Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Bowbazar

East-West Metro: অবাধে ভূগর্ভস্থ জল তোলাতেই সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়

ওই গবেষণা জানাচ্ছে, সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়ের এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে ভূগর্ভস্থ জল তোলার কারণে এমনিতেই সেখানে মাটির স্তর বসে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছিল।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২১ ০৫:৫২
Share: Save:

বিপর্যয়ের পরিবেশ তৈরিই ছিল। সুড়ঙ্গ খননের কাজ তাকে ত্বরান্বিত করেছিল মাত্র। প্রায় দু’বছর আগে বৌবাজার এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে গিয়ে এমনটাই ধরা পড়েছে এক গবেষণায়। ওই গবেষণা জানাচ্ছে, সুড়ঙ্গ-বিপর্যয়ের এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে ভূগর্ভস্থ জল তোলার কারণে এমনিতেই সেখানে মাটির স্তর বসে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছিল। সেখানে মেট্রোর সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু হতে তা-ই চূড়ান্ত আকার নেয়। গবেষণাটি বেশ কিছু দিন আগের হলেও সম্প্রতি তা নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে।

কারণ, এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত সপ্তাহে জাতীয় পরিবেশ আদালত ‘স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেট’-কে (এসডব্লিউআইডি) নির্দেশ দিয়েছে, ভূগর্ভস্থ জল তোলার জন্য তারা রেলকে ছাড়পত্র দিয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে। আর সেই সূত্রেই কলকাতা, হাওড়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় বেহিসেবি ভাবে ভূগর্ভস্থ জল তোলার ফলে কী দুরবস্থা হতে পারে, তা বোঝাতে গিয়ে পরিবেশবিদেরা সংশ্লিষ্ট গবেষণার প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন।

এই পরিস্থিতিতে আজ, মঙ্গলবার পরিবেশ আদালতে ফের ভূগর্ভস্থ জল তোলা সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট মামলার আবেদনকারী পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলছেন, ‘‘কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় নির্বিচারে ভূগর্ভস্থ জল তোলা হলে পরিস্থিতি কী হতে পারে, তা বছর দুই আগের বৌবাজারের বিপর্যয় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে। গবেষণাও সেটাই দেখিয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য, তার পরেও আমরা এতটুকু সচেতন হইনি।’’

ওই গবেষণা জানাচ্ছে, ১৯৫৬-১৯৯৩ সাল, এই সময়সীমার মধ্যে প্রতি বছর গড়ে ১১.৮৯ মিলিমিটার করে মাটি বসে গিয়েছে ধর্মতলা, বি বা দী বাগ, বৌবাজার, কলেজ স্ট্রিট এলাকায়। তার অন্যতম কারণ, এলাকাভিত্তিক জলের চাহিদা মেটাতে অবাধে ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়া। আবার মেছুয়াবাজার, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ১৯৯০ সাল থেকেই মাটি বসে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট গবেষণাকারী দল জানাচ্ছে, কলকাতায় মাটির স্তরের নীচে বালির স্তর রয়েছে। এই মাটির স্তরের গভীরতা গড়ে ৪০ মিটার। কিন্তু ভূগর্ভস্থ জল তুলে নেওয়ার ফলে তার সঙ্গে সমানুপাতিক হারে মাটি বা বালির স্তর বসে যেতে শুরু করেছে। ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড বিজ়নেস ম্যানেজমেন্ট’-এর ‘এনভায়রনমেন্ট ম্যানেজমেন্ট’ বিভাগের অধ্যাপক তথা সংশ্লিষ্ট গবেষক প্রদীপকুমার শিকদার জানাচ্ছেন, সুড়ঙ্গ খননের আগে থেকেই ওই এলাকায় মাটিতে ধসের প্রবণতা তৈরি হয়েছিল। সুড়ঙ্গ খননের কাজ শুরু হওয়ার ফলে তার অভিঘাতে ওই এলাকায় জলের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। তাঁর কথায়, ‘‘তার উপরে টানেল বোরিং মেশিন চণ্ডী যখন ওই এলাকার জলস্তরে বা অ্যাকুইফারে গিয়ে আঘাত করে, তখন সেখান থেকে জল বেরিয়ে এসে বিপর্যয়ের আকার নেয়। মাটি বসে যাওয়ায় ধসে পড়ে বাড়িও।’’

অন্য বিষয়গুলি:

East-West Metro Bowbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy