Advertisement
E-Paper

পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে বেআইনি নির্মাণ রুখতে হোর্ডিং পরিবেশ দফতরের

এ বিষয়ে পরিবেশমন্ত্রী তথা ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানি জানান, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে ওই বোর্ড বসানো হয়েছে।

An image of hoarding

পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে পরিবেশ দফতরের তরফে বসানো সেই হোর্ডিং। —নিজস্ব চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৪ ০৮:০৪
Share
Save

‘যে কোনও ধরনের নির্মাণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।’

এমনই সতর্কবার্তা দিয়ে পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে পরিবেশ দফতরের তরফে হোর্ডিং বসানো হয়েছে। যাতে সেখানে হোর্ডিং বসানো বা যে কোনও ধরনের নির্মাণ ঠেকানো যায়। আন্তর্জাতিক জলাভূমি সংরক্ষণ প্রকল্প রামসার সাইটের তালিকাভুক্ত এই পূর্ব কলকাতা জলাভূমি। সেখানে হোর্ডিংয়ের জঙ্গল তৈরি হয়ে যাওয়ায় নাগরিকদের একটি সংগঠন সম্প্রতি কলকাতা পুরসভা, কলকাতা পুলিশ, পরিবেশ দফতর-সহ একাধিক জায়গায় চিঠি দিয়েছিল। এমনকি, তার পরে কলকাতা পুলিশের প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ ওই সব হোর্ডিংয়ের বিষয়ে জানতে কলকাতা পুরসভাকে চিঠিও দেয়। তার পরেই পরিবেশ দফতরের ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটির তরফে ওই হোর্ডিং বসানো হয়েছে বলে খবর।

এ বিষয়ে পরিবেশমন্ত্রী তথা ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানি জানান, পূর্ব কলকাতা জলাভূমি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে ওই বোর্ড বসানো হয়েছে। কোনও ভাবেই সেখানে কোনও নির্মাণ করা যাবে না।

বিগত কয়েক বছর ধরে ওই জলাভূমি চত্বরে নানা ধরনের অবৈধ নির্মাণ হচ্ছে বলে অভিযোগ। বহু জায়গা প্রোমোটারদের দখলে চলে গিয়েছে বলেও খবর। যা নিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ— দুই ২৪ পরগনাতেই পুলিশের কাছে একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এ সবের পাশাপাশি জলাভূমি তল্লাট কয়েক বছর ধরে হোর্ডিংয়েও ছেয়ে গিয়েছে। সেই সব হোর্ডিংয়ের উপরে বসানো হয়েছে আলো। অভিযোগ, ওড়ার সময়ে সেই আলোয় চোখ ধাঁধিয়ে গিয়ে পাখিরা হোর্ডিংয়ে ধাক্কা খেয়ে মারা যাচ্ছে। এমনকি, ওই সব এলাকায় ডিজেল-চালিত জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

এই সব তথ্য সামনে এনে নাগরিকদের একটি সংগঠন প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগ দায়ের করেছিল। সেই খবর প্রকাশের কিছু দিনের মধ্যেই পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে সতর্কবার্তা দিয়ে বোর্ড লাগানো হয়। ওই নাগরিক সংগঠনের তরফে আইনজীবী দিব্যায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁরা এ বার জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা দায়ের করতে চলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ তদন্ত করছে। আমরা সরব হতেই ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটি বোর্ড লাগিয়ে জানাচ্ছে, ওই জায়গায় যে কোনও নির্মাণ বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমাদের অভিযোগ যে অমূলক নয়, ওই বোর্ডই তার প্রমাণ।’’

উল্লেখ্য, এর আগে ইস্ট কলকাতা ওয়েটল্যান্ডস ম্যানেজমেন্ট অথরিটির আধিকারিকেরা জানিয়েছিলেন, হোর্ডিং সংস্থাগুলি আদালতে পাল্টা মামলা করে রেখেছে। তাই তারা শুনানিতেও আসে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও নেওয়া যায় না। আর এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী পরিবেশ-বিধি উড়িয়ে পূর্ব কলকাতা জলাভূমি দখলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ। পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার বর্জ্য জল এসে প্রাকৃতিক ভাবে পরিশোধিত হয়। শহর ও তার আশপাশের এলাকার পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এই জলাভূমির গুরুত্ব অপরিসীম।

কলকাতা পুরসভাও জানিয়েছে, পূর্ব কলকাতা জলাভূমিতে হোর্ডিং নিয়ে তাদের কাছে বিবিধ অভিযোগ আসে। এ নিয়ে কলকাতা পুরসভা পদক্ষেপ করবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আইনজীবী দিব্যায়ন জানান, ওই সব হোর্ডিং যাতে সরানো হয়, তার লক্ষ্যে তাঁদের লড়াই চলবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Wetlands Illegal Constructions West Bengal government

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}