Advertisement
০৬ জুলাই ২০২৪
Mid Day Meal

মিড-ডে মিল দেখতে স্কুলে ঘুরলেন শিক্ষা আধিকারিকেরা

মঙ্গলবার কলকাতার ৫০টিরও বেশি স্কুল পরিদর্শন করেন কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। স্কুলে স্কুলে মিড-ডে মিল যখন পড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছিল, সেই সময়েই তাঁরা সেখানে উপস্থিত হন।

সরেজমিন: মিড-ডে মিলের রান্নাঘর ঘুরে দেখছেন শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক। মঙ্গলবার, বাঘা যতীনের একটি স্কুলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

সরেজমিন: মিড-ডে মিলের রান্নাঘর ঘুরে দেখছেন শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক। মঙ্গলবার, বাঘা যতীনের একটি স্কুলে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:৪৩
Share: Save:

স্কুলে স্কুলে মিড-ডে মিল কেমন চলছে, তা দেখতে আগামী ২০ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে আসছে কেন্দ্রের ‘প্রধানমন্ত্রী পোষণ’ প্রকল্পের একটি দল। তার আগেই সোমবার থেকে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে পরিদর্শন শুরু করেছেন এডুকেশন সুপারভাইজ়ার এবং স্কুল ইনস্পেক্টরেরা। মূল উদ্দেশ্য, মিড-ডে মিল কেমন চলছে, তা দেখা।

মঙ্গলবার কলকাতার ৫০টিরও বেশি স্কুল পরিদর্শন করেন কলকাতা জেলা শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। স্কুলে স্কুলে মিড-ডে মিল যখন পড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছিল, সেই সময়েই তাঁরা সেখানে উপস্থিত হন। কলকাতার বেশির ভাগ স্কুলের মিড-ডে মিল রান্না হয় ক্লাস্টার কিচেন বা একটি বড় নির্দিষ্ট জায়গায়। সেখান থেকে বিভিন্ন স্কুলে খাবার সরবরাহ করা হয়। সেই ক্লাস্টার কিচেন বা বড় রান্নাঘরগুলিও পরিদর্শন করেন শিক্ষা দফতরের কর্তারা। যে আধিকারিকেরা এ দিন কলকাতার বিভিন্ন স্কুল এবং ক্লাস্টার কিচেন পরিদর্শন করেছেন, তাঁরা জানিয়েছেন, কলকাতার মিড-ডে মিল নিয়ে অভিভাবকদের অভিযোগ নেই। তবে করোনা-পরবর্তী সময়ে অনেক অভিভাবকই সন্তানদের একসঙ্গে বসিয়ে মিড-ডে মিল খাওয়ার অনুমতি দেওয়া নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত। তাঁদের বোঝানো হয়েছে, রান্নাঘর যথেষ্ট পরিচ্ছন্ন। পড়ুয়াদের একসঙ্গে বসে খেতে অসুবিধা নেই।

তবে শিক্ষা দফতরের কর্তারা রান্নাঘর পরিচ্ছন্ন বলে দাবি করলেও সম্প্রতি বীরভূমের একটি স্কুলের রান্নাঘরে মিড-ডে মিলে ডালের বালতিতে সাপ মিলেছিল। মালদহে আবার মিড-ডে মিলে টিকটিকি আর ইঁদুর পাওয়া গিয়েছে। এর পরেই শাস্তির মুখে পড়তে হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক-সহ সার্কল এসআই এবং সুপারভাইজ়ারদের। কেন্দ্রীয় দল আসার আগে এর পর থেকেই রাজ্যের শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা বিভিন্ন স্কুলে ঘুরে সেখানকার রান্নাঘর কেমন, তা পরিদর্শন শুরু করেন।

কলকাতার স্কুলগুলি থেকে অভিযোগ না এলেও জেলা ও শহরতলির স্কুলের রান্নাঘরের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে ভূরি ভূরি। জেলা ও শহরতলির অনেক স্কুলেই রান্নাঘর পাকা নয়। শিক্ষক নেতা অনিমেষ হালদারের কথায়, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনার অনেক স্কুলের রান্নাঘরের ছাদ অ্যাসবেস্টসের বা টালি দিয়ে তৈরি। চালের ফাঁক দিয়ে পোকা, টিকটিকি খাবারে পড়ার আশঙ্কা থাকে।’’ আর এক শিক্ষক বলেন, ‘‘মিড-ডে মিল গ্যাসে রান্না করার কথা বলা হলেও গ্রামাঞ্চলের কিছু স্কুলে এখনও কাঠে রান্না হয়। দীর্ঘদিন ধরে জড়ো হয়ে থাকা ওই কাঠের ভিতরে সাপ, ব্যাঙ, পোকামাকড় থাকা অস্বাভাবিক নয়।’’ যদিও শিক্ষা দফতরের কর্তাদের মতে, মিড-ডে মিলের পরিকাঠামো ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত টাকা দফতর থেকে দেওয়া হয়। তার পরেও উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করা হচ্ছে না কেন?

অন্য দিকে শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, তাঁরা পড়াবেন, না কি মিড-ডে মিল কেমন চলছে সেটা দেখার জন্য রান্নাঘরে বসে থাকবেন? ‘শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ’-এর সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, ‘‘কিছু হলে কোপ পড়ছে শিক্ষকদের উপরে। আমাদের দাবি, মিড-ডে মিলের দায়িত্ব থেকে শিক্ষকদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day Meal school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE