পিন্টু মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। —প্রতীকী চিত্র।
বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির সময়েই কি ঘটল বিস্ফোরণ? চম্পাহাটির হারালে বাজিবিস্ফোরণের ঘটনার পরে এই প্রশ্ন উঠছে। শনিবার ওই গ্রামে পিন্টু মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় এক মহিলার মৃত্যু হয়। পিন্টু-সহ আরও কয়েক জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পিন্টুর বাজি বিক্রির লাইসেন্স আছে। তাঁর বাড়িতে কালীপুজোয়বিক্রি না হওয়া বাজি ও বাজির মশলা মজুত ছিল। সেই বাজিতে আগুন লেগেই বিস্ফোরণ ঘটে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে অনুমান পুলিশের। এই ঘটনায় মৃত শুভঙ্করীসর্দার এবং হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অপর্ণা সর্দার, ভক্তি সর্দারেরা সকলেই পিন্টুর প্রতিবেশী। তাঁরা ওই সময়ে পিন্টুর বাড়িতে কী করছিলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। আরএখানেই সামনে আসছে বাড়িতে বাজি তৈরির তত্ত্ব।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বছর ৫৫-র শুভঙ্করী দৈনিক মজুরির বিনিময়ে বাজিবাঁধার কাজ করতেন। রোজ অবশ্য কাজ মিলত না। কালীপুজো বা অন্য উৎসবে কাজ আসত। সামনেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান থাকায় বর্তমানে এলাকায় কাজের চাপবেড়েছিল বলেই জানিয়েছেন বাসিন্দারা। গত শনিবার পিন্টুর বাড়িতে শুভঙ্করী-সহ অন্যেরা বাজি বাঁধার কাজেই গিয়েছিলেন কিনা, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। পিন্টুর বাজি তৈরিরঅনুমতি ছিল না। তবে অভিযোগ, হারালে অনেকেই অনুমতি ছাড়া বাজি তৈরি করেন।
বিস্ফোরণের তীব্রতা দেখে অনেকেরই অনুমান, সেখানে নিষিদ্ধ বাজি তৈরি হচ্ছিল।শুভঙ্করীর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি। স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল অবশ্য বাজি তৈরির অভিযোগ মানেনি। তাঁদের দাবি, বাজি তৈরি হচ্ছিল না। মজুত বাজিতে আগুন লেগেই দুর্ঘটনা ঘটে। কারও আবার দাবি, গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনা ঘটেছে। বাজি মজুত থাকায় সেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, পিন্টুর বাড়িতে গ্রিলের কাজ চলছিল। সেই কাজ চলাকালীন আগুনের ফুলকি মজুত বাজিতে এসে পড়ায় দুর্ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। রবিবার এলাকায় আসে ফরেন্সিক দল। দুর্ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তারা। ফরেন্সিক তদন্তের পরেই বিস্ফোরণের কারণ স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিন এলাকার ব্যবসায়ীদের বাজি তৈরি এবং বিক্রির লাইসেন্স খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, নিয়মিত লাইসেন্স খতিয়ে দেখা এবং নজরদারির কাজ চলে।
শনিবারের ঘটনার পরে এ দিন এলাকায় আসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার-সহ কংগ্রেসের একটি প্রতিনিধিদল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দাবি, এলাকায় বিকল্প কাজের সুযোগ না থাকায় গরিব মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বেআইনি ভাবে বাজি তৈরি করছেন। প্রশাসনের কাছে এলাকায় কৃষি-সহ অন্যান্য কাজের সুযোগ বাড়ানোর দাবি জানান তিনি। পাশাপাশি, বাজির প্রস্তাবিত ক্লাস্টার দ্রুত শেষ করারও আবেদন করেন। শুভঙ্কর বলেন, ‘‘তিন মাসের মধ্যে ক্লাস্টার তৈরির কাজ শেষ না হলে গ্রামের মানুষদের নিয়ে আন্দোলন হবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ক্লাস্টার তৈরির কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy