Advertisement
E-Paper

মজুত বাজি তো ফাটছে এখনই, পুজোয় কী হবে

এরই মধ্যে বাজির ‘স্টক ক্লিয়ারেন্স’-এর কারণে চলতি বছরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদেরা।

নজর: এ বার বাজি নিষিদ্ধ— কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশ প্রচারে ব্যস্ত পুলিশ। বৃহস্পতিবার, চাঁদনি চক মার্কেটে। ছবি: সুমন বল্লভ

নজর: এ বার বাজি নিষিদ্ধ— কলকাতা হাইকোর্টের সেই নির্দেশ প্রচারে ব্যস্ত পুলিশ। বৃহস্পতিবার, চাঁদনি চক মার্কেটে। ছবি: সুমন বল্লভ

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২০ ০২:১৩
Share
Save

‘স্টক ক্লিয়ারেন্স’। আপাতত এই শব্দবন্ধই ঘোরাফেরা করছে জনগোষ্ঠীর একাংশের মধ্যে। যে শব্দবন্ধের হাত ধরে অবধারিত ভাবে চলে আসছে কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাজি ফাটানোর ঘটনা।

পরিবেশবিদ ও পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, সুপ্রিম কোর্ট, কলকাতা হাইকোর্ট, জাতীয় পরিবেশ আদালত— সব পক্ষ করোনা সংক্রমণের কারণে বাজি নিষিদ্ধের কথা ঘোষণা করলে কী হবে, অগস্ট মাসেই বিভিন্ন এলাকায় বাজি ঢুকে পড়েছে। যেমনটা প্রতি বছরই ঢোকে। ফলে আদালতের নির্দেশে চলতি বছর কালীপুজো ও দীপাবলিতে কড়াকড়ি হতে পারে আন্দাজ করে উৎসাহী লোকজন ইতিমধ্যেই মজুত করা বাজি শেষ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন! আর সেই কারণেই বহু জায়গা থেকে বাজি ফাটানোর আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে।

বিশেষত দক্ষিণ কলকাতা-সহ যে সমস্ত এলাকা বাজি-তাণ্ডবের জন্য কুখ্যাত, সেই এলাকাগুলি এখন থেকেই বাজি-সক্রিয় হয়ে পড়েছে। পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সম্পাদক নব দত্ত বলেন, ‘‘অগস্টে বাজি শহরে ঢুকে পড়েছে, সেগুলি যাবে কোথায়? লোকে তো বাজি কিনে ফেলে রাখবেন না। তাই করোনা থাকুক বা না থাকুক, বাজি বিক্রি বন্ধ করতে না পারলে এই তাণ্ডব থামানো মুশকিল।’’

তবে বাজির এই আওয়াজ চলবে কি চলবে না, সেটা নির্ভর করছে পুলিশ-প্রশাসনের সক্রিয়তা এবং বাজি-দূষণ রোখার পরিকল্পনার উপরে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদেরা। কারণ, প্রতি বছরই বাজির উপরে নিয়ন্ত্রণের কথা বলা হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, কালীপুজো ও দীপাবলিতে সেই নিয়ন্ত্রণ অগ্রাহ্য করে তুমুল শব্দতাণ্ডব চলে।

আরও পডুন: বাজি রুখতে বিশেষ নজরদারি ​

অনেকের আবার বক্তব্য, সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি মেনে চলা, হাত পরিষ্কার করা-সহ নিয়মগুলি পালনের কথা গত কয়েক মাসে বার বার প্রচার করা হয়েছে। কিন্তু তার পরেও জনগোষ্ঠীর একাংশ সেই সম্পর্কে উদাসীন। ফলে বাজি নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও যে সকলে অক্ষরে অক্ষরে মানবেন, তার নিশ্চয়তা কোথায়? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অব এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ়’-এর অধ্যাপক-গবেষক তড়িৎ রায়চৌধুরীর বক্তব্য, "গত চার দশকে শহরের বাতাস কী ভাবে দূষিত হয়েছে, তা বোঝার জন্য পরিসংখ্যানের প্রয়োজন নেই। বরং নিজেদের পরিচিত বৃত্তের দিকে তাকালেই বোঝা যাবে, শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর সংখ্যা কী হারে বেড়েছে।’’ ‘ইন্ডিয়ান চেস্ট সোসাইটি’র সদস্য পালমোনোলজিস্ট বি বি মাথুর বলছেন, ‘‘সারা বছর ধরেই দূষিত বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করে। ফলে দেশের জনগোষ্ঠীর বড় অংশেরই ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে।’’

এরই মধ্যে বাজির ‘স্টক ক্লিয়ারেন্স’-এর কারণে চলতি বছরে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠার আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদেরা। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত আবার জানাচ্ছেন, নিয়ম ভাঙার প্রবণতাই বাজি ফাটাতে উৎসাহ জোগায়। যেন মনোভাবটা এমন, ‘আমরা বাজি ফাটাবই। তোমরা কী করবে কর!’ তাঁর কথায়, ‘‘এ যেন অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেওয়া। পুলিশ-প্রশাসন এ বছর যদি সেই চ্যালেঞ্জ নিতে ব্যর্থ হয়, তা হলে তাদের অপদার্থতাই প্রমাণিত হবে।’’

যদিও প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ এই ভাবনার সঙ্গে সহমত নন। তাঁদের বক্তব্য, বাজি ফাটার কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত দায়ের হয়নি। ফলে বাজি ফাটছে, সেই প্রমাণ কোথায়? বরং পরিবেশমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের আশ্বাস, ‘‘এ বছর কোনও আপস নয়। বাজি-দূষণ ঠেকাতে যা যা করা দরকার, তা-ই করা হবে।’’

Firecracker's Pollution Environmentalist Kali Puja 2020 Diwali

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।