ব্রিকস সম্মেলনে সনাতনের যোগ দেওয়ার এই ছবিই সামনে এসেছে।
এক দেবাঞ্জনে রক্ষে নেই, সনাতন দোসর! তবে কাণ্ডকারখানা দেখে অনেকেরই মত, জালিয়াতিতে দেবাঞ্জন দেবকেও ছাপিয়ে যাচ্ছেন সনাতন রায়চৌধুরী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু কলকাতা বা দিল্লি নয়, কূটনীতিক সেজে একাধিক দেশে পা রেখেছেন সনাতন। এমনকি ২০১৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে আয়োজিত ব্রিকস সম্মেলনেও ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি, তা-ও আবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশে! জেরায় সনাতন নিজেই তা কবুল করেছেন। আর তাতেই রীতিমতো ভিরমি খাওয়ার অবস্থা তদন্তকারীদের।
রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)-এর কৌঁসুলি সেজে এত দিন সনাতন কলকাতায় প্রতারণচক্র চালিয়ে আসছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। গড়িয়াহাট এলাকায় সম্পত্তি কেনাবেচায় তিনি যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। রাজভবনের ঠিকানা দিয়ে সনাতন প্রতারণা করেছেন বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে বিদেশ মন্ত্রকের তাবড় কূটনীতিকদেরও সনাতন কী ভাবে ঘোল খাইয়ে ছেড়েছেন, তা বুঝে উঠতে পারছেন না অনেকেই।
পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারীদের সামনে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য তুলে ধরেছেন সনাতন। জানিয়েছেন জোহানেসবার্গে ব্রিকস সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। তার আগে ২০১৩ সালে টোকিয়োয় ইন্দো-জাপান ব্যবসায়িক সম্মেলনেও অংশ নিয়েছিলেন। বক্তৃতা করা-সহ ব্রিকস সম্মেলনে সনাতনের শামিল হওয়ার একাধিক ছবিও হাতে পেয়েছে পুলিশ।
তবে সনাতনের দাবির সত্যাসত্য খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। কারণ ব্রিকস সম্মেলন, যেখানে নিরাপত্তার ফাঁকফোকর দিয়ে মাছি গলারও উপায় থাকে না, বিদেশ মন্ত্রক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কড়া নজরদারি থাকে যে অনুষ্ঠানের উপর, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সনাতন কী ভাবে শামিল হলেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সত্যিই যদি সনাতন বিদেশে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে কোথা থেকে অনুমতি জোগাড় করলেন তিনি, অনুষ্ঠানে শামিল হওয়ার আমন্ত্রণপত্র কী ভাবে গিয়েছিল, এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা।
শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ক্ষেত্রে কূটনীতিকদের যাওয়া-আসা, থাকা-খাওয়া, সব খরচই বহন করে সরকার। সে ক্ষেত্রে সনাতন কী ভাবে ব্রিকস সম্মেলনে গিয়েছিলেন, কার মাধ্যমে সেখানে যাওয়ার ডাক পেয়েছিলেন, সে সবও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের ধারণা, এই প্রতারণাচক্র অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। সরকারের উচ্চস্তরে আমলারাও এর সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। সনাতনের সহযোগীদের সন্ধান করছেন তদন্তকারীরা। তাঁদের বয়ান পেলে, রহস্যের জট খুলতে সুবিধা হবে বলে ধারণা তাঁদের।
আদতে বহরমপুরের খাগড়া তেলঘরিয়ার বাসিন্দা সনাতন সময়বিশেষে হাইকোর্টের রাজ্য সরকারের স্ট্যান্ডিং কাউন্সিলের সদস্য, সিবিআই কৌঁসুলি এবং মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের উপদেষ্টা হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন। নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘুরতেন। এ ছাড়াও, ফেসবুকে স্পেশাল কাউন্সিল অব গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া, বার কাউন্সিল, ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব জাস্টিস-এর সদস্য হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়েছেন। গড়িয়াহাটে বিপুল টাকার সম্পত্তি দখল করতে গিয়েই গ্রেফতার হন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy