অঘটন: নিজের ঘরে দেবীপ্রসাদবাবু। মঙ্গলবার রাতে সিলিংয়ের এই অংশ (চিহ্নিত) থেকেই ভেঙে পড়ে চাঙড়। নিজস্ব চিত্র
গভীর রাতে বিছানায় ঘুমিয়ে আছেন অসুস্থ বৃদ্ধ। আচমকা ছাদ থেকে চাঙড় খসে পড়ল তাঁর পাশে। মঙ্গলবার রাতে পার্ক ম্যানসনের একটি ফ্ল্যাটে ওই ঘটনায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন সেখানকার বাসিন্দা, শিক্ষাবিদ ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়।
ওই রাতের ঘটনার পরে বৃদ্ধের পরিবার অভিযোগের আঙুল তুলেছে সংশ্লিষ্ট বাড়িটির মালিকপক্ষের দিকে। তাঁদের বক্তব্য, নিজেদের খরচে ফ্ল্যাটটি মেরামত করতে চাইলেও মালিকপক্ষ অনুমতি দেয়নি। নিজেরাও সারায়নি।
বুধবার পার্ক ম্যানসনের ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে দেখা গেল, শুয়ে রয়েছেন অশীতিপর দেবীপ্রসাদবাবু। সিলিংয়ের একাধিক জায়গা থেকে চাঙড় খসে পড়েছে। পাশের একটি ঘরেরও বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে গিয়েছে চাঙড়। বৃদ্ধের দেখভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সন্তোষ গোপ জানান, ওই চাঙড়ের আঘাতে কাজল দাস নামে এক আয়া পায়ে আঘাত পেয়েছেন।
দেবীপ্রসাদবাবুর পুত্রবধূ সুপ্রিয়া চট্টোপাধ্যায় জানান, ১৯৭৬ সাল থেকে দেবীপ্রসাদবাবু পার্ক ম্যানসনে রয়েছেন। ১৯৮১ সালে বিয়ের পরে সেখানেই থাকতে শুরু করেন সুপ্রিয়াদেবী। ২০১২ সাল থেকে ফ্ল্যাটের সিলিংয়ের চাঙড় খসে পড়তে শুরু করে। সে সময়ে এক বার সারানো হলেও ফের উপরের ফ্ল্যাট থেকে শৌচাগারের নোংরা জল চুঁইয়ে সিলিং খসিয়ে দেয়।
সুপ্রিয়াদেবীর অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে তাঁরা নিজেদের খরচে উপরের ফ্ল্যাটটি সারানোর কথা বললেও মালিকপক্ষ সেখানকার ভাড়াটের সঙ্গে মামলার কথা জানিয়ে মেরামতির অনুমতি দেয়নি।
সুপ্রিয়াদেবী বুধবার বলেন, ‘‘বাড়িটি হেরিটেজ তালিকাভুক্ত। তাই ২০১৪ সালে কলকাতা পুরসভায় যাই। ওঁরা নিজেদের ইঞ্জিনিয়ার পাঠিয়ে পুরো ফ্ল্যাট পরিদর্শন করে জানান, মেরামতির প্রয়োজন রয়েছে। সেই রিপোর্ট মালিক সংস্থাকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু মালিকপক্ষ সেই পরামর্শ কানে তোলেনি।’’ এক পুর আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই বাসিন্দারা কী চিঠি দিয়েছিলেন, তা মনে নেই। তবে বাড়িটি সারানোর দায় সংশ্লিষ্ট মালিকপক্ষের।
দেবীপ্রসাদবাবুর নাতনি সোহিনী চট্টোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, ‘‘দাদু শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই ছিলেন না, উনি বিদ্যাচর্চার জগতেও প্রথিতযশা। পদ্মবিভূষণ পেয়েছেন। অথচ তাঁকেই এমন বিপদ মাথায় নিয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে!’’
গোটা ঘটনা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু ফোন, এসএমএস বা ই-মেল— কোনও কিছুরই জবাব আসেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy