সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যক্রম থেকে মোগল যুগ বাদ গেল। প্রতীকী ছবি।
চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে সিবিএসই-র দ্বাদশ শ্রেণির ইতিহাসের পাঠ্যক্রম থেকে মোগল যুগ বাদ গেল। ফলে, দেশ জুড়ে যত সিবিএসই বোর্ডের স্কুল রয়েছে, তাদের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা এই শিক্ষাবর্ষ থেকে মোগল যুগের ইতিহাস আর পড়বে না। এমনটাই জানাচ্ছেন ওই বোর্ড অনুসরণ করা স্কুলের অধ্যক্ষেরা।
‘ন্যাশনাল কাউন্সিল অব এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং’ (এনসিইআরটি)-এর বই অনুসরণ করে থাকে সিবিএসই। সেই বইয়ের ২০২৩ সালের পাঠ্যক্রমে মোগল যুগের কিছুই থাকছে না। অধিকাংশ অধ্যক্ষের দাবি, এর ফলে ভারতের খণ্ডিত ইতিহাস জানবে পড়ুয়ারা।
শ্রীশিক্ষায়তনের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘মোগল হোক বা ইংরেজ, ভারতের ইতিহাস পড়তে হলে পড়ুয়াদের সব তথ্য জানতে হবে। কিছু তথ্য দিয়ে, কিছু বাদ দিলে, একটা দিক তো বন্ধ হয়ে গেল!’’ ব্রততীর মতে, ‘‘মোগল সম্রাট হুমায়ুনের রাজত্বকালে শের শাহ গ্র্যান্ড ট্যাঙ্ক রোড (জিটি রোড) তৈরি করেছিলেন। তা হলে সেই তথ্যটা জানবে না পড়ুয়ারা?’’
অন্য এক সিবিএসই স্কুলের অধ্যক্ষা রেখা বৈশ্য জানাচ্ছেন, গত শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যক্রমে মোগল যুগের প্রশাসনিক দিকের কিছুটা অংশ ছিল। ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে সেটাও বাদ পড়ল। রেখার মতে, ‘‘যদি আমাদের পশ্চিমবঙ্গের নকশাল আন্দোলন বাদ দিয়ে দেওয়া হয়, তা হলে তার পরবর্তী কালে এ রাজ্যের রাজনীতির ঘটনাপ্রবাহ এক জন পড়ুয়ার কি বোঝা সম্ভব?’’ অন্য একটি সিবিএসই স্কুলের অধ্যক্ষ নারায়ণ গুহঠাকুরতার আশঙ্কা, ‘‘যদি মোগল যুগ বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত এনসিইআরটি নিয়ে থাকে, তা হলে হয়তো নিচু ক্লাসগুলিতেও ধীরে ধীরে মোগল ইতিহাস বাদ পড়বে।’’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্যের অধ্যাপক অভীক মজুমদার বলছেন, ‘‘ভারতবর্ষ বা যে কোনও দেশের ইতিহাস কতগুলো তথ্যপ্রমাণ, দলিল, সময়কাল ও নথিপত্রের উপরে নির্ভর করে। যাঁরা উচ্চশিক্ষায় মধ্যযুগ পড়ে বিশেষজ্ঞ হতে চান, তাঁরা মোগল ইতিহাস না জেনে কী ভাবে সেটা হবেন?’’
সব শুনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর মন্তব্য, ‘‘মোগল যুগের বিকল্প তা হলে কী পড়াবেন? ওই সময়ে সংগ্রাম সিংহ থাকবেন, কিন্তু বাবর নেই। পৃথ্বীরাজ চৌহান আছেন, কিন্তু আওরঙ্গজ়েব নেই। শশাঙ্ক আছেন, অথচ হুসেন শাহ নেই! কী পড়ানো হবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। এ রকম কি হতে পারে যে, ইস্তানবুলের ইতিহাস পড়ানো হচ্ছে, অথচ সেখানে কনস্টান্টিনোপল নেই! সর্বস্তরে শিক্ষাবিদদের তরফ থেকে এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ আসা দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy