ফাইল চিত্র।
কোথাও মণ্ডপ বেশ কিছুটা এগিয়ে আনা হয়েছে আগের জায়গা থেকে। কোথাও বদলে ফেলা হয়েছে প্রতিমার অভিমুখই। কোথাও আবার ইতিমধ্যেই তৈরি করিয়ে রাখা হয়েছে মণ্ডপের দু’টি প্রবেশপথ! দর্শকদের প্রবেশাধিকার থাকলে ব্যবহার করা হবে একটি। আর তা নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে ব্যবহৃত হবে অন্যটি।
গত বছর একেবারে শেষ মুহূর্তে, তৃতীয়ার দিন মণ্ডপ দর্শকশূন্য রাখার নির্দেশ আসায় এ বার পুজোর উদ্যোক্তারা এতটাই আতঙ্কিত যে, আগাম পরিকল্পনা সেরে রাখতে চাইছেন তাঁদের অনেকেই। এ দিকে, চলতি বছরেও পুজো নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। যা চিন্তা বাড়িয়েছে পুজোকর্তাদের। তবে রাজ্যে কয়েকটি ক্ষেত্রে নির্বাচন থাকায় মণ্ডপ দর্শকশূন্য থাকবে কি না, তা নিয়ে এখনই কোনও রকম সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনের পরেই সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।
হিন্দুস্থান পার্কের উদ্যোক্তা সুতপা দাস বললেন, ‘‘শেষ মুহূর্তে নির্দেশ এলে সত্যিই খুব সমস্যা হয়। তাই এ বার মণ্ডপ আগাম ২০-২৫ ফুট এগিয়ে নিয়েছি আমরা।’’ বালিগঞ্জ কালচারালের পুজো দেখতে গিয়ে গত বছর খুবই সমস্যায় পড়েছিলেন দর্শনার্থীরা। মণ্ডপের ১০ মিটার আগেই পথ বন্ধ থাকায় অনেকেই ভাল ভাবে প্রতিমা দেখতে পারেননি। পুজোর উদ্যোক্তা অঞ্জন উকিল বললেন, ‘‘এ বার তাই সরু সরু স্তম্ভের উপরে এমন ভাবে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে যে, রাস্তায় দাঁড়িয়েই সব দিক থেকে সবটা দেখা যাবে।’’
সমাজসেবী সঙ্ঘের পুজোকর্তা অরিজিৎ মৈত্র বললেন, ‘‘গত বছর শেষ মুহূর্তে যে সমস্যায় পড়েছিলাম, তা কখনও ভোলার নয়। এ বার তাই মণ্ডপের অভিমুখ ঘুরিয়ে লেক ভিউ রোডের দিকে মুখ করে প্রতিমা বসানো হবে। ওই দিকেই দু’টি আলাদা গেট রাখা হচ্ছে। মণ্ডপে প্রবেশের অনুমতি থাকলে একটি ব্যবহার হবে, না থাকলে ব্যবহার করা হবে অন্যটি।’’ একই দাবি মুদিয়ালি ক্লাবের কর্তাদেরও। তাঁরাও এ বার তাঁদের মণ্ডপের অভিমুখ বদলে ফেলেছেন বলে জানালেন।
নিউ আলিপুর এলাকার সুরুচি সঙ্ঘের পুজোকর্তা কিংশুক মৈত্র আবার জানালেন, তাঁদের প্রতিমা এ বার দেখতে হবে দূর থেকে। এ বছর মাঠের মধ্যে প্রবেশের কোনও রকম ব্যবস্থা রাখছেন না তাঁরা। মণ্ডপে প্রবেশের ব্যবস্থা রাখা হয়নি ত্রিধারা বা দেশপ্রিয় পার্কের মতো পুজোতেও। একডালিয়া এভারগ্রিন ক্লাবের পুজোকর্তা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় যদিও বললেন, ‘‘আমাদের পুজোয় প্রতিমা দর্শনের জন্য মণ্ডপে ঢুকতেই হবে, এমন ব্যাপার কোনও বারই থাকে না।’’
উত্তর কলকাতার শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাব অবশ্য আগে থেকে দু’রকম ব্যবস্থাই রাখছে বলে জানা গেল। পুজোকর্তা দিব্যেন্দু গোস্বামী বললেন, ‘‘আগাম সব কিছু বন্ধ করে না দিয়ে আমরা দু’রকম ব্যবস্থাই রাখছি। প্রয়োজনে মণ্ডপের ভিতরে প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হবে।’’ বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনীর কর্তা গৌতম নিয়োগী অবশ্য জানালেন, এ বার সেখানে মণ্ডপের ভিতরে ঢুকে প্রতিমা দর্শনের কোনও রকম
সুযোগ থাকছে না। মণ্ডপের ২০ ফুট আগেই তাঁরা দর্শনার্থীদের থামিয়ে দেবেন বলে ঠিক করেছেন। তবে মণ্ডপের প্রবেশদ্বার এতটাই খোলামেলা রাখা হচ্ছে যে, রাস্তায় দাঁড়িয়েও দেখা যাবে প্রতিমার মুখ। একই ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে তেলেঙ্গাবাগান, গৌরীবাড়ি এবং কুমোরটুলি সর্বজনীনের পুজোতেও।
হাতিবাগান সর্বজনীনের উদ্যোক্তারা আবার গোটা রাস্তাটিকেই মণ্ডপের আদল দিচ্ছেন বলে খবর। ওই পুজোর মূল উদ্যোক্তা তথা ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’-এর সাধারণ সম্পাদক শাশ্বত বসু বললেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ যা-ই আসুক না কেন, পুজো কমিটিগুলি নিজেরাই এ বার সব রকম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। তা ছাড়া, এ বার করোনাও তো অনেকটাই কম।’’ তবু সচেতন হয়েই চলতে চাইছেন কাশী বোস লেন দুর্গাপুজো কমিটির উদ্যোক্তারা। মণ্ডপে দর্শকদের প্রবেশ বন্ধ রাখা তো বটেই, এ বার কমিটির প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবকের বাড়িতে আলাদা করে ‘কোয়রান্টিন জ়োন’ করছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy