‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ পরিবেশন করছেন শিল্পীরা। — নিজস্ব চিত্র।
ব্রিগেডে শুরু হয়ে গেল বাম ছাত্রযুবর ‘ইনসাফ সমাবেশ’। ভিড়ে ভর্তি ব্রিগেডে বামপন্থী যুবদের কর্মসূচির শুরুতেই অবশ্য চমকের পালা। কারণ, কর্মসূচির ‘শুভসূচনা’ ঘোষণাকারী উদ্বোধনী সঙ্গীত হিসাবে ধ্বনিত হতে শুরু করল ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি। ঘটনাচক্রে যে গানকে রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে খুব সম্প্রতি বিবেচিত করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বাম যুব নেতৃত্বের দাবি, মমতা গানটিকে বিকৃত করেছিলেন, ব্রিগেডের মঞ্চে তা অবিকৃত ভাবে গাওয়া হল।
১৯০৫ সালে ব্রিটিশের বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথের বাঁধা গানটির ইতিহাস-মূল্য স্বীকার করেই তাকে রাজ্য সঙ্গীতের স্বীকৃতি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে গানটির শেষ দু’টি স্তবকে ‘বাঙালির পণ, বাঙালির আশা’ বা ‘বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন’ অংশটিকে ‘বাংলার’ করে গাওয়ানো যায় কি না, জানতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে। রবীন্দ্রগানে বদল নিয়ে অনেকের আপত্তি দেখে অবশ্য গানটি অবিকৃত রাখার কথাই বলে রাজ্য। এ বার সেই গান দিয়েই উদ্বোধন হল বামেদের ব্রিগেড সমাবেশের। এই গানটি যখন পরিবেশন করছে চাকদার একটি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী তখন অনেকেই কার্যত চমকে উঠেছিলেন। যদিও এই গান নির্বাচন যে সুপরিকল্পিত তা যুব নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে স্পষ্ট হল।
ডিওয়াইএফআইয়ের কলকাতা জেলা সম্পাদক পৌলমী মজুমদার বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই গানটিকে রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে নির্ধারণ করেননি। উল্টে রবীন্দ্রনাথের গানকে কথা বদলে বিকৃত করেছেন। ধর্মীয় বিভাজনের প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ এই গান লিখেছিলেন। আজকের প্রেক্ষাপটে তা তাৎপর্যপূর্ণ। তাই সেই গান পরিবেশিত হল। এবং অবিকৃত ভাবেই তা পরিবেশিত হল।’’
খাতায়কলমে রবীন্দ্রনাথের ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল’ গানটি রাজ্য সঙ্গীতের তকমা পেলেও সম্প্রতি হয়ে যাওয়া আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী আসরে রবীন্দ্রনাথের ঐতিহাসিক গানের কথা বদলে গাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল। যদিও এ বিষয়ে কোনও মহলেই কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ফলে রবীন্দ্রসঙ্গীতটির কোনও বদল ছাড়াই তাকে রাজ্য সঙ্গীত হিসাবে গ্রহণ করে নেওয়া হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে বাম যুবদের ‘বিকৃতি’র দাবি খাটে না। তবে অনেকেই অবাক হয়েছেন, গণসঙ্গীতের জায়গায় রবীন্দ্রসঙ্গীত দিয়ে বাম যুবদের অনুষ্ঠান শুরুর চমক দেখে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy