বৃহস্পতিবার দুপুরে উড়ালপুলে ফাটলের অংশগুলি পরীক্ষা করে দেখেন বিশেষজ্ঞরা। নিজস্ব চিত্র
উড়ালপুলের রোগটা ঠিক কী? তা নিয়েই সংশয়ে বিশেষজ্ঞরা। তাই উল্টোডাঙা উড়ালপুল নিয়ে ইতিমধ্যেই সাধারণ মানুষ যে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তা আরও বাড়তে পারে, এমনটাই আশঙ্কা। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশেষজ্ঞদের বৈঠকের পর স্থির হয়েছে আগামিকাল শুক্রবার থেকে উড়ালপুলের ভিআইপি রোডগামী অংশটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সূত্রের খবর, উড়ালপুলের ভিআইপি-গামী অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া সম্ভব হলেও, বাইপাসগামী অংশ এখনই যান চলাচলের উপযুক্ত বলে রায় দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উড়ালপুলে ফাটলের অংশগুলি পরীক্ষা করে দেখেন বিশেষজ্ঞরা। সেই দলে ছিলেন রাজ্য সরকারের ব্রিজ অ্যাডভাইসরি কমিটির সদস্য অমিতাভ ঘোষাল এবং সমীরণ সেন। সঙ্গে ছিলেন কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য।
সূত্রের খবর, উড়ালপুলের ইএম বাইপাসগামী অংশে অন্তত তিনটি ফাটলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে, যার মধ্যে একটি নিয়ে চিন্তিত বিশেষজ্ঞরা। সূত্রের খবর, ওই ফাটলটি উড়ালপুলের পূর্ব দিকের পেয়ারের কাছে। ২০১৩ সালে ওই উড়ালপুলের যে দু’টি স্তম্ভের মাঝের অংশ খুলে পড়ে গিয়েছিল, সেই দুটি স্তম্ভের একটির ‘পেয়ার ক্যাপ’-এ ফাটলটি দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: নিম্নচাপ অক্ষরেখার জেরে পাহাড়ে আরও ৪ দিন প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা, জারি চূড়ান্ত সতর্কতা
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গে লাগাতার বৃষ্টি, ধসে বন্যা পরিস্থিতি, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সিকিম-ডুয়ার্সে
২০১৩ সালের দুর্ঘটনার পর, ওই ভাঙা অংশ মেরামত করে যখন যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়, তখন থেকেই মালবাহী যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয় ওই উড়ালপুলে। তার পরেও কেন এই ফাটল, তা অবাক করেছে বিশেষজ্ঞদের। এ দিন ওই ফাটলগুলি পরীক্ষা করার পর
উল্টোডাঙা উড়ালপুল নিয়ে এখনও ভোগান্তির আশঙ্কা। নিজস্ব চিত্র
বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, দুর্ঘটনার পর উড়ালপুল মেরামত করার সময় লাগানো দু’টি লোহার স্তম্ভের কারণেই ওই ফাটল। ২০১৩ সালে দুর্ঘটনা ঘটার পর, ভেঙে পড়া অংশ পুনর্নির্মাণ করার সময়, ওই দুই স্তম্ভের ‘পেয়ার ক্যাপ’-এর উপরে থাকা গার্ডারকে বাড়তি শক্তি যোগাতে ওই দুটি লোহার স্তম্ভ লাগানো হয়। যদিও ওই দু’টি স্তম্ভের অস্তিত্ব ছিল না উড়ালপুলের মূল নকশায়। এ দিন উড়ালপুল তৈরির বরাত পাওয়া সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে। এক বিশেষজ্ঞ বলেন,‘‘ওই লোহার বাড়তি স্তম্ভগুলির ভরের সঙ্গে সেতুর বল বেয়ারিংয়ের যে সমন্বয় বা ব্যালান্স থাকার কথা, তা বিঘ্নিত হচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞরা এ দিন ব্রিজের কংক্রিটের শক্তি পরীক্ষা করার জন্য আল্ট্রা সাউন্ড ভেলোসিটি পরীক্ষাও করেন। সেই সঙ্গে ‘ব্লক’ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা হয় উড়ালপুলের উপরের স্তরের নমুনা।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে উড়ালপুলে যান চলাচল বন্ধ হওয়ার পর থেকে যানজটে মানুষের যে জেরবার অবস্থা হয়েছিল সেই অবস্থা বজায় রয়েছে এ দিনও। কলকাতা পুলিশ উল্টোডাঙা মোড় এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও, প্রচুর বাড়তি দূরত্বের জন্য অনেকেই নিউটাউনের রাস্তা ধরছেন না। প্রাইভেট গাড়ি ছাড়াও, গণ পরিবহণের যে চাপ তাতেই কার্যত স্তব্ধ হয়ে যাচ্ছে ভিআইপি রোডের একটা বড় অংশ। একই ভাবে প্রভাব পড়ছে ইএম বাইপাসে। এ দিন সকালেও অফিসের ব্যস্ত সময়ে বাইপাসে গাড়ির গতি ছিল অত্যন্ত স্লথ।
সূত্রের খবর, উড়ালপুলের ঠিক কী অবস্থা তা নিয়ে এ দিন বিশেষজ্ঞেরা বৈঠক করেন। ওই বৈঠকেই বিশেষজ্ঞদের একাংশ ক্ষতিগ্রস্ত অংশের সঠিক রোগ নির্ণয় না করে মেরামতি করার বিপক্ষে মত প্রকাশ করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy