শব্দবিধি ভাঙা শুরু হয়েছিল বিশ্বকর্মা পুজো থেকেই। প্রতীকী ছবি।
শব্দবিধি ভাঙার পুরনো ‘রোগ’ থেকে বাদ গেল না এ বারের উৎসবও। কোথাও বিধি উড়িয়ে রাতভর বাজল সাউন্ড বক্স, কোথাও মধ্যরাত পর্যন্ত চলল জলসা। এমনকি বাদ গেল না হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকাও। যা দেখে শহরের সচেতন নাগরিকদের একাংশের প্রশ্ন, শব্দবিধি মেনে কি উৎসব পালন সম্ভব নয়? পাশাপাশি বিসর্জনে এই বিধিভঙ্গ লাগাম ছাড়াবে না তো— উঠছে সেই প্রশ্নও।
শব্দবিধি ভাঙা অবশ্য শুরু হয়েছিল বিশ্বকর্মা পুজো থেকেই। তার পরে প্রশাসন জানিয়েছিল, দুর্গাপুজোর মরসুমে শব্দের তাণ্ডব কমাতে নজরদারি চালানো হবে। উৎসব শুরুর আগে এ নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশিকাও দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের সঙ্গে পুজো কমিটিগুলির বৈঠকে এ নিয়ে সতর্ক থাকার কথা বলেছিলেন পুলিশকর্তারা। কিন্তু তার পরেও শহরের একাধিক জায়গায় উৎসবের নামে রাতভর শব্দতাণ্ডবের অভিযোগ উঠেছে। এ-ও অভিযোগ, শহরের কোথাও কোথাও রাত যত বেড়েছে, শব্দের দাপটও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। সব থেকে বেশি অভিযোগ এসেছে উত্তর কলকাতার কাশীপুর, বেলগাছিয়া, আমহার্স্ট স্ট্রিট, সিঁথি সংলগ্ন এলাকা থেকে। বাদ যায়নি উল্টোডাঙার বাগমারি, বেলেঘাটা বা দক্ষিণের একাধিক এলাকাও।
বেলগাছিয়ার বাসিন্দা কাশীনাথ চট্টোপাধ্যায় বার্ধক্যজনিত একাধিক রোগে ভুগছেন। প্রতিদিন ঘুমের ওষুধ খেতে হয় তাঁকে। কিন্তু গত কয়েক দিনে ঘুম কার্যত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে তাঁর। প্রৌঢ়ের অভিযোগ, ‘‘এমন কিছু বড় পুজো নয়, তা-ও এক সপ্তাহ আগে থেকে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে উল্লাস চলছে। মাঝরাত পেরোলেও বন্ধ হচ্ছে না। ঘুমের জন্য পাড়া ছেড়ে অন্যত্র যাওয়ার মতো অবস্থা।’’ একই অভিযোগ কাশীপুরের একটি পুজো ঘিরেও। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘বার বার বলেও লাভ হয়নি। ফোন করলে মাইকের আওয়াজ কিছু ক্ষণের জন্য কমছে, তার পরে ফের যে কে সেই!’’ অভিযোগ, পুজোয় শব্দদানবের দাপট থেকে ছাড় পায়নি আর জি কর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সংলগ্ন ‘সাইলেন্স জ়োন’-ও। শহরের অধিকাংশ জায়গায় ভিড় সামলাতে পুলিশ যতটা সক্রিয়, শব্দতাণ্ডব বন্ধে তারা ততটা সক্রিয় নয় বলেও অভিযোগ উঠছে।
ফলে অনেকেরই প্রশ্ন, উৎসবের দিনে শহরে শব্দের এমন দাপট হলে বিসর্জনে কী হবে? লালবাজারের এক পুলিশকর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘প্রতিটি ডিভিশনের তরফেই নিরন্তর নজরদারি চালানো হচ্ছে। এমনকি রয়েছে লালবাজারের বিশেষ দলও। বিসর্জনেও শব্দের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে এই নজরদারি থাকবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy