Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Environmentalist

কোভিডে বন্ধ কারখানা, তবু শঙ্কা শব্দবাজি নিয়ে

করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে এ বার বাজি বাজার বসবে না বলেই অনুমান প্রশাসনের কর্তাদের।

ছবি এএফপি।

ছবি এএফপি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

অতিমারিকে হাতিয়ার করেই কি এ বার তৈরি হচ্ছে বেআইনি শব্দবাজি? এ রাজ্যের পরিবেশকর্মীদের আশঙ্কা তেমনটাই। কোভিড পরিস্থিতিতে বাজির বড় কারখানাগুলির বেশির ভাগই এখন বন্ধ। লকডাউন বলবৎ করা-সহ নানাবিধ কাজে ব্যস্ত পুলিশও। তা ছাড়া, ছোঁয়াচ এড়াতে যে কোনও জায়গায় অভিযান চালানোর আগেও দু’বার ভাবতে হচ্ছে তাদের। তাই শব্দবাজি আটকানোর বিষয়টি হয়তো এই মুহূর্তে পুলিশের অগ্রাধিকারের তালিকায় নেই। আর ঠিক সেই সুযোগটাই এ বার শব্দবাজির কারিবারিরা নিতে পারেন বলে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা।

নুঙ্গি, বজবজ, চম্পাহাটি-সহ শহরতলির যে সব জায়গায় বেআইনি শব্দবাজি তৈরি হয়, সেখানে এখন থেকেই অভিযান চালানো শুরু করা জরুরি বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা। কালীপুজোর আর আড়াই মাস বাকি। তার দিন সাতেক আগে থেকে শহরের পাঁচটি জায়গায় (শহিদ মিনার, টালা, বড়িশা, কালিকাপুর ও বিজয়গড়) বাজি বাজার বসে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে এ বার বাজি বাজার বসবে না বলেই অনুমান প্রশাসনের কর্তাদের। বাজি বাজারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিসি (রিজার্ভ ফোর্স) সুখেন্দু হীরা বললেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তাতে এ বছর বাজি বাজার বসবে না বলেই ধরে নেওয়া যায়।’’ তবে বাজি বাজার বসুক আর না-ই বসুক, লুকিয়ে-চুরিয়ে শব্দবাজির বিক্রি যে সহজে বন্ধ করা যাবে না, তা মেনে নিচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একটি অংশও।

কলকাতার বিভিন্ন বাজি বাজার সংগঠনের প্রায় ১৫ জন সদস্য ইতিমধ্যেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাঁচ জন ব্যবসায়ী করোনায় মারাও গিয়েছেন। পাশাপাশি, গত পাঁচ মাস ধরে লকডাউনের কারণে বেশির ভাগ বাজি কারখানা বন্ধ। ‘বড়বাজার ফায়ারওয়ার্কস ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক শান্তনু দত্ত বললেন, ‘‘তামিলনাড়ুর শিবকাশি থেকেই ৭৫ শতাংশ আতসবাজি আসে। বাকি ২৫ শতাংশ আসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটি, নুঙ্গি, বজবজ ও মেদিনীপুর থেকে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির জন্য সমস্ত কারখানা বন্ধ থাকায় গত পাঁচ মাস ধরে বাজি শহরে ঢোকেনি। এ বছর তাই বাজি বাজারের কথা ভাবতেই পারছি না।’’

কলকাতা পুলিশ ও দমকল সূত্রের খবর, অগস্টেই শহরের বিভিন্ন বাজি বাজার কমিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কলকাতা পুলিশ, দমকল, সিইএসসি এবং কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষের একটি সমন্বয় বৈঠক হয়েছে। কিন্তু বাজি বাজারের অনুমতি চেয়ে পাঁচটি বাজার কমিটির তরফে এখনও আবেদনপত্র জমা পড়েনি বলে জানিয়েছেন ডিসি (আরএফ) সুখেন্দু হীরা এবং দমকলের ডিজি জগমোহন।

তবে বাজির বড় কারখানাগুলি বন্ধ আছে বলে প্রশাসন বেআইনি বাজি ধরার ক্ষেত্রে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে খুব ভুল করবে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীদের একাংশ। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বললেন, ‘‘করোনাকে হাতিয়ার করেই লুকিয়ে বেআইনি বাজি তৈরির কারবার চলছে। বাজি বাজার বন্ধ থাকলেও ওই সমস্ত বেআইনি শব্দবাজি শহরের বিভিন্ন দোকান ও গুদামে সময়মতো পৌঁছে যাবে। প্রশাসনকে সে দিকে কড়া নজর রাখতে হবে।’’

‘পশ্চিমবঙ্গ বাজি শিল্প উন্নয়ন সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর মান্নার কথায়, ‘‘এই কঠিন সময়ে বাজি বাজারের কথা ভাবাই যাচ্ছে না। প্রশাসনের কাছে বিনীত আবেদন, বাজি বাজারের বিকল্প কিছু ভাবুন। কারণ, রাজ্যে এই বাজি শিল্পের সঙ্গে কমবেশি সাত লক্ষ মানুষ জড়িত আছেন।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy