চালু হবে।’’ অন্য দিকে, এসএসকেএমের এক কর্তা বলেন, ‘‘সাধারণত বাচ্চাদের ফেরত পাঠানো হয় না। কিন্তু শয্যা একেবারেই ফাঁকা না থাকলে কিছু করার থাকে না। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। পরে শয্যা মিলতেই ভর্তিকরা হয়েছে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

SSKM NRS Patients

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}