Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Car Accident

পোর্শা দুর্ঘটনাতেও শিক্ষা হয়নি রাঘিবের, দুর্ঘটনার রাতে ১৫০ কিমি বেগে ছুটছিল জাগুয়ার!

১৮ জানুয়ারি,২০১৭-য় সল্টলেকের এটিআই বাস স্টপের কাছে পোর্শা গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন রাঘিব। দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় গাড়িটি রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মারে।

এর আগেও এই পোর্শা নিয়েই সল্টলেকে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিলেন রাঘিব পারভেজ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

এর আগেও এই পোর্শা নিয়েই সল্টলেকে দুর্ঘটনা ঘটিয়েছিলেন রাঘিব পারভেজ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৯ ২০:৫৫
Share: Save:

দামি গাড়ি তাঁর খুবই পছন্দের। একই সঙ্গে সেই গাড়ি জোরে ছোটানও নেশা রাঘিব পারভেজের। আর সেই গতিই বারে বারে ডেকে নিয়ে এসেছে বিপদ। তাতেও সাবধান হননি আরসালান বিরিয়ানি চেনের মালিক আখতার পারভেজের বড় ছেলে রাঘিব। এমনটাই জানা যাচ্ছে লালবাজার সূত্রে।

১৮ জানুয়ারি,২০১৭-য় সল্টলেকের এটিআই বাস স্টপের কাছে পোর্শা গাড়ি নিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন রাঘিব। দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় গাড়িটি রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা মারে। পুলিশ যখন ঘটনাস্থলে যায়, তখন গাড়িতে কেউ ছিল না। কিন্তু, তদন্তে জানা যায় গাড়িটি আরসালান প্রাইভেট লিমিটেডের নামে গাড়িটা রেজিস্ট্রার্ড ছিল। যেহেতু কেউ হতাহত হননি, তাই সে বারে জরিমানা দিয়ে রেহাই মিলেছিল। কিন্তু শেকসপিয়ার সরণিতে জাগুয়ার দুর্ঘটনায় শেষ পর্যন্ত তাঁকে লকআপে যেতে হল। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃষ্টির ওই রাতে দুর্ঘটনার সময় ঘাতক গাড়ির গতি ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটারের কাছাকাছি।

ইতিমধ্যেই জাগুয়ারের ইভেন্ট ডেটা রের্ডার (ইডিআর) উদ্ধার করা হয়েছে। সেই ইডিআর থেকে জানা যাবে, কত গতিতে গাড়িটি যাচ্ছিল? এখনও সেই তথ্য হাতে না এলেও, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের অনুমান, জাগুয়ারের গতি ছিল ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটারের আশেপাশে। তবে নির্দিষ্ট তথ্য পেতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। দিল্লি থেকে গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার কর্মীরা ইতিমধ্যেই এসেছেন। তাঁরা গাড়িটি পরীক্ষা করে দেখছেন। একই সঙ্গে গাড়ির কিছু কিছু জায়গায় পরীক্ষা করতে গিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থার ব্রিটেনের দফতরে খবর দেওয়া হয়েছে।

এ বছর জানুয়ারি থেকে জুলাই মাসে ৪০টিরও বেশি ট্রাফিক আইন ভেঙেছে ওই গাড়িটি। ওই সব নিয়ম ভাঙার সময় স্টিয়ারিংয়ে রাঘিব ছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে দুর্ঘটনার আগেও রাঘিব সিগন্যাল ভেঙে দ্রুতগতিতে যাচ্ছিল। এ দিন তাঁকে হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, সেন্ট জেমস কলেজে পড়তেন রাঘিব। ঘটনার দিনওই কলেজের প্রিন্সিপালের ছেলের জন্মদিনের পার্টিতে গিয়েছিলেন। পার্টি থেকে ফেরার সময় তাঁর এক বন্ধু ছিলেন গাড়িতে। ওই বন্ধুটি অ্যাপ ক্যাবে করে সল্টলেকের বাড়িতে যাওয়ার কথা বললে, রাঘিব তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। সল্টলেকের উদ্দেশে যাচ্ছিলেন জাগুয়ার নিয়ে। সেই সময় শেকসপিয়র সরণিতে দুর্ঘটনা ঘটে এবং দুই বাংলাদেশি নাগরিক মারা যান।

দুর্ঘটনার পর দু’জনে গাড়ি থেকে শেকসপিয়র সরণি ধরে পালিয়ে যান। ওই বন্ধুটি সল্টলেকের বাড়িতে পৌঁছন। আর রাঘিব তাঁর মামা মহম্মদ হামজাকে ফোন করেন। এর পর সল্টলেকে মামার এক আত্মীয়ের বাড়িতে আত্মগোপন করে থাকেন। পরের দিন অর্থাৎ শনিবার বিকেলের দিকে তিনি দুবাইয়ের বিমানধরেন।

কিন্তু রাঘিবের বদলে কেন আরসালান পারভেজকে আত্মসমর্পণ করানো হল, তার কোনও সঠিক তথ্য এখনও হাতে আসেনি বলে দাবি করেছে পুলিশ। তবে, পুলিশের কাছে পারভেজ পরিবারের সদস্যেরা নানা রকম দাবি করছে। কী রকম? যেহেতু রাঘিব দুবাইয়ে চলে গিয়েছিলেন তাই বাবা পারভেজ আখতার আত্মসমর্পণ করতে যাচ্ছিলেনদেখে ছোট ছেলে আরসালান পারভেজ আত্মসমর্পণ করেন। আবার কেউ বলছেন, পারিবারিক গাড়িচালককে আত্মসমর্পণ করানোর চেষ্টা হয়েছিল। তাতে রাজি হননি পরিবারের কেউ কেউ। তবে এগুলি সব পরিবারের দাবি। অন্য কিছু গোপন করতে নতুন করে কোনও যুক্তি খাড়া করার চেষ্টা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই রাতে রাঘিব মত্ত ছিলেন কিনা, সে বিষয়েও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, এর আগে নাকি রাঘিবকে দু’বার নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। এই তথ্যটি ঠিক কিনা, তা-ও দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: বিকল দরজা খোলা রেখেই ছুটল মেট্রো

আরও পড়ুন: ট্রাফিক সিগন্যালে তরুণীকে দেখে কটূক্তি! গ্রেফতার মত্ত বাইকচালক

অন্য বিষয়গুলি:

Car Accident Raghib Parwez
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy